ঢাকায় যাত্রা শুরু করলো চট্টগ্রামের জনপ্রিয় বুক ক্যাফে ‘বাতিঘর।’ শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) জনপ্রিয় এ বুক শপের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বাংলামোটর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সপ্তম তলায় গড়ে তোলা এই অত্যাধুনিক বইয়ের সাম্রাজ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। আরও ছিলেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক গোলাম শামসুজ্জামান খান। এছাড়াও পাঠক, লেখক ও প্রকাশকরা উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘পাগলামি না থাকলে ভালো কিছু হয় না। যে আবেগ নিয়ে দীপঙ্কর এই বাতিঘর বানিয়েছে, তাতে বলাই যায় কিছুটা পাগলামি ওর আছে। না হলে এত বড় কাজ করা সম্ভব না। আমি দীপঙ্করের চট্টগ্রামের বাতিঘর দেখেছি। মূলত সেখান থেকেই আমার পরিচয় ওর সঙ্গে। আশা করছি, ঢাকার এই বাতিঘর মানুষের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ আরও বাড়িয়ে তুলবে।’
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তার বক্তব্যে বলেন, ‘যখন পৃথিবীতে বই ছিল না, তখন এক প্রজন্মের তথ্য পরের প্রজন্ম ধারণ করতে পারেনি। বই হওয়ার পর থেকে এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্ম আরও বেশি জ্ঞান আরোহণ করতে পারছে। সুতরাং বইয়ের প্রচলন সব সময়ই চলবে। বইয়ের ব্যবসাও চলবে। অনেক খরচ করে বাতিঘর বানিয়েছে দীপঙ্কর। আমার খুবই ভালো লেগেছে। আমি ওকে জানিয়ে দিয়েছি, যদি এখানে বইয়ের ব্যবসা না হয় তবে সব বই উঠিয়ে দিয়ে এটাকে মিউজিয়াম বানাবো। আগুন যত জ্বলবে আলো তত সুন্দর হবে। তাই বলিছি, যদি পাঠক এখানে আসেন তবেই এটা সত্যিকারের বাতিঘর হবে।’
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামে বাতিঘরের সফলতা ও জনপ্রিয়তা দেখেই ঢাকায় বাতিঘরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ঢাকার বাতিঘরও সফল হবে। কারণ এখানে চাহিদা মোতাবেক সব বই রয়েছে।
বাতিঘরের কর্ণধান দীপঙ্কর দাস জানান, মুঘল স্থাপত্য বিশেষত লালবাগ কেল্লার আদলে বাতিঘরের অভ্যন্তরীণ সজ্জা করেছেন শিল্পী শাহীনুর রহমান, আলোকসজ্জা করেছেন নাসিরুল হক খোকন ও জুনায়েদ ইউসুফ। ঢাকায় বাতিঘরের নির্মাণ কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি। ঢাকা শহরের অন্যতম প্রাচীন ও তাৎপর্যপূর্ণ স্থাপত্যের প্রতীক তুলে ধরার ছোট্ট প্রয়াস করেছে বাতিঘর।
তিনি জানান, বইয়ের দোকান মানেই ব্যবসা। কিন্তু ব্যবসা হোক বা না হোক আমরা একটি স্বপ্ন শুরু করেছি। তিনি সেই স্বপ্নে সবাইকে অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানান।
বাতিঘর ঢাকাতে থাকছে প্রায় শতাধিক বিষয়ের ১৮ হাজার লেখক ও আড়াই হাজার দেশি-বিদেশি প্রকাশনা সংস্থার লক্ষাধিক বইয়ের সংগ্রহ। সংরক্ষিত প্রকাশক কর্নার, শিশু-কিশোর কর্নার, লিটল ম্যাগাজিন ও সাহিত্য সাময়িকী কর্নার এবং ক্যাফে। এখানে খাওয়া-দাওয়া মূল উপজীব্য নয়, তাই খাবার বলতে শুধু চা-কফি ও বিস্কুট থাকবে। বাতিঘরে এসে বইয়ের সাম্রাজ্যে হারিয়ে যাবেন সবাই- এমনই প্রত্যাশা করেন অতিথিরা।