এই লেখাটার শেষে
আমাদের বাড়ির হরিণ উনবিংশ শতক থেকে ডান দিকে তাকিয়ে আছে।
সেদিক ভেদ করে প্রান্তরেখা-টানটান বেড়ে গিয়েছে অন্তঃপুরে।
এখন দু’মাইল ঊষরতার পর নিজের সঙ্গে দেখা হয়।
মাঝে মাঝে কামনা উথলে বরফ দেখা যায় জঙ্গলে
ওখানে মানুষ হাঁটে এক দুটো–
শব্দ ভাঙছে তার নুড়ি ও পাথর
এসবের যদি কোনও মানে থাকে ঈশাণী
হরিণের গায়ে আমার স্বাদ পাবে
এই লেখাটার শেষে দু’টুকরো পাথর খুঁজে পাবে
উচ্ছিষ্ট সময়ের লেখা
ঘর আঁকা শেষ হতে না হতেই
উঁকি দিয়ে গেল একটা মিলনমুহূর্তের আকাশ
যেন সারস দিয়ে পরিষ্কার করা আছে।
মনে পড়ল পাখি তার সমভূমি শুধু শূন্য দিয়ে বানায়।
আমি চিনতে পারি ঘুমের অবতল
সারারাত বইয়ের মধ্যিখানে মুখ গুঁজে
এমনভাবে ঝুলে আছি খাদে, গল্পের ধার ধরে
যেন পাতায় পাতায় হরফের ঘর ছিল– আমি হারিয়ে ফেলেছি।
চারপাশে
সময়ের উচ্ছিষ্ট
কাদা
অনেক নিচে
পাইন রডোড্রেনডন শাল ইত্যাদি যতিচিহ্নের বন
একটি নরম ধারণা
শুধু তাই-ই কঠিন– যার কোনও মানে নেই।
যেন এই ধারণাটি নরম নয়। যেন মানে হল হাওয়া ভরা এক পুর
খোলের ভেতর লুকিয়ে থাকা মাংস খুঁচিয়ে টেনে নেওয়া শামুকের প্রাণ
এই মানচিত্রের মধ্যে একা একা বাইকে চড়ে এগিয়ে
যাওয়া– যেন তাতে আবেগ নেই।
স্মৃতি নেই।
তৃষ্ণা নেই, ঘোড়াটির।
খর রোদ নেই টুপির ওপর।
যেন মুখে নেই ঢুলু ঢুলু লম্বা গোঁফ
যেন জীবন কঠিন নয়
যেন ভেঙে টুকরোগুলো ছুঁড়লে
তাড়ানো যাবে না নেকড়ের পাল
প্রচণ্ড কেন্দ্র
নিবিড় উল্কার চোটে
একটি মেয়ে ভেসে উঠেছে খালে
এখন, প্রচণ্ড কেন্দ্র আছে ওইদিকে
দশ ফুট গভীর একটি কবিতা
যেখানেই আমি দাঁড়াই
স্মৃতির ভিত পাওয়া যাবে কিছুটা নিচে
দশ ফুট গভীর– চরের মাটি পোড়ানো ইট
তার ওপর ত্রিশ ফুট উদাস কোনও দানব পারত
দাঁড়িয়ে থাকতে।
তিনতলার ওপর পুরনো পায়রার ঘর–
অজস্র জানলাও যে পক্ষীকূলের একটা শ্রেণী–
সকাল বিকেল রোদ তা জানান দিয়ে যায়
ছায়া পড়ছে পায়ের তলায়– সে সময়
বাড়ির পিছন দিকে একটা ক্লান্ত রঙের দেওয়াল জেগে ওঠে
কতদিন কোনও ছায়া পড়েনি তাতে
কী যেন লুকিয়ে যাচ্ছে ঝোপে ঝাড়ে, খুঁজছি।
খুঁজতে খুঁজতে মনে হচ্ছে প্রাণীটি কোথাও আছে
শুধু তার নিয়তিটি হারিয়ে গিয়েছে
হেকিমের প্রাসাদ
মানুষ পবিত্র থাকে দোপাটি চাষ করলেই।
সাহেবের বুকে ঘর করেছিল এমন এক নরম অসুখ।
নরম এই কারণে যে
প্রতিদিন হাত ঢুকিয়ে মাটির বেদনা পাওয়া যেত
সাক্ষাৎ নামী কুমোড়ের হাতে গড়া
অসুখের ভিতরেও হয়ত অসুখ নামে দু’বেলা
দু’এক জন থাকে। বাইরে থেকে যাকে মনে হত
হেকিমের প্রাসাদ– তা হল খান সাহেবের ভগ্ন হৃদয়–
তেল ফুঁকে কে যেন লণ্ঠন জ্বালতে ভুলে গিয়েছে।
সূর্য পূর্ব দিকে ওঠে
সূর্য অস্ত যায় অপূর্ব দিকে