এখানে মেঘ উড়ে বেড়ায় আপন মনে। রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন? হঠাৎ রিমঝিম বৃষ্টিতে ভিজে একাকার! মেঘের ছিটেফোঁটাই ঝরেছে বৃষ্টি হয়ে। এখানে এমন বৃষ্টি নিত্যদিনের ব্যাপার। বৃষ্টিকে সঙ্গে নিয়ে গুটিগুটি পায়ে পথ চলছেন। হঠাৎ কুলকুল শব্দে চোখ তুলে তাকালেই দেখবেন একদম রাস্তার পাশেই ঝরনার উচ্ছ্বাস! মেঘ, বৃষ্টি আর ঝরনার শহর এটি। বলছি মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জির কথা, যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। চেরাপুঞ্জি ঘুরে আসতে চাইলে এখনই সময়।
মেঘালয়ের মেঘ দেখার ইচ্ছেটা ছিল অনেকদিনের। সে ইচ্ছের ষোলোআনাই পূরণ করেছে বৃষ্টিস্নাত চেরাপুঞ্জি। চেরাপুঞ্জি দেখার জন্য শিলং থেকে ট্যাক্সিতে রওনা দিলাম সকাল সকাল। তবে ভাগ্যটা একটু খারাপই বলা চলে। প্রচণ্ড মেঘে সেদিন আচ্ছাদিত ছিল পুরো শহর। কুয়াশার মতো ঘন মেঘ কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পাহাড়ে পাহাড়ে। সেই মেঘের চাদরে চেরাপুঞ্জির সবটুকু সৌন্দর্য দেখা সম্ভব হয়নি। সবচেয়ে বড় আফসোসের বিষয় ছিল, চেরাপুঞ্জির সবচেয়ে বড় ঝরনা সেভেন সিস্টার্স দেখতে না পারাটা। তবে বৃষ্টি আর মেঘের কারণে চলতি পথের সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছিল কয়েকগুণ। সেগুলো উপভোগ করেছি প্রাণভরে।
শিলং থেকে ৫৬ কিলোমিটার দূরে বৃষ্টির শহর চেরাপুঞ্জি। চেরাপুঞ্জির চলতি পথের সৌন্দর্যের কোনও তুলনা হয় না। এখানে ছোটখাট ঝরনা চোখে পড়ে পথ চলতে চলতেই। এছাড়াও সেভেন সিস্টার্স ফলস রয়েছে যা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ। দেখতে পারবেন রামকৃষ্ণ মিশন। স্কুল, মন্দির ও মিউজিয়াম দেখতে পারবেন এখানে। মোসমাই গুহা রয়েছে।
এছাড়া বেশকিছু ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখতে পারবেন চেরাপুঞ্জির সৌন্দর্য। একদিনে গিয়ে একদিনে ফিরে আসলে দেখতে পারবেন এগুলো সবই। তবে ডবল ডেকার রুট ব্রিজ দেখতে চাইলে আপনাকে এখানে থেকে যেতে হবে এক রাত।
যেভাবে যাবেন
ডাউকি বর্ডার দিয়ে খুব সহজেই শিলং চলে যেতে পারবেন। সেখান থেকে ১ ঘণ্টার পথ চেরাপুঞ্জি। চাইলে বর্ডার থেকে সরাসরিও চলে যেতে পারেন চেরাপুঞ্জিতে। প্রায় ৬০ কিলোমিটার পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ পাড়ি দিতে হবে। শিলং থেকে যেতে পারেন ট্যাক্সিতে। রিজার্ভ নিলে ভাড়া পড়বে ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকার মধ্যেই।
জেনে নিন
চেরাপুঞ্জিতে এসময় বেশ ঠাণ্ডা আবহাওয়া। আর বৃষ্টির রিমঝিম তো রয়েছেই। ঠাণ্ডা, সর্দির ওষুধ সঙ্গে রাখবেন অবশ্যই। এছাড়া রেইন কোট, বৃষ্টিতে পরার উপযোগী পোশাক ও স্যান্ডেল সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
/এনএ/