X
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

মারমেইড রিসোর্ট: সময় যেখানে খুব আপন

রবিউল ইসলাম
২০ আগস্ট ২০১৭, ১৭:২০আপডেট : ২০ আগস্ট ২০১৭, ১৭:২৪
image

নাগরিক জীবনের সীমাহীন ব্যস্ততা ভুলে প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটাতে চাইলে সময় ও সুযোগ মতো চলে যেতে পারেন মারমেইড ইকো সি-রিসোর্টে। যেখানে ঘটেছে আধুনিকতা এবং প্রকৃতির এক অদ্ভুত সম্মিলন। যা আপনাকে করে তুলবে সজীব ও প্রাণবন্ত।
মারমেইডে যেতে চাইলে কক্সবাজার থেকে ১৬ কিলোমিটারের মতো যাত্রাপথে যেতে হবে আপনাকে। সেখানে রয়েছে পেঁচার দ্বীপ। এর পাশ ঘেঁষে গেছে রেজু খাল নদী। এই নদীর পাশ ঘেঁষেই হলো মারমেইড বিচ রিসোর্ট। নান্দনিক এ মারমেইড রিসোর্টটি ইকো-ট্যুরিজমের এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ।

মারমেইড ইকো রিসোর্ট
অন্তহীন সমুদ্রের সূর্যাস্ত নয়নভরে দেখে মুগ্ধ হওয়ার পাশাপাশি মজাদার সি ফুড খাওয়ার অভিজ্ঞতা হবে মারমেইড বিচ রিসোর্টে। রিসোর্টের দুই পাশে বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরি করা গেইট। গাড়ি থেকে নেমে খানিকদূর হাঁটতেই আপনাকে বরণ করে নেবে আন্তরিক কর্মীদল। তারা অভিনন্দন জানাবে বুনো ফুলের তৈরি মালা দিয়ে।  
ইকো মানেই বাঁশ-কাঠের তৈরি পরিবেশবান্ধব বাড়ি। মারমেইড বিচ রিসোর্টেও পরিবেশবান্ধব নকশাকে বেশ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শতভাগ দীর্ঘস্থায়ী উপাদান দিয়ে ডিজাইন করা সেগুলো।

নিরিবিলিতে সময় কাটানো যাবে এখানে
ভেতরের পাশাপাশি চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে বাইরেও। আমাদের যদিও থাকা হয়নি সেখানে, গিয়েছিলাম রাতের খাবার খেতে। প্রকৃতির আলোছায়ার মাঝে সাজানো হয়েছিল খাবার টেবিল। পরিবেশনও ছিল চমৎকার। বড় কাঠের গুঁড়ির ওপর কাচ বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে টেবিল। কাঠ-বাঁশের নান্দনিক খাবারের ঘরের পরেই বালির বিচ। বিচে বসানো কাঠের চৌকি। নিরিবিলিতে সময় কাটানোর জন্য অংশটি সাজানো হয়েছে মনোরমভাবে। পাশাপাশি ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। জোয়ারের পানি যখন একেবারেই মারমেইডের কাছে চলে আসে, তখন বসানো হয় টেবিল। মোমের আলোতে প্রিয়জনের সঙ্গে রাতের খাবারটা সেরে নিতে পারবেন এখানে।

ক্যান্ডেল লাইট ডিনারের সুযোগ রয়েছে মারমেইড বিচ রিসোর্টে
মারমেইডে নতুন সংযোজন সুইমিং পুল। চিকন বাঁশের পাইপ দিয়ে পুলের পাড়ে বসে ডাবের পানি পান করতে পারেন চাইলে।
বোটে চড়ে সমুদ্রে মাছ শিকার করে সেই মাছ খেতে পারবেন আপনি। সেই ব্যবস্থাও করে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
মারমেইড বিচ রিসোর্ট পুরো বছরকে চারটি সিজনে ভাগ করে তাদের মেন্যুগুলো সাজায়। ব্রেকফাস্ট বুফেতে ৫০ রকমেরও বেশি খাবারের আয়োজন রয়েছে এখানে। অতিথি সংখ্যা বাড়লে বেড়ে যায় পদের সংখ্যাও। দেশি সেট মেন্যুর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্যুজিন রয়েছে দুপুর ও রাতের খাবারে।   

মারমেইড রিসোর্টের নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটাতে পারবেন একান্তে
মারমেইডে খাবারের খোলামেলা কটেজ পেরিয়ে উত্তরে তাকালেই চোখে পড়বে বড় কচ্ছপের ভাস্কর্য। সৈকতের বালির উপর গজানো ছোট গুল্মলতা আর নারকেল চারার মাঝে চার হাত পা মেলে মাথা উঁচিয়ে বসে আছে মারমেইডের কচ্ছপ।
এদিকে সবুজ গাছ-গাছালিতে সাজানো বাগানের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মুগ্ধতা আপনাকে ছুঁয়ে যাবে। সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন দারুণ এক ধরনের বাতি। এগুলো তৈরি করা হয়েছে রঙ্গিন কাচের বোতলের অংশ ভেঙ্গে। এরপর যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক লাইন। সেখান থেকে তৈরি হওয়া রঙিন আলো ছুঁয়ে যাবে মন।  

সবুজ গাছগাছালিতে ঘেরা মাইমেইড ইকো রিসোর্ট
বিভিন্ন প্রাকৃতিক নকশা দেখে মুগ্ধ হতে হবে আপনাকে। ঢেউটিন দিয়ে ফ্রেম বানিয়ে তোয়ালে বসিয়ে সিমেন্ট, বালি ও কেমিক্যালের মিশ্রণে বানানো হয়েছে মজবুত টব! সামনে গেলেই চোখে পড়বে গাছের গুঁড়ির উপর কড়াই বসিয়ে বানানো বেসিন।
কক্সবাজার শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে মারমেইড ইকো রিসোর্ট, মারমেইড বিচ রিসোর্ট থেকে দুই কিলোমিটার দূরে। বিচ রিসোর্ট থেকে ওখানে চাইলে নৌকা বা স্পিডবোটেও আসা যায়।
এই রিসোর্টির ঘরগুলোর ছাদ-চালা বাঁশ ও ছন দিয়ে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যেন তা গাছপালাগুলোর উচ্চতাকে ছাড়িয়ে না যায়। আশপাশের নৈসর্গিক দৃশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সব জায়গায় মাটি এবং কাঠ রঙের ব্যবহার করা হয়েছে। অযত্নে বেড়ে ওঠা বুনো লতাগুল্মও এই রিসোর্টের ভালোবাসার সম্পদ।

তাজা ফলের রস খেতে পারবেন এখানে সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার সুযোগও থাকছে
ঘরগুলো বাইরে থেকে দেখতে কুটিরের মতো হলেও ভেতরে কতটা আন্তরিকতা, যত্ন আর আধুনিকতা অপেক্ষা করছে আপনার জন্য, সেটি চিন্তারও বাইরে! ঘরের ভেতর মোটামুটি আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান। গোসল করার ঘরটায় ঢুকলে মুহূর্তেই মন ভালো হয়ে যাবে। প্লাস্টিকের বোতলে ভর্তি বাজারি শ্যাম্পুর বদলে কাচের পাত্রে ভেষজ উপায়ে বানানো শ্যাম্পু। সেটা আবার সবুজ গাছের পাতা দিয়ে কায়দা করে ঢাকা। দুই পাশে দুটো কাঠগোলাপ ফুল গুঁজে দেওয়া। সাবান, শ্যাম্পু রাখা হয়েছে নারকেলের লম্বা একটা খোলের মধ্যে।

মারমেইড ইকো রিসোর্টে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর জিনিসপত্র যথাসম্ভব কম ব্যবহার করা হয়েছে। পেঁচার দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ বহাল রেখেই সব বাংলো তৈরি করা হয়েছে। ইয়োগা সেন্টার, স্পা, নৌকা ভ্রমণ, সম্মেলন কক্ষ, প্রেক্ষাগৃহ সব কিছুরই এখন ব্যবস্থা আছে এই পরিবেশবান্ধব অবকাশযাপন কেন্দ্রে।
এই ইকো রিসোর্টে অবকাশ যাপনে যাওয়া বিদেশির সংখ্যা নেয়াহাত কম নয়। প্রায় ৪০ শতাংশ। এখানে সবচেয়ে বেশি আসেন ব্রিটিশ পর্যটক। যারা সার্ফিং ভালোবাসেন তারা এখানে আসেন।
নিরিবিলি এবং একান্তে সময় কাটাতে মারমেইডের হানিমুন প্যাকেজও অনেকের পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
ছবি: মারমেইড রিসোর্টের ফেসবুক পেইজ থেকে নেওয়া 

/আরআই/এনএ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
‘ভুঁইফোড় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে’
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
গরমে স্বস্তির খোঁজে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, সচেতনতার আহ্বান ডিএমপির
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না কয়েকটি এলাকায়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
জাবির সিনেট ও সিন্ডিকেট প্রতিনিধি নির্বাচন: বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের নিরঙ্কুশ জয়
সর্বাধিক পঠিত
মিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিমিশা-ডিপজলদের শপথ শেষে রচিত হলো ‘কলঙ্কিত’ অধ্যায়!
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
ডিবির জিজ্ঞাসাবাদে যা জানালেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে নতুন যা জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক