X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব-৬

মুহম্মদ মুহসিন
৩০ মে ২০১৭, ১১:৫৪আপডেট : ৩০ মে ২০১৭, ১২:২৬

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব-৬

সরফরাজপুুর গ্রামে বিশেষ করে দাঁড়িকর আদায়ের কর্মচারীদেরকে তিতুমীর অনুসারীদের একটি দল ক্ষিপ্ত হয়ে প্রহার করে। এই প্রতিরোধের খবর পেয়ে পুঁঁড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায় নিজে একদল সশস্ত্র জঙ্গি নিয়ে জুম্মার নামাজের সময় তিতুমীরের প্রথম প্রচারকেন্দ্র সরফরাজপুরের মসজিদটি আক্রমণ করে। এই আক্রমণে তারা তিতুমীরের দুই জন অনুসারীকে হত্যা করে এবং মসজিদটি আগুনে ভস্মীভূত করে। উল্লেখ্য যে, সরফরাজপুরের সেই মসজিদটি ছিল অনেক ঐতিহ্যবাহী। একশো বছর আগে মারাঠা সৈন্যদল এটিকে ধংস করেছিল। তিতুমীর শন ও কাঠ দিয়ে মসজিদটি পুনঃনির্মাণ করেছিলেন এবং সেটি প্রাথমিকভাবে তাঁর প্রচার কেন্দ্ররূপে ব্যবহার করেছিলেন। এই হত্যার বিরুদ্ধেও তিতুমীরের অনুসারীরা মামলা করে কোনো প্রতিকার লাভে ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থতা তিতুমীরকে অভীষ্ট শক্তি অর্জনের আগেই জমিদার ও ইংরেজ বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামে নেমে পড়তে বাধ্য করে। তিনি ও তাঁর অনুসারীরা সিদ্ধান্ত নিলেন নিজ শক্তিতে এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে। উল্লেখ্য যে, ইংরেজ বিরোধী সংগ্রামে অভীষ্ট শক্তি অর্জনের আগেই দেশিয় জমিদারদের বিরুদ্ধে এভাবে সম্মুখ সমরে নেমে পড়ায় মূলত তিতুমীরের সংগ্রামটি ট্রাজিক পরিণতিতে সমাপ্ত হয়।


সরফরাজপুরের মসজিদ তথা তিতুমীরের প্রচারকেন্দ্র ভস্মীভূত হওয়ার পরে তিতুমীরের এক অনুসারী নারিকেলবোড়িয়া গ্রামের মুঈজ উদ্দীন তাঁর বাসস্থানে তিতুমীরকে পুনরায় প্রচারকেন্দ্রে বা তাঁর কার্যক্রমের সদরদপ্তর স্থাপনের আমন্ত্রণ জানান। ১৮৩১ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত এখানে তিতুমীরের অনুসারীরা জমায়েত হতে থাকে। এখানে একটি বড় আকারের বাঁশের কেল্লা তৈরি হয়। কৃষ্ণদেব রায়ও বসে ছিল না। সে-ও তিতুমীরের বাহিনির বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য শক্তিশালী বাহিনি গঠন করতে থাকে। কলিকাতার গোমস্তা লাটু বাবু তাকে দুইশত হাবসি যোদ্ধা প্রেরণ করে। কিন্তু সেই হাবসি দল যথাস্থানে পৌঁছার আগেই তিতুমীরের বাহিনি জমিদারদের বিরুদ্ধে আক্রমণে নেমে পড়ে। ইতোমধ্যে ১৮৩০ সালে সৈয়দ আহমদ বেরেলভি মুসলিম নিপীড়ক রাজা রণজিৎ সিং এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে পাঞ্জাবের পেশোয়ার দখলের সাফল্য অর্জন করেছিলেন। গুরুর সেই সেই সাফল্যের কাহিনিও হয়তো তিতুমীরকে উৎসাহী ও সাহসী করে তুলেছিল এই আক্রমন পরিচালনায়।
১৮৩১ সালের ৬ নভেম্বর সকাল বেলা তিতুমীরের বাহিনি কৃষ্ণদেব রায়ের পুঁড়া গ্রামে আক্রমণ পরিচালনা করে। কৃষ্ণদেব রায় কর্তৃক মসজিদ পোড়ানোর প্রতিশোধ হিসেবে তার বাহিনিও প্রথম আক্রমণ করে পুঁড়া বাজারের একটি মন্দিরে। বাজারে একটি গরু জবাই করে সেই রক্ত তারা মন্দিরের দেয়ালে লেপন করে। এ আক্রমণে তারা দুজন ব্যক্তিকে প্রহার করে কিন্তু কাউকে হত্যা করে না। এ আক্রমণে তারা সকল রকম লুটতরাজ থেকেও বিরত থাকে।
পরের দিন ৭ই নভেম্বর তিতুমীরের বাহিনি লাউঘাটি আক্রমণ করে। লাউঘাটিতে তিতুমীরের বাহিনি ব্যাপক প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। প্রতিরোধ গড়ে তোলে পুঁড়ার জমিদার কৃষ্ণদেব রায়, ২০০ হাবসি যোদ্ধাসহ সরফরাজপুরের জমিদার কালিপ্রসন্ন মুখোপ্যাধ্যায়ের অনুজ দেবনাথ এবং মুল্লাহাটির নীলকুঠির ম্যানেজার মি. ডেভিস। দিনব্যাপী যুদ্ধ শেষে তিতুমীরের দল এই সম্মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে জয় লাভ করে। যুদ্ধে দেবনাথ নিহত হয়। জয়লাভের পর তিতুমীর ঐ এলাকায় ইংরেজ রাজত্বের অবসান ঘোষণা করে এবং নিজেকে উক্ত অঞ্চলের প্রশাসক ঘোষণা করে। এমনটাই হয়তো সৈয়দ আহমদ বেরেলভির নির্দেশনা ছিল।
এরপরে নীল ফ্যাক্টরির মালিক বা ম্যানেজার মি. পিরন ও মি. স্টর্মের আবেদনের ভিত্তিতে কলিকাতা সাইটের কমিশনার মি. বারওয়েল বারাসাতের যুগ্ম ম্যাজিস্ট্রেট মি. আলেকজান্ডারকে তিতুমীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। মি. আলেকজান্ডার বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত ১২৫ জনের একটি পুলিশ দল নিয়ে নারিকেলবোড়িয়া পৌঁছান। তিতুমীরের দলে ৫০০ থেকে ৬০০ যোদ্ধা গোলাম মাসুমের নেতৃত্বে এই ১২৫ জনের পুলিশ বাহিনির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ১০ জন সিপাহী ৩ জন বরকান্দাজ ও ১ জন জমাদারের মৃত দেহ ফেলে মি. আলেকজান্ডার কোনমতে পালিয়ে বাঁচেন। তিতুমীরের দলের পরম শত্রু, তিতুমীরের অনুসারীদের ওপর অত্যাচারে জমিদারদের নির্লজ্জ সহায়তাকারী বসিরহাট থানার দারোগা রামরাম চক্রবর্তীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বাশেঁর কেল্লায় তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ১৬ নভেম্বর মি. স্মিথের নেতৃত্বে ৩০০ পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষী পুনরায় তিতুমীর বাহিনির ওপর আক্রমণে এসে অবস্থা বেগতিক দেখে পশ্চাদপসরণে বাধ্য হয়। তবে এবার তাদেরকে একজন নাজির ছাড়া আর কাউকে হারাতে হয়নি।
ইতোমধ্যে তিতুমীরের ইংরেজ বিরোধী বাহিনিতে মনোহর রায় নামে একজন জমিদার যোগ দেয়ায় তিতুমীরের দলের সাহস ও মনোবল আরও বৃদ্ধি পায়। অবস্থা মারাত্মক দেখে সরকার সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নেয়। ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর মেজর স্কটের নেতৃত্বে ১১ পদাতিক ডিভিশন, ক্যাপ্টেন সাদারল্যান্ডের নেতৃত্বে ১ টি অশ্বারোহী রক্ষীদল এবং লেফটেন্যান্ট ম্যক ডোনাল্ডের নেতৃত্বে ১ টি গোলন্দাজ দল নারিকেলবেড়িয়ায় আক্রমণ করে। তাদের সাথে ছিল দমদম থেকে নেয়া ৬ পাউন্ডি কামান। তাদের এই আক্রমনে লাঠি-বল্লম-বর্শা আর ইট-বেলে সজ্জিত তিতুমীরের বাহিনি গুলির সামনে বুক পেতে দেয়ার চেয়ে বড় কোনো বীরত্ব প্রদর্শনে সমর্থ হয়নি। শেষ হয় ব্রিটিশরাজ-বিরোধী সশস্ত্র একদল গ্রাম্য মানুষের স্বপ্নের আয়োজন; কামানের গোলার মুখে বাঁশের কেল্লা বিধ্বস্ত হয়। তিতুমীরসহ ৫০ জন যোদ্ধা ঘটনাস্থলে গুলির আঘাতে মৃত্যু বরণ করেন। তাঁদের লাশ পুড়িয়ে ফেলা হয়। ২০০ জন বন্দী হয়। শেষ হয় ৬ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত নারিকেলবেড়িয়ায় তিতুমীরের ১২ দিনের বাদশাহি।
যথেষ্ট করুণভাবে শেষ হলেও সে ছিল বাদশাহির ইতিহাস। আর আজ তাঁর বংশের ৫ম অধস্তন পুরুষ মদত আলীর হাতে দেখছি না সেই বাদশাহির তেজ-জ্ঞাপক কোন অঙ্গুরীয়। তাঁর পেশানিতে দেখছি না একটি জনগোষ্টীর ভবিষ্যৎ কল্পনায় আত্ম নিবেদনের অঙ্গীকার সূচক কোন আলোকরেখা। তাঁর চেহারায় নেই উম্মতের জন্য ফিকিরের গভীর কোনো অনুধ্যানী ছাপ যা তিতুমীরের বংশ ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে থাকার কথা ছিল। অথচ তাঁরই বাড়ির আঙ্গিনায় তিতুমীরের স্মরণে স্থাপিত ফলকে উৎকীর্ণ রয়েছে এমনই আবেগ-উৎসারী শব্দমালা :
ঔপনিবেশিকতাবিরোধী নিম্ন বর্গীয় সংগ্রামের নায়ক, বিদ্রোহী কৃষক নেতা তিতুমীরের জন্মস্থান এই হায়দারপুর গ্রাম, মৌজা চাঁদপুর, থানা বাদুড়িয়া, মহাকুমা বসিরহাট, জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনা। তিতুর জন্মসন ১৭৭২ খ্রিস্টাব্দ, মতান্তরে ১৭৮২। তাঁর মৃত্যু ১৮৩১ সনে, কাছেই নারিকেলবেড়িয়ায়, রণাঙ্গনে, বাঁশের কেল্লায়।
তিতুর বংশধরেরা আজও হায়দারপুরে আছেন। কিন্তু তার চেয়েও বড় কথা, তিতুর বিদ্রোহের এবং কল্পরাজ্যের স্মৃতি এই অঞ্চলে এখনও অম্লান। ঐতিহাসিক গৌতম ভদ্র লিখেছেন :
“জোলার রাজত্ব দুদিনের, গোলায় কেল্লা ভেঙ্গে যায়, প্রবাদই হয় ‘তিতুর বাদশাহী’। তবু শেষ পর্যন্ত লাঠিয়াল তিতু আর হিদায়েতী তিতুর কার্যক্রমে ধরা পড়ে নিম্নকোটির সাধ আর সাধ্যের এক ক্ষণ, গ্রাম-সমাজ তথা রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে অন্ত্যজ এক সম্প্রদায়ের বিশ্বাসের জগৎকে প্রতিষ্ঠা করার এক মুহূর্ত।”
জেলা পরিকল্পনা কমিটি, জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসন এবং জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে শিলা স্থাপন। আগষ্ট, ২০০০

স্মৃতির ফলকে উৎকীর্ণ শব্দমালার এই আবেগ আমি তিতুমীরের বংশধর মদত আলী সাহেবের বাক্যে ও বদনে দেখিনি। তবে দুটো জিনিস আমি তাঁর মধ্যে দেখলাম। প্রথমত, এখন পর্যন্ত চলমান তিতুমীরের বংশধরদের প্রতি প্রজন্মের অধিকাংশ মানুষের, বিশেষ করে পুরুষদের, নামের তালিকা তাঁর স্মৃতিতে রক্ষিত দেখলাম। দ্বিতীয়ত, তিতুমীরকে ঘিরে এক বিশাল পুরাণ-সুলভ গালগল্পের ভাণ্ডার তার মধ্যে আমি দেখলাম। তবে এই দুই ক্ষেত্রে কোনো নির্ভরযোগ্য বইয়ের সূত্র তাঁর স্মৃতিতে নেই। আর তা তো থাকার কথাও না । পুরাণ-সুলভ গালগল্প তো আর কোনো নির্ভরযোগ্য বইয়ের বিষয় হতে পারে না।
তিতুমীরের বিষয়ে খুব বেশী বইপত্র অবশ্য রচিতও হয়নি। সম্পূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল দস্তাবেজের উপর নির্ভর করে লিখিত তিতুমীর বিষয়ক একমাত্র বই হলো ‘ব্রিটিশ ভারতীয় নথিতে তিতুমীর ও তার অনুসারীগণ’। এ বইয়ের লেখক ড. মুঈনউদ্দীন আহমদ খান। এছাড়া জানা যায় একটি পুঁথির নাম। একজন মুসলিম লেখক কতৃক রচিত এই পুথিটির নাম ‘নারিকেলবাড়ীর জঙ্গ’। ৩৮ পৃষ্ঠার এই পুঁথিটি ১৮৫৩-৫৪ সালে কোলকাতা থেকে প্রকাশিত হয়েছিল। তিতুমীরের উপর গবেষণা ধারায় প্রণীত প্রথম বই হলো বিহারীলাল সরকারের লিখিত জীবন চরিত ‘তিতুমীর’। অবশ্য গ্রন্থটিতে তিতুমীর বিরোধী ব্রিটিশ রিপোর্ট ও হিন্দু জমিদারদের চিঠিপত্র কাজে লাগিয়ে তিতুমীরকে এ বইয়ে উচ্ছৃঙ্খল ও সাম্প্রদায়িক রূপে প্রতিপাদনের প্রয়াস রয়েছে। মুসলমানদের লিখিত বহুলপঠিত বইটি হলো আব্দুল গফুর সিদ্দিকীর ‘শহীদ তিতুমীর’। ১৩৬৮ বঙ্গাব্দে গ্রন্থটি করাচিস্থ বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে করাচি জাতীয় পুনর্গঠন সংস্থা প্রন্থটির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮৫৫ সালে জাফর আলী নকভী কর্তৃক প্রণীত ‘তারিখ-ই আহমদী’তে তিতুমীরের প্রথম জীবন সম্পর্কে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্যাদি সংকলিত আছে।
মদত আলী খান তিতুমীরের বিষয়ে যে সকল কথাবার্তা বললেন তাতে এসবের কোনো একটি বইয়ের নাম তিনি জানেন বলে একবারও মনে হলো না। তবে তিতুমীরের উপর ফারসিতে লিখিত একটি বইয়ের কথা তিনি বললেন যে বইয়ের নাম আমরা এযাবৎ অন্য কোথাও শুনিনি। মদত আলী সাহেবের প্রদত্ত তথ্যমতে উক্ত গ্রন্থের নাম ‘তোহফাতুল আহবাব’ এবং এর লেখক হলেন তিতুমীরের নাতি সৈয়দ আহবাব আলী। উক্ত গ্রন্থের বরাতে নিজের স্মৃতি থেকে মদত আলী সাহেব আমাকে তিতুমীরের পরবর্তী প্রজন্মের বংশলতিকা-রূপ একটি তালিকা দিলেন। আমার মনে হয় তালিকাটি সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তালিকাটির গদ্যবর্ণনা নিম্নরূপ :
তিতুমীরের তিন ছেলের দুই জন তাঁর সাথে শহীদ হন। একমাত্র নাবালক ছেলে যিনি বেঁচে ছিলেন তাঁর নাম সৈয়দ তোরাব আলী। সৈয়দ তোরাব আলীর ছিল তিন পুত্র- সৈয়দ আহবাব আলী, সৈয়দ জামশেদ আলী ও সৈয়দ মেহেদী আলী। সৈয়দ আহবাব আলীর ছিল পাঁচ পুত্র- সৈয়দ মাহবুব আলী, সৈয়দ মতলুব আলী, সৈয়দ মোকসেদ আলী, সৈয়দ মাহফুজ আলী ও সৈয়দ মোহসেন আলী। সৈয়দ মতলুব আলীর ছিল তিন পুত্র- সৈয়দ ইবনে আলী, সৈয়দ হাতেম আলী ও সৈয়দ হাসনাইন আলী। শেষোক্ত জন পরবর্তীতে পাকিস্তানের করাচিতে অভিবাসী হন। সৈয়দ ইবনে আলীর তিন পুত্র- সৈয়দ মদত আলী, সৈয়দ মাহবুব আলী ও সৈয়দ রেজা আলী। সৈয়দ ইবনে আলীর পুত্র সৈয়দ মদত আলীই হলেন তিতুমীরের বংশধরদের পঞ্চম প্রজন্মের সেই ব্যক্তি যাঁর কাছ থেকে আমি এই সকল তথ্যাদি সংগ্রহ করছিলাম। তাঁর অপর দুই ভাই সৈয়দ মাহবুব আলী ও সৈয়দ রেজা আলী বাংলাদেশে অভিবাসী এবং খুলনা শহরের বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে জনাব রেজা আলীর সাথে দেশে ফিরে আমার একাধিকবার ফোনালাপ হয়েছে। তিনি একজন পণ্ডিত ও সজ্জন ব্যক্তি। সৈয়দ মদত আলীর পুত্র কন্যারা হলেন- সৈয়দ গোফরান আলী, সৈয়দা জেসমিন, সৈয়দা শামাবানু, সৈয়দা সামিনা, সৈয়দা নাসরিন ও সৈয়দা আজিমা বানু।
তিতুমীরের বংশধারার এই তথ্যের সমর্থনে সৈয়দ মদত আলী যে পুস্তকটির নাম বললেন সেই পুস্তকটি অর্থাৎ তোহফাতুল আহবাব গ্রন্থটি এক নজর দেখতে চাইলে তিনি সেই মুহূর্তে খুঁজে বের করা কঠিন বলে অপারগতা প্রকাশ করলেন। অবশ্য মোবাল্লেগ মদত আলী সাহেবের মাধ্যমে ছবি তুলে আমাকে পাঠানো যাবে বলে আশ্বস্ত করলেন। উক্ত গ্রন্থের বরাতে তিনি এরপর তিতুমীরে বিষয়ে যে সব মিথিকাল খোশগল্প বলতে শুরু করলেন তা শুনতে প্রাচীন ভারতীয় পুরাণের মতোই। সেসব গল্পের মধ্যে একটি ফকিরের গল্প ছিল বেশ প্রণিধানযোগ্য। (চলবে)

তিতুমীরের জন্মভিটায় প্রতি মঙ্গলবার প্রকাশিত হবে

আরো পড়তে ক্লিক করুন-

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব-৫

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী