X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

কবিতাগুচ্ছ

.
২৯ জুন ২০১৬, ১৬:০২আপডেট : ০২ জুলাই ২০১৬, ১৪:৪৮

কবিতাগুচ্ছ বর্ণানুক্রমে যাদের কবিতা প্রকাশ করা হলো : অদিতি বসুরায়, অরিত্র সান্যাল, অরুণাভ রাহারায়, অশোক দেব, আমিনুল ইসলাম, কবির হুমায়ূন, গিরীশ গৈরিক, তারেক রেজা, বীরেন মুখার্জী, মাহমুদ টোকন, মোস্তফা তারিকুল আহসান, রুদ্র আরিফ, শিহাব শাহরিয়ার, সজল আহমেদ, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল, সেবন্তী ঘোষ।

 

অদিতি বসুরায়

গোপন, তোমাকে

কী লিখবো, গোপন?


নাকি অভিমান করে পুরনো পুকুরে
রোজ রোজ মরে যাব?

 

কী দেবে বলো তুমি?
-ধনুকে নিশানা নেই, রাজপথে জোকার নেই
শুনশান বইমেলা।
কী আছে তোমাদের?

 

আমি বরাবর দেবতার প্রিয় বন্ধু।
আমাকে প্রতিদিন ফসল ফলানোর কাজে
ব্যর্থ হতে হয়।

 

কী আছে গোপন?
যে সানাই বেজেছিল- পুড়ে গেছে
বেনারসী নষ্ট সেও বহুকাল।
দেবই বা কী?

 

দেবতার ঘর থেকে সামান্য শরীর
আনতে পেরেছিলাম।

 

নেবে?

 


অরিত্র সান্যাল

মূল শব্দের গায়ে লেগে থাকা মাটি

সৈকতে একা মানুষ গিয়ে জুটলে সমুদ্রের বর্গমূল হয়ত বেড়ে যায়।
এ ছাড়া কারা আর দেখতে পেল মূল শব্দের গায়ে লেগে থাকা মাটির আঁচ,
সর্বদা যার অনেক নিচে সবুজ পানা?
তার যে ছায়া পড়েছে সম্পূর্ণ অন্ধকারে?
আমার তোমাকে দেখে বরাবর মনে হয়–
অন্ধকার বিশ্লেষণ করলেই পাওয়া যাবে অনেক মিছিলে হাঁটা মানুষের ছায়া।
যেন আকাশে ভাসছে একটা মৃত পচাগলা পাখি।
ঘুড়ি ভাসছে এত অলস যেন অন্তরীক্ষ। তেমন রুগ্ন রোদ আজ সকালে।
যে রোগ আবিষ্কৃত হয়নি সেই রোগে মারা যায় একা এলানো এক মানুষ।
এমনভাবে এলানো যেন অন্তরীক্ষ। এমন হাল্কা যেন বিমান নামের কেউ।
যেন ভাসছে আর ভাসতে ভাসতে গায়ে উঠে আসছে বিষণ্ন আঁশটে এক গন্ধ,
ভেসে থাকার।
মাল্লাপাড়ার ডাক আসছে।
সবুজ একটা রৌদ্রে সে সব জমে থাকা ছায়া পড়ছিল অনেক অনেক গভীরে।

স্নান করার যৌনতা বোঝে আর কোন প্রাণী?

 

অরুণাভ রাহারায়

 

পর্দা

পর্দা টেনেছ যদি আলো আসে ঘরে
বাবার কবিতা পড়ি, প্রেতলোকে জাগি
ঘুম ফুঁড়ে উঠে আসি গান্ধিনগরে

কবিতা রচনা করি ভোররাতে তারা
ডুবে গেলে পর দেখি সূর্যের বিবাগী
মেঘ ভেঙে নেমে যায়। কীসের ইশারা?

 


অশোক দেব

 

সাপ

এই মনোহর সাপ
তাহাকে আপন জানি।

 

গৃহপুষ্পঘ্রাণ তাকে
টেনে আনে বারবার।
শুয়ে থাকে, ব্রীড়া করে
পুরাতন চক্ষু মেলে
পৃথিবীকে শীতকাল শেখায়

 

মহাপ্রবেশ

এখানে বসে আছি, পুরনো শ্মশান ভেঙে
কে যেন গড়েছে বাতাস। তারই পরিচয় নিয়ে
উড়ে এল দক্ষিণ দিক। আমি তার দিকে
তাকিয়ে থাকি, চোখ দুটি জানালা হয়ে যায়।
সেখানে সহস্র খরগোশ নিয়ে একদা বসে থাকত
রূপসী একজন। তার আলেয়ার নাম অতীত।
তার কাছে রয়ে গেছে আমার চকমকি
লাইটারের আলজিভ।

বসে আছি। কে যেন নিহতের নাম ধরে ডাকে,
এখানে পুরনো শ্মশানে, কে যেন বিদেহীর
ভাষায় নদী চালায়। ডুমুরের গাছ থেকে নেমে
আসে ভাষাহীন পাতা। দোহন করে নিয়ে যায়
যতটা জ্যোৎস্না পড়ে ছিল।
আমি তার দিকে তাকিয়ে থাকি
চোখ দুটি জানালা হয়ে যায়,
চোখের সামনে দিয়ে
হেঁটে চলে যায় প্রয়াত পিতার চটি

 

নীরবতা

তুমি এক ভিনদেশি খরগোশ।

বর্ষার স্নায়ুদোষ দেখতে এসেছ।
এনেছ জীবন্ত তুলতুল। এখানে আশু খরাপ্রদেশে, শ্রাবণপূর্ণিমায়...
চাঁদ কি? না তো, এ যে ব্রহ্মবেশ্যার ক্লিটোরিস হে
লোভ করে
তোমার গর্হিত তুলতুলে।

এদিকে কার্তুজ শেষ করে বসে আছে
মেজাজি ফণীমনসা।
ঘাসের আদলে যাদের ভিজে থাকতে
দেখছ
তারা আসলে অনন্ত জোছনার মেদ।
অনেক কাল সহ্য করেছি সখা,
এবার শিখে ফেলেছি ধনুর্বিদ্যা।

তাক করে আছি, তোমার চঞ্চলতা
ভাল লাগছে।
চুপ করে আছি ...

 


আমিনুল ইসলাম


দুঃসময়ের ডানা

পুরোনো বাগান ঘেঁষে মউ মউ করছে সুদখোর দুপুুরের রোদ আর
তার ছোঁয়া লেগে ফারাক্কা-প্রযোজিত চৈতী-পদ্মা ডালে বাঁধা ছায়া
এসব দেখেশুনে এক সবুজ তাড়নায় তোমার কাছে এসেছি;
আমি জানি- এই অজগর সময়ে তুমি কোনো ওয়েলফেয়ার স্টেট নও
তবু শ্যামল-উঠোনের ঐতিহ্যসূত্রে প্রত্যাশা এই যে-
বোশেখি বাগানের এক বিকেল ছায়া বাড়িয়ে কাছে নেবে তুমি;

 

আমার চেতনায় স্টেথোস্কোপ লাগিয়ে দেখো- হাঙরের অনিদ্রার মতো
সময়ের অভিশাপ জেগে আছে সারাক্ষণ- ছুটো..ছুটো..ছুটো..
আমি বসে থাকতে গেলে ডানাগুলো ভাঁজ হতে চায় না;
তো শুয়ে থেকেই কাটিয়ে দাও না ভাই!
শুয়ে থাকতে গেলেও যে ভূমিকম্পের দুলুনি লাগে পিঠে!
তো বুঝতেই পারো- এই ঝুলন্ত নিয়তি নিয়েই তোমার কাছে এসেছি

 

একবার আন্তঃমহাদেশীয় ফ্লাইটের মতো রিফুয়েলিং করে নিতে চাই।

 



কবির হুমায়ূন

ও রাধিকা ও পাওলি

আবার শরীর জলের শরীর
জলেই পোড়ে জলেই নেভে
ও রাধিকা ও পাওলি...
সাঁতার শেষে মেঘের বাড়ি
রোদ দেখিতো পাতলো আড়ি
পাহাড় চূড়ায় স্বপ্ন রেখা
বৃষ্টি নামে ধিনতানাধুন
জল পুড়েছে জল পুড়েছে
হৃদয় ভাঙার খুন...
আবার শরীর নুনের শরীর
নুনেই মেশে নুনেই ভেসে
গঙ্গা-সাগর যাচ্ছে রেখে
ও রাধিকা ও পাওলি...

 


গিরীশ গৈরিক

মা সিরিজ-৬২

মা মৃত্যুব্যাধিতে আক্রান্ত
তাই সবসময় জীবিতদের গল্প বলেন
তিনি যখন বৌ থেকে বউ হয়ে গেলেন
তখন তাঁর শ্বশুড় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে বল্লেন-
বৌমা- বলতো তোমার মৃত্যু কীভাবে হবে?
মা বল্লেন- আপনার হাতে, আপনার অভিধানেই আমার মৃত্যু
সেই থেকে আমার ঠাকুরদা- হরিচরণ
তাঁর লেখা অভিধানে সেই যে ডুব দিলেন
আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেল না
আমি অভিধানের সমস্ত পৃষ্ঠার রক্তকালি তন্নতন্ন করে খুঁজেছি
তবুও তাঁর দেখা পাইনি
বাংলা একাডেমি থেকে পশ্চিমবাংলা একাদেমীর প্রান্তরে খুঁজেছি
তবুও তাঁর দেখা মেলেনি
অবশেষে আমি তাঁকে খুজে পাই লালন সাঁইজির বারামখানায়।

 

তারেক রেজা

প্যাচাল

মরতে হলে মর্
পায়ের নিচে
ক্রস ফায়ার
বন্দুকযুদ্ধ
লিফট এবং ঘর
এসব নিয়ে তর্ক মিছে
দুর্ঘটনা- টিউব টায়ার
জ্বলুক পুড়ুক সবশুদ্ধ
পুরোহিত বা ধর্মগুরু
মরতে হবে সবার
একটা জীবন
ভগবান গৌতমবুদ্ধ
রক্ত কিসের
রক্ত জবার
কেবল মানুষ জানে
এন্টিনা ও ডিসের
অবাক নিয়মকানুন
ফাটুক মাথা কাটুক উরু
যে যেভাবে টানে
সেইভাবে দাও মাথা
মিলবে চাল-চুলো-নুন
শুধু কথা- টকশো প্যাচাল
মুখে লাগাও তালা
হাতে বাঁধো দড়ি
ঠ্যাঙ চলে না আঙুল নারিস
শান্তিতে থাক্ কিসের ক্যাচাল
শুনছি ওসব ঢের
একই কথা বাঁচি-মরি
মিডিয়াও পারে
বলতে পারিস
সাংবাদিকের
কয়টি মাথা ঘাড়ে


বীরেন মুখার্জী

শূন্যতায় ডানা মেলে

দেহের আশ্রয় থেকে উড়ে যায়

বাতাসের শব,
তাকে বলি: যাও-

 

শূন্যতায় ডানা মেলে-বেদনা ওড়াও;

 

তবু, মায়া যেন তার পাহাড় সমান
ফেরে দিগভ্রমে,
ফের বলি: আসো-

 

যুগপৎ নির্বাণের বসতি সাজাও!

 

সকল অন্ধকার প্রত্যুষ

মাহমুদ টোকন

সমস্ত শোকের কাছে মাথা নত করে আছে গান
সকল অন্ধকার দাঁতের ঝিলিকে প্রজ্ঞাপন।

 

সমস্ত ধানের কাছে গচ্ছিত পোকার ইতিহাস
সমস্ত বিভ্রান্তি এসে পাহাড়ের সানুদেশে গাছ।
সমস্ত শান্তির বীমা শাণ দিচ্ছে যুদ্ধাস্ত্র, হিংসার বেলুন
সমস্ত জোঁকের রক্ত শুষে নিয়ে ভ্রান্ত হলো নুন।
সমস্ত অধর্মের কাছে- ধর্মের দীক্ষাপত্র, জ্ঞান
সমস্ত বৃক্ষের মূল ভুলে গেছে ধৈর্য্যরে নির্বাণ
সমস্ত পাতার আলোক বিকিরীত প্যারাসাইট রঙ
সমস্ত পদাবলী বিভ্রান্ত মুসকিল আসান।
সমস্ত শৈশব কাঁধে যৌবনের উদ্ধ্যত পৌরুষ
সমস্ত নারীহৃদয় আচ্ছাদিত বিমূর্তমায়া
সমস্ত রাস্তার বাঁক দিখণ্ডিত ভ্রমে বিস্ময়ে
সকল দরজা বন্ধ, খুলছে না রহস্য আবছায়া
সমস্ত প্রণয়-বচসা আকীর্ণ মুদ্রায় উজ্জ্বল
সমস্ত হাতের মুঠো খুলে দিলে শরীরতত্ত্ব জল
সমস্ত সুতোরফুল ভেসে যায় মাকুরক্তে রাত
সমস্ত অপেক্ষারা দাঁড়ায়নি, ভুলেছে প্রভাত।
সমস্ত বিচ্ছেদ কাধে হেঁটে যায় দেশান্তর মানুষ
সমস্ত রাতের কাঁধে হাত রেখে, উঁকি দিচ্ছে তবুও প্রত্যুষ।

 


মোস্তফা তারিকুল আহসান

নিয়তি

আমিও স্পষ্ট করে বুঝে গেছি আমার নিয়তি কবিতাতে

 

জলমগ্ন গাছের মতো আমি তাই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি পানিতে
কবিতার স্বারের প্লাবণে
ব্যাত্যাক্ষুব্ধ মেঘেদের সারিতে আমি বন্দি হয়ে পড়ি;

 

রক্তের উত্তেজনায় শিরার সঞ্চালনে
অথবা ত্বকের গোপন উত্তেজনায় আমার বাহিত চৈতন্য
নেচে চলে নতুন মুদ্রায়-
দ্রিমি দ্রিমি তাক্ তাক্
ঘাম মুছে বয়স্ক প্রেমিক ডুবে যায় আবার কাজে
আমিও মজুরের মতো শাণ দিয়ে চলি মস্তিষ্কের সবুজ জমিনে

 

অভিমান প্রেম রাগ আনন্দ বেদনার রথ
আমাকে নিয়ে যায় বাইরের রাস্তায়
কতদূর গেলে কবিতার পেলব কুসুম?
কত রোদ জোছনার ধারাপাতে শুভ্র কত কথার শীর্ষবিন্দু?
আমি জেনেছি অস্পষ্ট আলোর সকালে চোখ মেলে-

 

এই হয়তো জীবনের অমৃতবোধন
সোনালি রঙের কাছে জীবনের সোদা উত্তাপ খোঁজার নম্র আয়োজন।


রুদ্র আরিফ

সুস্বাস্থ্য

অসংখ্য ভীড় এড়িয়ে, ওভারব্রিজের রেলিংয়ে কেউ কেউ দাঁড়িয়ে থাকে- একাই;

চোখের পাতার ভেতর কালসিটে ঘুম খেলা করে প্রহরীর মতো- নতজানু রোদে।

দূরের বিলবোর্ডে সুস্বাস্থ্যের বিজ্ঞাপন থাকে ঘুমিয়ে- প্রবাসী ভোরের ছায়ায়

 


শিহাব শাহরিয়ার

পকেটের অহংকার : ৩৩

বাতাসেরা ঘরবন্দি হলে, বন্ধ হয় তোমার দম। কেউ কেউ তখন পকেট-ভর্তি সূর্য-রোদে মেতে ওঠে। পঞ্চাশের পৌঢ়ত্ব

তোমার অহংকারে ঢেউ তোলে। আপাতত তুমি সুখের ঢোক গিলে যাচ্ছো; যাও। এখানে নদী-ভর্তি জলের কারুকাজ নেই।

জলেরা সব সময়ই লেপ্টে দেয় চোখের কাজল। আমিও ফেসবুকে আক্রান্ত হতে চাইনি, চাইনি ট্যাগের যন্ত্রণা নিয়ে বাঁচি।

সুরমার জলকে একদিন বলেছিলাম, তোমার তীরের বাতাসে আমি ধনী হতে চাই। আমার অহংকারগুলো ছাদের সমান;

ছাদের বাতাসেও পরীদের পিঠ থাকে। চলো পিঠের প্রকারভেদ করি। আর কান-ভর্তি নদী-বাতাস নিয়ে বিমানের ককশিটে উঠি।


সজল আহমেদ

ফসিল

এইভাবে ভেবে ভেবে
শহরের মানুষগুলো হয়ে যায় অপরিচিত
অবশেষে হয়ে যায় একা;
একাকীত্বের লাটিমঘূর্ণি
ফিরে আসে শাড়ির আঁচল থেকে
চোখের জলজ মমতা থেকে
ঘাসহীন ফড়িং তখনও পাখনাহীন
নিয়ন আলোর পাললিক সুতো
বেঁধে ফেলে অর্ধনগ্ন হাত
বোধহীন ফসিল তখনও
নাচের মুদ্রায় হয়ে উঠেছে
পরিচিত দোকানের সস্তা পাউরুটি।
শিশুদৌড় বালিভরা মাঠে
নারীকে আর কত গভীর করবে!
শেষপাতে এবার একটু নোনা জল
আগাছার মতো বেড়ে উঠুক।


সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল

নিস্বর্গ

বৃক্ষমা, তোমার বা-স্তন পান করছে নিস্বর্গ,
ডান স্তনে ছড়িয়ে আছে আশ্চার্য আভা, মাঝখানে ছিটমহল।
মাতৃভূমি যেনো মিনো বা সোরডটেলের মতো জন্ম দেয় নদী, নিস্বর্গ।
ভূবনে কোথাও নেই পিতৃভূমির তীর্থমন্ত্র!
তোমার জন্মকেন্দ্র হোক কবির তীর্থক্ষেত্র।

 

যীশুর মতো কি প্রকৃতির নিস্বর্গও পিতৃহীন সন্তান?


তাহলে পৃথিবীটা মিথ্যে

ফুলের সুবাস এবং সৌন্দর্য মিথ্যে।

মিথ্যে জোছনাবৃষ্টি।
জগতের যাবতীর সম্পর্ক মিথ্যে।
আমাদের সন্তানতুল্য লেখালেখি মিথ্যে। মা, মানবতা মিথ্যে।
শুধু ১৫ অক্টোবর সত্যি?

 

সেবন্তী ঘোষ

ওল্ড সিমেট্রি, দার্জিলিং

ওই আঠারশো সাতষট্রি, দুটি কাচের মতো ডানা মেলে তিরতিরে হাওয়ায় মাথা
দুলিয়েছো আশ্বিন, নির্মম মাস আমার- ধুনকির হুঁশ নেই, এমন রোদ ঝিমিয়ে নামছে
কর্কশ ঘাস গুচ্ছের কষায় গন্ধে- দু-চারটে পিঁপড়ে ঘাসফড়িং ঠেলে বুকে ভরে উঠিয়ে
নিচ্ছো শ্বাস, সবে দু-দিনের জীবন বই তো নয়!
পাথর ফাটিয়ে তোমার ফ্যাকাশে গোলাপ ত্বক হাসছে, যেভাবে একদিন বছর বাইশ,
রোজলিন লয়েড, এই ফাটলের তলায় চলে গেছিলে ছুরির বিনম্র আঘাতে-



ঘুমোতে এসেছে এখানে চাঁদের আলো, নির্লজ্জ, ঘাড়ত্যাড়া- নির্ঘুম পরীরা সব উঠে
বসেছে, স্টিলেটো আর ভিক্টোরিয়ান ঘাঘরা ছাড়িয়ে কচি পায়ের গোছে শ্বেতী হয়েছে
ভেবে চোখ বুজে ফেলছে ঘোড়াওয়ালা- হুকোবরদার-
পরোয়া নেই ওদের- কান্ট্রি চিজের মতো তুলতুলে জঙ্ঘা ঝলসে যাচ্ছে হাসির
হুল্লোড়ে- ভার্জিন কুইন মেরি- বেলের আওয়াজ অস্পষ্ট থেকে ক্রমে ঘোড়ার খুরের
মতো দৃঢ় হয়ে উঠেছে-


থোকা থোকা ফুল পড়েছিল, তাদের প্র-মাতামহীদের মতো পুষ্ট, শীতে উষ্ণ
ফুলের গুচ্ছের ওপর পায়ের ছায়া ফেলে যাচ্ছিল এমন সন্তর্পণে, মনে হল, নিশ্বাস
ছাড়ছে যেন মৃত ফুল,
চেককাটা স্কার্ট আর হাইল্যান্ডার, বিউগলের একঘেয়ে সুরে মুড়ে রাখছিল মেঘের
কম্বলে মোড়া নেটিভ কুইন-
রেল লাইন আর ম্যালরিয়ার পেটে যাওয়া ভাগ্যান্বেষীর ভীড়ে মার্বেল স্ল্যাবের যোগান
দেখতে দেখতে ডুলি নামছিল কৌতূহলী দেশী রমণীদের-
পিছনে পিছনে বাবু বাঙালি
.............................................................

ঈদ সংখ্যার সূচিপত্র দেখতে ক্লিক করুন :

বাংলা ট্রিবিউন ঈদ সংখ্যা ২০১৬

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
উপজেলা নির্বাচন: জেলা-উপজেলায় আ.লীগের সম্মেলন বন্ধ
উপজেলা নির্বাচন: জেলা-উপজেলায় আ.লীগের সম্মেলন বন্ধ
মিয়ানমার-থাই সীমান্তে আবারও বিদ্রোহীদের হামলা, থ্যাইল্যান্ডে পালাচ্ছে মানুষ
মিয়ানমার-থাই সীমান্তে আবারও বিদ্রোহীদের হামলা, থ্যাইল্যান্ডে পালাচ্ছে মানুষ
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও
ভুয়া অবিবাহিত সনদের মেয়াদ বাড়াতে গিয়ে ধরা পড়লেন এক ব্যক্তি
ভুয়া অবিবাহিত সনদের মেয়াদ বাড়াতে গিয়ে ধরা পড়লেন এক ব্যক্তি
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া