X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রোটো কিউবিজম থেকে কিউবিজম

পাশ্চাত্য চিত্রকলার উত্তরণকাল

অদিতি ফাল্গুনী
২৯ জুন ২০১৬, ১৩:২২আপডেট : ৩০ জুন ২০১৬, ১৭:৩৭

পাশ্চাত্য চিত্রকলার উত্তরণকাল ১৯১০ সালে ‘সাঁল দে আঁদিপদোঁস’-এ প্রতিষ্ঠান বিরোধী প্রোটো-কিউবিস্ট শিল্পীদের একটি প্রদর্শনী দেখে কবি, অঙ্গসজ্জাকর এবং ড্রাফটসম্যান গেলেট বার্জেস কৌতুকের স্বরে বলেন, ‘ক্যানভাসগুলোর ঔদ্ধত্য এবং কুশ্রীতার যেন কোনো শেষ নেই। গোল, গোল যত আপেল আর হলদে, হলদে যত কমলার স্টিল-লাইফ স্কেচ, বর্গাকৃতি টেবিল, ক্যাটকেটে সবুজ আর উগ্র বেগুনি, অসুস্থ করে দেওয়া লাল আর ভয়ে কাঁপুনি ধরানো নীল রঙের ছড়াছড়ি।’

চিত্রকলা সম্পর্কে যে নূন্যতম জ্ঞানও রাখে না (যেমন, আমি বা আমার মতো যারা) তাদের কানেও ‘কিউবিজম’ শব্দটি মাঝে মাঝে ঢোকেনি তা নয়। পশ্চিমা চিত্রকলার নানা সময়পর্ব জুড়ে নানা আন্দোলনের ভেতর ‘কিউবিজম’ খুবই জরুরি একটি আন্দোলন ছিল যার উন্মেষ বিংশ শতকে এবং সর্বকালের মহত্তম শিল্পীদের একজন পাবলো পিকাসো ছিলেন এ আন্দোলনের পুরোধা। তা ‘কিউবিজম’ আন্দোলনটি এমন তো নয় যে আকাশ থেকে একদিনে পড়ে গিয়েছিলো শিল্পীদের ইজেলের কাছে? নিশ্চিত সে আন্দোলনের আগে-পিছে আরো নানা শর্ত ছিল। হ্যাঁ, প্রোটো-কিউবিজম কিউবিজম আন্দোলনের ঠিক আগের শিল্পান্দোলন যা অনিবার্য করেছিল শিল্পের ইতিহাসে কিউবিজমের আবির্ভাব। এখানে বলে রাখা ভাল, এই নিবন্ধকার চিত্রশিল্পী তো নয়ই, শিল্পবোদ্ধাও ছিল না কোনোকালে! মাঝে মাঝে দু’একবার আর্ট গ্যালারিতে যায়নি তা নয়, তবে সে যাওয়া কখনোই নিয়মিত ছিল না। চিত্রকলা সম্পর্কে তার পড়াশোনাও শূন্য। তবে কোন সাহসে এমন একটা বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার ঔদ্ধত্য? মানুষটা তো আমি ভয়ানক অলস যে কিনা ‘সবকিছু এক জীবনে পারবো না’ বলে অনেক কিছুই তালিকা দিয়ে বাদ দিয়ে দেয়। এককালে কিছু ভালো সিনেমা দেখেছিল। এখন সেটাও বাদ। তবে কেনো চিত্র সমালোচনা? সত্যি বলতে গত দু’তিন বছর ধরে দেশের সামগ্রিক অস্থিরতা এবং নৈরাজ্যের ভেতর দিন কাটাতে কাটাতে খুব অল্প কিছুদিন হয় মানসিক অবসাদ কাটাতে স্রেফ নেটে কিছু কিছু চিত্রকলা দেখছিলাম এবং পড়ছিলাম। কৌতূহলী শিশুর হাতে সহসা উঠে আসা কোনো খেলনার মতো। নেটে বসে নিজে নিজে চিত্রকলা সম্পর্কে ‘অ-আ-ক-খ’ পড়ার চেষ্টা, গ্যালারি যাবার সময় ও পয়সা বাঁচিয়ে। তেমন চেষ্টা থেকে আজকের প্রবন্ধের অবতারণা। এবার মূল প্রসঙ্গে যাওয়া যাক।
প্রোটো-কিউবিজম কি?
প্রোটো-কিউবিজম যাকে আবার অনেক সময় প্রাক-কিউবিজম বা আদি-কিউবিজম বলা হয়, মূলত, পাশ্চাত্য শিল্পের ইতিহাসে ১৯০৬ থেকে ১৯১০ সাল নাগাদ মধ্যবর্তী কালপর্ব। এ সময়ের ছবিগুলো কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা, শিল্পী বা ডিসকোর্স প্রভাবিত না হয়ে বরং নানাবিধ পরিস্থিতি, শর্ত এবং প্রভাব দ্বারা আলোড়িত হয়েছিল। পূর্ববর্তী শিল্পান্দোলন ফভিজমের তুলনায় এ পর্বের ছবিগুলোতে কালার প্যালেট বা রংয়ের উচ্ছ্বাস হ্রাস পেয়ে আঙ্গিকের আমূল জ্যামিতিকীকরণের প্রবণতা দেখা দেয়। এ আন্দোলনের শিকড় অবশ্য ঊনবিংশ শতকেই প্রোথিত। ১৯১১ সাল থেকে যে আন্দোলন আরো একরোখা চারিত্র্যে ‘কিউবিজম’ আন্দোলন হিসেবে রূপলাভ করবে।
প্রোটো-কিউবিস্ট যুগের ছবিগুলো ছবির বস্তুসমূহকে কিউবিক বা কৌণিক আকৃতিতে রূপদানের জ্যামিতিক প্রণোদনা মান্য করে। শারীরিক জগতের গঠনমূলক সত্তাকে বুঝতে পূর্বের ছবির ক্লাসিক্যাল ব্যঞ্জনা ক্রমাগতভাবে সরিয়ে নেওয়া হতে থাকে। শুধুই জর্জেস ব্র্যাক বা পাবলো পিকাসো নন, বরং ১৯০০ সাল থেকে ফ্রান্সের নানা শিল্পী যেমন জাঁ মেতজিঙ্গার, অঁরি লো ফোকোনিয়ে, হোবা দ্যেলোনে, ফার্নান্দ লেঘে প্রমুখের রং-তুলিতে এবং সেই সাথে অপরাপর ইউরোপের আরো নানা শিল্পীর আঁকা ছবি থেকে এ আন্দোলনের সূত্রপাত। শিল্পীদের নানা অধীর আঙ্গিককে আলিঙ্গন করেছে প্রোটো-কিউবিস্ট পর্বের কাজ যা পরবর্তীতে বহু ব্যক্তি, গোষ্ঠি এবং আন্দোলনকে প্রভাবিত করবে আর শেষ অবধি বিংশ শতকের সূচনায় আধুনিক চিত্রকলায় একটি মৌলিক জাগরণের দেখা দেবে।

প্রোটো-কিউবিস্ট আন্দোলনের ইতিহাস এবং মুখ্য প্রভাবক
এ আন্দোলনের পেছনের ইতিহাস খুবই বৈচিত্র্যপূর্ণ। আন্দোলন গড়ে ওঠার পেছনে প্রতিটি শিল্পীর ব্যষ্টিক ভূমিকা ছিল অনন্য। চিত্রকলায় পোস্ট-ইম্প্রেশনিজম থেকে সাহিত্যে সিম্বলিজম বা প্রতীকবাদ, লে নাবিস বা নিও-ইম্প্রেশনিজম, পল শেজান কিম্বা পল গগ্যাঁর ছবি থেকে আফ্রিকান, মিশরীয়, গ্রিক, মাইক্রোনেশীয়, নেটিভ আমেরিকান কিম্বা ইবেরিয়ান ভাস্কর্য...অনেক কিছুর উপাদানে গড়ে উঠেছে এ আন্দোলন।
প্রোটো-কিউবিস্ট আন্দোলনে শিল্প বা বিশেষত, চিত্রকলায় আঙ্গিক নিয়ে ভাবনা বিষয়ে রেনেসাঁ যুগের ধ্যান-ধারণাকে প্রশ্ন করা হয়। সত্যি বলতে রোমান্টিক শিল্পী ইউজিন দেলাক্রোয়া, বাস্তববাদী গুস্তাভ ক্যুরবেট এবং সত্যি বলতে সব ইম্প্রেশনিস্ট শিল্পীই একটি অত্যাসন্ন উদ্দীপনার মোহে শিল্পের ক্লাসিক্যাল ভাবনাকে পরিহার করেছেন। একাডেমিয়ার বেঁধে দেয়া প্রকাশ-ভঙ্গির বিপরীতে প্রকাশ-ভঙ্গির গতিশীলতার জন্য প্রত্যেক বড় শিল্পীই নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। চিত্রকলার এ ক্রমাগত বিবর্তনের প্রক্রিয়ায় স্পেস বা পরিসরে স্থির অবজেক্টের প্রতিনিধিত্বর বদলে রঙ্গের গতিশীলতা ক্রমাগত আরাধ্য হয়ে উঠেছিল শিল্পীদের। ইম্প্রেশনিজমের অবাধ স্বাধীনতা একটু যদিও বা চিত্রকলার সংহতিকে অচল করে তুলেছিল, শিল্পের পুরো অঙ্গ-সংগঠনই পাল্টে যায় পরের প্রজন্মের শিল্পীদের হাতে- যখন কিউব থেকে কিউবা বা কৌণিকতা থেকে কৌণিকতায় বদলে যেতে থাকে রং ও রেখা-ভাষ্য।
নিচে আমরা প্রোটো-কিউবিস্ট আন্দোলন গড়ে ওঠার পেছনে প্রভাবক কিছু একক শিল্পী, গোষ্ঠি এবং আন্দোলনের কথা আলোচনা করছি
পল শেজান
মাহদি গ্রাস (অয়েল অন ক্যানভাস, ১৮৮৮), শিল্পী : পল শেজান চিত্রকলায় শেজানের মতো শিল্পীদের আবির্ভাব চিত্রকলার প্রতিনিধিত্বমূলক আঙ্গিকের বদলে ছবির ভাষাকে ক্রমাগত বিমূর্ত করে তুলেছিল। ১৯০৪ সালের ১৫ এপ্রিল এমিল বার্নার্ডকে লেখা এবং চিত্রকলার ইতিহাসে একটি বহুল আলোচিত চিঠিতে শেজান দ্ব্যর্থকভাবে লিখেছিলেন : ‘প্রকৃতিকে ব্যখ্যা করো সিলিন্ডার বা কোণের পরিভাষায়...যেন কোনো অবজেক্টের প্রতিটা দিক... প্রতিটা পার্শ্ব একটি কেন্দ্রিয় বিন্দুতে নমিত হয়।’
জ্যামিতিক কাঠামোর সরলীকরণের পাশাপাশি পরিসর এবং আয়তনের প্রভাব ফুটিয়ে তোলার পদ্ধতিগুলো নিয়ে শেজান উদ্বিগ্ন ছিলেন। আলোর কেন্দ্র থেকে তাঁর ছবির অবজেক্ট যত দূরত্বে যাবে বা যেত, সে অনুযায়ী তিনি রং বদলে দিতেন- রং হয়ে উঠত উত্তপ্ত থেকে কোমল বা মৃদু। চিত্রকলার ক্ল্যাসিসিজম থেকে তাঁর বিচ্ছেদ বোঝা যাবে বিশেষত তাঁর ব্রাশস্ট্রোকের ব্যবহারে। ক্যানভাসের পরিসরের অদল-বদলের জটিলতা যা প্রায়ই স্বেচ্ছাচারী নানা দেহরেখা এবং বৈপরীত্য মিলিয়ে একটি শক্তিশালী বুনোটের প্রভাব সৃষ্টি করতো তা তাঁর শেষের দিকের কাজে আরো বেড়ে গেল। শিল্পী হিসেবে যত বেশি স্বাধীনতা নিয়েছেন শেজান ততো তাঁর কাজের বুনোট আরো বড়, সাহসী, স্বেচ্ছাচারী, গতিশীল এবং উত্তরোত্তরভাবে বিমূর্ত হয়ে উঠেছে। চিত্র সমালোচক ল্যুই ভোশ্চেল কিউবিস্টদের আন্দোলনে শেজানের ভূমিকা বোঝাতে ‘ফ্রম শেজান টু কিউবিজম (এক্লেয়ারে ১৯২০ সালে প্রকাশিত)’ নিবন্ধটি রচনা করেন। ভোশ্চেলের মতে ‘স্থাপত্যগত’ এবং ‘বৌদ্ধিক’-এ দু’ভাবেই শেজান পরবর্তী শিল্পীদের প্রভাবিত করেছেন। উদাহরণ হিসেবে ১৮৯৭ সালে আঁকা তাঁর ‘মন্ট সেইন্ট-ভিক্তোয়ের সিন ফ্রম দ্য বিবেমুস কোয়েরি’ ছবিটির কথা ধরা যাক। বাল্টিমোর মিউজিয়ামে রাখা এ ছবিটিতে পাহাড়ের মহত্ত্ব বোঝাতে শেজান পাহাড়টি দু’বার এঁকেছেন। সাহস এবং নতুনত্বের উদ্ভাবনী শক্তিতে শেজান শিল্পের একটি হাইব্রিড আঙ্গিকের সূচনা করেছিলেন। রেনেসাঁ যুগের চিত্রকলা থেকে প্রকৃতির অজড় অমরত্ব আর অন্যদিকে নিজ প্রজন্মের অস্থিরতা এবং গতিশীলতা জুড়ে দিয়ে ছবিতে এক পরস্পরবিরোধী আঙ্গিকের সৃষ্টি করেন তিনি। একদিকে শিল্পের প্রথাগত শর্তের মান্যতা বিষয়ে তাঁর ভীতি আছে আবার সবকিছু বিনির্মাণের আগ্রহও তাঁর অতি প্রবল। প্যারিসের আঁভা-গার্দ আন্দোলনের শিল্পীরা (জাঁ মেতজিঙ্গের, অঁরি লো ফোকোনিয়ে, হোবা দ্যেলোনে, ফার্নান্দ লেঘে, ওথোন ফ্রিয়েশ্চজ, জর্জেস ব্র্যাক, আন্দ্রে লোতে, রাউল দ্যুফি, আলেক্সান্দার আর্চিপেঙ্কো, পাবলো পিকাসো প্রমুখ) শেজানের কাজের আলোতে নিজেদের কাজের মূল্যায়ন করেছে। ১৯০৪ সালে ‘সাঁল দ্যু অতোম’ নাম্নী চিত্রশালায় শেজানের চিত্রকর্মের এক প্রদর্শনী হয়। তাঁর মৃত্যুর পর ১৯০৭ সালে আরো দু’টো প্রদর্শনী হয়। শেজানের কাজের প্রভাব পরবর্তী প্রজন্মের শিল্পীদের পোস্ট-ইম্প্রেশনিজম, নিও-ইম্প্রেশনিজম, ডিভিশনিজম এবং ফভিজম থেকে কিউবিজমে যেতে অনুপ্রেরণা যোগায়। ফ্রান্সে কিউবিস্ট, ইতালীতে ফিউচারিস্ট এবং জার্মানীতে এক্সপ্রেশনিস্ট আন্দোলন গড়ে তুলতে শেজানের কাজের মূল্য অপরিসীম।
ফরাসি সাহিত্যের প্রতীকবাদ
শিল্পকলার ইতিহাসবেত্তা ড্যানিয়েল রবিন্স ফ্রান্সে কিউবিস্ট চিত্রকলা এবং ইতালীতে ফিউচারিস্ট বা ভবিষ্যবাদী চিত্রকলার পেছনে ফরাসি সাহিত্যের ‘প্রতীকবাদী’ আন্দোলনের ভূমিকার কথা আলোচনা করেছেন তাঁর ‘সোর্সেস অফ কিউবিজম এ্যান্ড ফিউচারিজম’ গ্রন্থে। ফরাসি সাহিত্যের প্রতীকবাদী আন্দোলনে গুস্তাভ কাহনের ‘ফ্রি ভার্স’ রেভল্যুশন যা শিল্পকলা এবং রাজনীতির ভেতর আরো বেশি সংলাপের দাবি করছিল সে সময়ের অনেক নবীন শিল্পীকে আকৃষ্ট করে। আধুনিক নন্দনতাত্ত্বিক স্বাধীনতার জন্য ফিলিপ্পো টম্মাসো মারিনেত্তি এ আন্দোলনের প্রতি তার দেনা স্বীকার করেন। পল ফোর্টের ‘নবীনতা এবং গদ্য (ভ্যা এ প্রোস- Vers et Prose)-এ ‘মুক্তছন্দ’ আন্দোলনের কথা বলেন। এই আন্দোলনের আগে ফরাসি কবিতা ছিল শব্দ-ছন্দ-বোধের আলিঙ্গনবদ্ধ একটি সত্ত্বা যা একে অপরকে ছাড়া অচল। ছন্দ বন্ধ হয়ে গেল তো বোধের যতি! রোমান্টিক কবিরা আসার পর আগের এ রীতি বন্ধ হয়ে গেল। ১৯০৮ থেকে ১৯০৯ সাল নাগাদ শিল্পী জাঁক ভিলোঁ-ও আঁকা ছবিতে সাহিত্যের এ প্রতীকবাদী আন্দোলনের প্রভাব দেখা যায়। ফরাসি কবিতার ছন্দের আঁটো-সাঁটো সঙ্গতিকে সরিয়ে স্বাধীনতা, স্বাচ্ছন্দ্য এবং শৈথিল্য-এর নব ভাবনায় উদ্দীপিত হন প্রতীকবাদী কবিরা। অবশ্য ক্লাসিক্যাল মেজাজের কবি ও পাঠকেরা ভাবতেন এই নৈরাজ্যবাদী সিম্বলিস্টরা ফরাসি ভাষা এবং গোটা সমাজ ব্যবস্থার বারোটা বাজাবে! সেটা তো হয়ইনি উল্টো রজার দ্যু লা ফ্রেশনায়ের একটি প্রোটো-কিউবিস্ট এবং একটি কিউবিস্ট ছবি (হেসোর্ত যার অর্থ বসন্ত এবং শৈথিল্য) বা উমবার্তো বচ্চিওনির ফিউচারিস্ট ছবিকে প্রভাবিত করে ফরাসি সাহিত্যের প্রতীকবাদী আন্দোলন।
পাবলো পিকাসো
ব্রিক ফ্যাক্টরি এ্যাট টরটোসা (অয়েল অন ক্যানভাস, ১৯০৯), শিল্পী : পাবলো পিকাসো ১৮৯৯ সালে পিকাসো একাডেমিক পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে আধুনিকতবাদী অভিধায় অভিহিত একদল আঁভা-গার্দ শিল্পী ও লেখকের গোষ্ঠিতে যোগ দেন। বার্সেলোনার ‘এলস ক্যাত্র গাতস’-এ বসে এই নবীন শিল্পী ও লেখকেরা আর্ট ন্যুভো-র প্রতীকবাদ যা কন্ট্যুর বা দেহরেখার সরলায়িত আঙ্গিক ও অস্বাভাবিক রংয়ের দ্বারা মূর্ত হচ্ছিল সেসব বিষয়ে আলোচনা করতেন। থিওফিল স্টেইনলেন বা অঁরি দ্যু তুলোজ-লোত্রেসের পাশাপাশি ফ্রান্সিসকো গয়্যা বা এল গ্রেকোর প্রভাব পিকাসোর এ সময়ের কাজে দেখতে পাওয়া যায়। আঙ্গিক এবং পরিসারের অন্তর্বুনন এল গ্রেকোর এক নতুন উদ্ভাবনা। এল গ্রেকোর এ উদ্ভাবনা তিন শতক পর শেজান এবং পিকাসোর কাজে নতুনভাবে আত্তীকৃত হবে। এল গ্রেকোর এ ঢংকে আত্তীকৃত করে পিকাসো তাঁর বন্ধুদের অসংখ্য পোর্ট্রেট এঁকেছেন। তাদের মধ্যে কার্লোস কাসাগেমা এবং জেইমে সাবাহতেসের কথা বিশেষভাবে বলা যায়। আধুনিকতাবাদীরা অবশ্য রাজনৈতিক নৈরাজ্য এবং অন্যান্য নানা সামাজিক বিষয় যেমন দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়াদের জন্য সমবেদনাকে তাদের আঁকার বিষয়ভুক্ত করেছেন। যেমনটা অচিরেই পিকাসোর ‘নীল পর্ব’-এ দেখা যাবে। পিকাসোর আগেই প্রতীকবাদী চিত্রশিল্পে হতাশা এবং বিষাদের রং বোঝাতে নীল রং বিশদভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রথম যে শিল্পী প্রয়াত এল গ্রেকোর ছবির গঠনগত সঙ্কেত বুঝতে পেরেছেন তিনি অবশ্যই পল শেজান। এ দুই শিল্পীর কাজের তুলনামূলক পর্যালোচনায় কিছু সাদৃশ্য দেখতে পাওয়া যায় : মানবদেহের ভাঙচুর, লালচে চালচিত্র, পরিসরের বিন্যাসগত মিল ইত্যাদি। ব্রাউনের মতো শিল্পবেত্তারা তাই এলো গ্রেকো এবং শেজানেক ‘ভাবগত ভ্রাতা’ বলে অভিহিত করেছেন।
১৯০৪ সালে প্যারিসে আসার পর পিকাসো বিভিন্ন গ্যালারি ও সাঁলোতে পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট চিত্রশিল্পী ভ্যান গঘ, শেজান, গগ্যাঁ প্রমুখের কাজ দেখে নিজের মতো করে আত্তীকৃত করতে থাকেন। আবিষ্কার করেন নতুন শৈলী ও কৌশল, আর সেই সাথে অমিশ্রিত উজ্জ্বল রং। ‘নীল পর্বে’র ছবিগুলো আঁকার সময় পিকাসো তার বন্ধু ইগনাশিও হুলাওগার প্যারিসের বাসায় গিয়ে এল গ্রেকোর ‘ওপেনিং অফ দ্য ফিফথ সিল’ ছবিটি দেখেন। এটা ‘লেস দেমোয়াজেলস দ্যভিগনন বা এ্যাভিগননের মেয়েরা’ আঁকার আগের কথা। ১৯৮০-র দশকের গোড়ায় এল গ্রেকোর ‘ওপেনিং অফ দ্য ফিফথ সিল’ এবং ‘লেস দেমোয়াজেলস দ্যভিগনন’ ছবির ভেতরের সম্পর্ক শিল্প-সমালোচকেরা তুলে ধরেন। পিকাসোর গোলাপ পর্বে আঁকা ছবিগুলোয় লোকজ মেলা এবং সার্কাস শিল্পীদের ক্রীড়া-কসরত বিষয় হিসেবেও ঘুরে-ফিরে এসেছে যা কিনা পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট, রোমান্টিক ও প্রতীকবাদী চিত্রকলা এবং কবিতায় (ব্যোদলেয়ার বা র্যাঁবোর কবিতায় যেমন) প্রতিপাদ্য হয়েছে। পিকাসোর সুরে সুর মিলিয়েই যেন সমসাময়িক কবি গিয়্যাম এ্যাপোলনিয়ারের কবিতায় এ্যাক্রোবাটদের রহস্য এবং মাধুর্য প্রস্ফুটিত হয়েছে। ১৯০৬ সালে ‘বাতিউ লাভোয়াঁ’-য় কাজ করার সময় বিমূর্ত অভ্যন্তরীণ পরিসরে দাঁড়ানো নারী দেহের প্রতিকৃতি আঁকায় মগ্ন হয়ে পড়েন- এ ছিল তাঁর কাজের এক নতুন অধ্যায়। শেজানের আঁকা স্নানরত দেহ, স্প্যানিশ রোমান্টিক আর্ট আর ইবেরিয়ান ভাস্কর্য ...এসব কিছুই পিকাসোর ছবিতে বড় প্রভাব রেখেছে। এ সময় পিকাসো একটি আত্ম-প্রতিকৃতি এঁকে নিজেকে বলেছিলেন ‘ভবিষ্যতের শেজান।’
জাঁ মেতজিঙ্গার
টু ন্যুডস ইন এ্যান এক্সোটিক ল্যান্ডস্কেপ (অয়েল অন ক্যানভাস, ১৯০৫), শিল্পী : জাঁ মেতজিঙ্গার ১৯০৫-০৬ সাল নাগাদ আঁকা জাঁ মেতজিঙ্গারের ফভিস্ট-ডিভিশনিস্ট কৌশলসমূহের সমাপতন সে সময়ের সাহিত্যে ছিল। প্রতীকবাদী লেখক এবং নিও-ইম্প্রেশনিজমের ভেতর গভীর সাজুয্য তিনি সব সময় বোধ করেছেন। প্রতিটি ব্রাশস্ট্রোক যেন একটি শব্দ বা সিলাবল। শিল্পী, লেখক, কবি ও তাত্ত্বিক মেতজিঙ্গার শেজানের ছবির আলোকে প্রতীকবাদী/নব্য-ইম্প্রেশনিস্ট রংয়ের তত্ত্ব অকুণ্ঠভাবে বলে গেছেন।
মেতজিঙ্গারের ডিভিশনিস্ট পর্বের আঁকা একটি ছবিতে (টু ন্যুডস ইন এ্যান এক্সোটিক ল্যান্ডস্কেপ, ১৯০৫-০৬) প্রতিটি শ্রেণীর রং পার্শ্ববর্তী অন্য শ্রেণীর রংয়ের সাথে মিলে-মিশে যাচ্ছে ঠিক যেভাবে সিলাবলগুলো মিলে বাক্য এবং বাক্যসমূহ মিলে একটি প্যারাগ্রাফ রচিত হয়।
নব্য-ইম্প্রেশনিজম
১৯১০-১৯১৪ সালে মন্দ্রিয়ান বা কান্দিনস্কির মত কিউবিস্ট শিল্পীরা বিশ্বাস করতেন যে রেখা এবং রংয়ের রয়েছে দর্শকের কাছে কিছু নির্দিষ্ট আবেগ পৌঁছে দেবার। ১৯০৬-০৭ সাল নাগাদ আঁকা মেতজিঙ্গারের নব্য-ইম্প্রেশনিস্ট আঁকার একটি তুঙ্গ মুহূর্ত আমরা দেখতে পাই তাঁর সূর্যস্নান (কুশে দ্যু সোলেই) ছবিতে। মেতজিঙ্গারের আঁকা ছবিতে সূর্যের আলোর ভাংচুর মূলত নব্য-ইম্প্রেশনিস্ট ছবির রঙের তত্ত্বে প্রোথিত। মেতজিঙ্গার যার সাথে সবচেয়ে বেশি ছবি এঁকেছেন সেই দেলানোয়ে ও মেতজিঙ্গার নিজে- এ দু’জন শিল্পী মিলে দীর্ঘ যত কিউবিক ব্রাশ-স্ট্রোকের সাহায্যে ১৯০৬ এবং ০৭ সাল নাগাদ নব্য-ইম্প্রেশনিজমের একটি নতুন কৌশল উদ্ভাবনে সফল হন। অন্যদিকে গিনো সেভেরিনি ও পিয়েত মন্দ্রিয়ান ১৯০৯-১৯১১ সাল নাগাদ কিউবো-ডিভিশনিস্ট কৌশল বিকশিত করবেন। পরবর্তীতে ফিউচারিস্টরা (১৯১১-১৯১৬) গিনো সেভেরিনির প্যারিসে বসবাসকালীন আঁকা ছবিগুলো তাদের মতানুযায়ী ‘গতিশীল’ চিত্র এবং ভাস্কর্যসমূহের আওতাভুক্ত করবেন। সত্যি বলতে পিকাসো ব্যতিত (যদিও পিকাসোর নীল এবং গোলাপী পর্বের ছবি তাঁর অন্যান্য ছবি থেকে আলাদা) আর সব বড় কিউবিস্ট বা ফিউচারিস্ট শিল্পীরাই নব্য-ইম্প্রেশনিস্ট আন্দোলন থেকে জাত।

আফ্রিকীয়, মিশরীয়, গ্রিক এবং ইবেরীয় শিল্প
উনিশ এবং বিশ শতকে ইউরোপীয়রা প্রাগৈতিহাসিক নানা শিল্পকলা আবিষ্কার করছিল : আফ্রিকীয় শিল্প, আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান শিল্প, প্রাচীন মিশরীয় শিল্প, ইবেরীয় ভাস্কর্য প্রভৃতি। পল গগ্যাঁ, অঁরি মাতিসে, আন্দ্রে দেহাইন বা পাবলো পিকাসোর মতো শিল্পীরা বিভিন্ন সংস্কৃতির শক্তি এবং প্রকরণগত সারল্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন। ১৯০৬ সালে গারট্রুড স্টেইনের মারফত পিকাসোর সাথে মাতিসের পরিচয় হয়। দু’জনেরই আগ্রহ ছিল আদিবাসী সংস্কৃতি, ইবেরীয় ভাস্কর্য বা আফ্রিকীয় মুখোশ বিষয়ে। পরস্পরের ভেতর বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা সূচিত হয় যা গোটা জীবন জুড়ে তারা লড়াই করেছেন। ১৯০৭ সাল নাগাদ আঁকা পিকাসোর ছবিতে এথনোগ্রাফিক আর্টের প্রভাব দেখা যায়। ১৯০৭ সালে আঁকা পিকাসোর ছবি যেমন ‘লেস দেমোয়াজেল দ্যভিগনন’ তাঁর কিউবিজমে পা রাখার আগের ছবি। আফ্রিকীয় ভাস্কর্যের ব্যঞ্জনাময় চেহারা এবং শারীরবৃত্তিয় সারল্য পিকাসোকে মুগ্ধ করেছিল। আসলে ত্রোকাদেরোর এক এথনোগ্রাফিক মিউজিয়াম দেখার পর থেকেই পিকাসো ‘দ্যাভিগননের মেয়েরা’ আঁকার কাজ আরম্ভ করেন। পিয়েরে দেইশ অবশ্য ক্লদ লেভি-স্ত্রাউসের পুরাণ বিষয়ক লেখার আলোকে পিকাসোর কাজ পর্যালোচনা করেন। পিকাসোর প্রোটো-কিউবিজম পর্বের ছবিগুলো বাইরের ঘটনা নয় বরং প্রবল আবেগ ও প্রবৃত্তিগত প্রেষণা থেকে আঁকা (র্যাঁবোর মতই) যা প্রত্ন-পৌরাণিক চেতনার সীমারেখায় এসে দাঁড়ায় বলে পিয়েরে মনে করতেন।
পশ্চিমা শিল্পী এবং শিল্প সংগ্রাহকরা মিশরীয় চিত্রভাষার সরল রেখা এবং আকৃতি, প্রতীক চিহ্ন, আবেগগত দেহ কাঠামো ভাংচুর এবং পুনরাবৃত্তিমূলক অলঙ্করণ নক্সা দ্বারা উদ্ভূত গতিশীল ছন্দে মুগ্ধ হন। আফ্রিকা, ওশেনিয়া বা আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান ভিজ্যুয়াল ছবি প্যারিসের আঁভা-গার্দ শিল্পীদের প্রভাবিত করেছিল।
গার্ল উইথ আ ম্যান্ডোলিন (অয়েল অন ক্যানভাস, ১৯১০), পাবলো পিকাসো ইতোমধ্যে পল গগ্যাঁর কিছু কাজের মরণোত্তর রেট্রোস্পেক্টিভ প্রদর্শনী প্যারিসের ‘সাঁল দ্যু অতোম’-এ ১৯০৩ এবং ১৯০৬-এ প্রদর্শিত হয়। ১৯০৬ থেকে পিকাসোর কাজে গগ্যাঁর ছবি, ভাস্কর্য ও লেখার প্রবল প্রভাব দেখা যায়। গগ্যাঁর কাজের বুনো শক্তি পিকাসোর ১৯০৭ সালের ‘লেস দেমোয়াজেলস’-এ তীব্রভাবে দেখা দেয়। পিকাসোর উপর গগ্যাঁর কাজের প্রভাব বিষয়ে শিল্পের ইতিহাসবেত্তা জন রিচার্ডসন লিখেছেন:
‘১৯০৬ সালে গগ্যাঁর কাজের প্রদর্শনী পিকাসোকে এ শিল্পীর মন্ত্রজালে আরো বন্দি করেছিল। গগ্যাঁর কাজ ছিল সবচেয়ে বেপরোয়া- নৃ-তত্ত্ব, প্রতীকবাদ, বাইবেল, ক্ল্যাসিকাল পুরাণ এবং নানা কিছু থেকে নিয়ে তাঁর কাজ ছিল এক অদ্ভুত সংমিশ্রণ যা ছিল একইসাথে সমকালীন এবং চিরন্তন। ১৯০৫-০৭ সাল নাগাদ পিকাসো গগ্যাঁর সাথে এক তীব্র আত্মীয়তা বোধ করেন যিনি কিনা নিজেকে তাঁর পেরুদেশীয় মাতামহীর কাছ থেকে পাওয়া স্প্যানিশ জিনের জন্য গর্ব বোধ করতেন। গগ্যাঁর ভাস্কর্য ওভিরি (যার অর্থ ‘বন্য’) জীবন ও মৃত্যুর তাহিতীয় দেবীর এক করাল লৈঙ্গিক প্রতিনিধিত্ব যা গগ্যাঁর কবরের জন্য করা হয়েছিল। ১৯০৬-এ ‘সাঁল দ্যু অতোমে’র প্রদর্শনীতে ‘ওভিরি’ দেখাটা পিকাসোকে ভাস্কর্য এবং সিরামিকসের কাজে আগ্রহী করে, উডকাট তাঁকে ছাপচিত্রের প্রতি আবেগী করেছিল আর এসবকিছুরই শিখর স্পর্শিত হয় পিকাসোর লেস দেমোয়াজেলস দ্যভিগননে।’
১৯১০ সালে ‘সাঁল দে আঁদিপদোঁস’-এ প্রতিষ্ঠান বিরোধী প্রোটো-কিউবিস্ট শিল্পীদের একটি প্রদর্শনী দেখে কবি, অঙ্গসজ্জাকর এবং ড্রাফটসম্যান গেলেট বার্জেস কৌতুকের স্বরে বলেন, ‘ক্যানভাসগুলোর ঔদ্ধত্য এবং কুশ্রীতার যেন কোনো শেষ নেই। গোল, গোল যত আপেল আর হলদে, হলদে যত কমলার স্টিল-লাইফ স্কেচ, বর্গাকৃতি টেবিল, ক্যাটকেটে সবুজ আর উগ্র বেগুনি, অসুস্থ করে দেওয়া লাল আর ভয়ে কাঁপুনি ধরানো নীল রঙের ছড়াছড়ি।’
মাতিসের ‘নীল নগ্নিকা (স্যুভেনির দ্যু বিস্কারা) দেখে ভোশ্চেল লিখেছিলেন : ‘স্বীকার করি আমি কিছুই বুঝিনি। এক কুশ্রী, নগ্ন নারী একটি তাল গাছের নিচে ঘাসের উপর নীল আভায় শুয়ে আছে...এমন এক বিমূর্ততার দিকে এ ছবির শৈল্পিক প্রভাব যাত্রা করেছে যা আমি একেবারেই বুঝিনি।’

কিউবিজম
ঠিক কখন কিউবিজম তার পথ চলা আরম্ভ করেছিল? গারট্রুড স্টেইনের মতে ১৯০৯ সালে আঁকা পিকাসোর ‘হোর্তা দ্যু হেব্রো’ ছবিটিই কিউবিজমের ইতিহাসে প্রথম ছবি। ১৯১০ সাল নাগাদ ‘প্রারম্ভিক কিউবিজম’ পর্বের কিছু ছবি যেমন পিকাসোর ‘গার্ল উইথ আ ম্যান্ডোলিন’, ব্র্যাকের ‘ভায়োলিন এ্যান্ড ক্যান্ডলস্টিক’ বা মেতজিঙ্গারের ‘ন্যু আ লা শেমিনি’ প্রভৃতি আঁকা হয়।
কিউবিজম সম্পর্কে বিশদ আলোচনা না হয় আর একদিন!

.................................................................

ঈদ সংখ্যার সূচিপত্র দেখতে ক্লিক করুন :

বাংলা ট্রিবিউন ঈদ সংখ্যা ২০১৬

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরও ১৩ সীমান্তরক্ষী
ভাসানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: ঝরে গেলো আরেকটি প্রাণ
ভাসানটেকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: ঝরে গেলো আরেকটি প্রাণ
আজকের আবহাওয়া: ঢাকাসহ ৩ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
আজকের আবহাওয়া: ঢাকাসহ ৩ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী