২০১৭ সালে, দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি মানুষের খাদ্যাভাসেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন । পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতনতা এ পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান একটি কারণ বলেই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। আর ২০১৮ সালে ঠিক কোন ধরনের খাবার ঠাঁই করে নিতে পারে মানুষের খাদ্যাভাসে, সে বিষয়ক একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।
চলুন এক নজরে দেখে নেয়া যাক তালিকাটি –
বাড়বে খাওয়া-দাওয়া
বিগত বছরের তুলনায় এ বছর স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহনের পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। মানুষের খাদ্য তালিকায় কিমচি ও মিসো’র মতো প্রোবায়োটিক খাবারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুনের মতো প্রিবায়োটিক খাবার জায়গা করে নেবে।
পানীয় হবে স্বাস্থ্যকর
স্বাস্থ্যসচেতন মিলেনিয়ালরা অ্যালকোহলমুক্তপানীয় বেশি গ্রহণ করছে বলেই জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। নতুন বছরে এ ধরনের পানীয় গ্রহণের মাত্রা আরও বাড়বে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। গত বছরেই বাজারে বিভিন্ন স্বাদের অ্যালকোহলমুক্ত পানীয় বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে যা চলতি বছরে আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন পুষ্টিবিদরা।
ঘরে খাবে বেশি মানুষ
২০১৮ সালে বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরেই নিত্য নতুন খাবার আইটেম রান্না ও সেগুলো গ্রহণ করার চল গত বছরের তুলনায় বাড়বে বলেই জানিয়েছে বিবিসি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে পছন্দের খাবারের রেসিপি জোগাড় করা সহজ হয়ে যাওয়া এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়ার ফলে ২০১৭ সালেই এই চল বেড়েছিল। এ বছর তা আরও বাড়বে এমনটাই আশা করা হচ্ছে।
হাইওয়ান খাবার আসবে মেনুতে
হাওয়াইয়ান খাবার ‘পোক বোলস’ খেতে বেশ সুস্বাদু হলেও তা বাইরের রেস্তোরায় প্রায় পাওয়া যায় না বললেই চলে। কিন্তু জনপ্রিয়তার কারণে রেস্টুরেন্ট মেন্যুতে এ বছর হাওয়াইয়ান খাবারের উপস্থিতি বাড়বে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
চা এবং চা
চাপ্রেমীদের জন্য ২০১৮ সালটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৭ সালেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হারবাল এবং গ্রিন টি-এর বিক্রি যথেষ্ট পরিমাণে বেড়েছে। এমনকি বিভিন্ন দেশে স্বল্প কিছু সংখ্যক ‘টি-বার’ পর্যন্ত চালু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন বছরে এ ধরনের পানশালা আরও বাড়বে এবং বাজারে বিদ্যমান পানীয় ব্যবসাগুলোর সঙ্গে টক্কর দেবে।
উদ্ভিদনির্ভর প্রোটিন
২০১৮ সালে মানুষ উদ্ভিদনির্ভর প্রোটিনের দিকে আরও ঝুঁকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আর এজন্য মানুষ টফু, টেম্পেহ, সয়ার মতো উপাদান বেশি গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। পুষ্টিবিদরা আরও জানিয়েছেন, খুব দ্রুত মানুষ ভেগানিজমের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন, এ বছর তা বাড়বে। ধারণাটি একদম অযৌক্তিক নয়, কারণ বিভিন্ন দেশের পেশাদার শেফরাও ইতোমধ্যে এ ধরনের উপাদান রান্নায় ব্যবহার করা শুরু করেছেন।
আঞ্চলিক খানাই আসল
২০১৭ সালে আঞ্চলিক খাবারের প্রতি মানুষের আগ্রহ ছিল বেশি। এ বছরও তা বিদ্যমান থাকবে বলেই আশা করা হচ্ছে। ক্রেতাদের আগ্রহের কারণে নিজ নিজ অঞ্চলের বিখ্যাত খাবার বিভিন্ন দেশের রেস্তোরাঁর মেন্যুতে ইতোমধ্যে ঠাঁই করে নিলেও, এ বছরে এ ধরনের আরও খাবার মেন্যুতে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্তত পেশাদার শেফ’রা তাই জানিয়েছেন।
ফুলেল খাবার
খাওয়া সম্ভব এরকম ফুল খাওয়ার ব্যাপারেও মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। এখন আর শুধু প্লেট সাজাতে নয়, ফুল খাদ্য হিসেবেও পরিবেশন করছে অনেক রেস্টুরেন্ট। এ বছর স্বাদ অপরিবর্তিত রেখে ফুলের রং পরিবর্তন করে পরিবেশন করার পরিকল্পনা করছেন পেশাদার শেফরা।
চাষীদের হাসি
চাষের মাছের কদর ছাড়াও চাষাবাদ করা পণ্যের দিকেও মানুষের ঝোঁক বাড়ছে। আর তাই আগের বছরের মতো নতুন বছরেও এর চাহিদা বজায় থাকবে এবং আরও বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে।