X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব- শেষ

মুহম্মদ মুহসিন
০৬ জুন ২০১৭, ১৩:১৫আপডেট : ০৬ জুন ২০১৭, ১৪:২৩

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব- শেষ

মদত আলী সাহেব গল্পটি এভাবে শুরু করেন যে, তৎকালীন মোগল বাদশা তিতুমীরকে নিয়ে হজ্জে যাচ্ছিলেন। তাঁরা বোম্বে থেকে পানির জাহাজে উঠেছেন। জাহাজ আরব সাগরে পড়ার পরে তিতুমীর দেখলেন যে, জাহাজটি সোজা না গিয়ে অনেক পথ ঘুরে যাচ্ছে। তিতুমীর জাহাজের কাপ্তেনকে বললেন, জাহাজ সোজা চালাতে কিন্তু কাপ্তেন বললেন- ‘সোজা পথে অনেক ঝড়-তুফান ও বিপদ রয়েছে, ঐ পথে যাওয়া যাবে না’। হজ্জ শেষে মক্কা থেকে ফিরতি পথে জাহাজ আবার যখন ঘুর-পথ ধরছিল তখন তিতুমীর আবারও কাপ্তেনকে বললেন, জাহাজ সোজা চালাতে। এবার শুধু বললেন না, সোজা চালাতে কাপ্তেনকে বাধ্য করলেন। যেমনটা কাপ্তেন বলেছিলেন তেমনটাই অতি শিঘ্রই জাহাজ মহাঝড়ে পড়লো। তিতুমীর কুদরতি শক্তিতে ঝড় থামিয়ে দিলেন। ঝড় থামিয়ে দেখলেন জাহাজের সামনে সাগরের উপরে এক ন্যাংটো ফকির দাঁড়িয়ে। এই ফকিরই মূলত শয়তানি শক্তিতে ঝড় তুলেছিল। তিনি ফকিরকে জাহাজে তুলে তার দাসানুদাস বানিয়ে দেশে নিয়ে এলেন। দেশে নিয়ে এসে হায়দারপুর থেকে কাছে রাজাপুর নামক গ্রামের বাসিন্দা রূপে তাকে বসতির ব্যবস্থা করে দেন। এই ফকির পুরুষ নাকি মহিলা ছিল তা কেউ কোনদিন নির্ণয় করতে পারেনি। মদত আলী সাহেবের মতে এই ফকিরের নাম বেড়িশা ফকির। মদত আলী সাহেব উল্লেখ করেন যে, এই ফকিরের অলৌকিক শক্তিকে তিতুমীর পরবর্তীতে অনেক ভালো কাজে ব্যবহার করেন।
এই মিথের কাছাকাছি একটি গল্প দেখা যায় বিহারীলাল সরকারের তিতুমীর নামক বইয়ে। সেখানে তিনি ফকিরের নাম লিখেছেন মিসকিন শাহ। বিহারীলাল সরকার লিখেছেন যে, পুলিশের সাথে ৬ নভেম্বর ও ১৫ নভেম্বর যুদ্ধে পুলিশরা যে গুলি ছুঁড়ছিল তা মিসকিন শাহ তার অলৌকিক শক্তিতে খেয়ে ফেলছিল বলে তিতুমীরের লোকজন সেই গুলিতে কেউ হতাহত হয়নি। বিহারীলাল সরকারের বর্ণনা অনুযায়ী মেজর স্কটের অভিযানের দিনেও তিতুমীরের লোকদের অটুট বিশ্বাস ছিল যে আর্মির সব গোলা মিসকিন শাহ খেয়ে নিবে ফলে আর্মি তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু গোলার আঘাত শুরু হলে তিতুমীরের যোদ্ধারা অসহায়ভাবে দেখে যে মিসকিন শাহ তাদেরকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এতে তাদের মনোবল পুরোপুরি ভেঙ্গে যায় এবং তারা যুদ্ধ ছেড়ে গাছে উঠে পালাতে শুরু করে। কিন্তু ব্রিটিশ সৈন্যরা তাদেরকে গাছ থেকে গুলি করে ভূপাতিত করতে থাকে। মিথ দুটোর অবিশ্বাস্য অংশ এক হলেও আমার কাছে দুটো থেকে দু-রকম অর্থ অনুভূত হচ্ছে। সৈয়দ মদত আলীর বলা মিথ থেকে আমি অনুভব করছিলাম যে, ইঙ্গিতে সৈয়দ মদত আলী বলতে চাচ্ছেন বেড়িশা ফকিরের অলৌকিক শক্তি বংশানুক্রমে তিনিও ব্যবহারের মালিকানা ভোগ করছেন। অর্থাৎ তাঁর তাবিজ-কবজ যে অলৌকিকভাবে মানুষকে সুস্থ করে সে শক্তির ঐতিহাসিক উৎস ঐ বেড়িশা ফকিরের জাদুশক্তি যা আরব সাগরে ঝড় তোলার মতো কঠিন কাজেও পারঙ্গম ছিল। আর বিহারীলাল সরকার বর্ণিত মিথটি তিতুমীর বাহিনীর প্রথম দিনগুলোর অবিশ্বাস্য জয় এবং শেষ দিনের করুণ পরিণতির একটি লৌকিক ব্যাখ্যারূপে সৃষ্ট, যেখানে বিশেষ করে শেষ দিনের করুণ পরিণতির উপর মৃদু বিদ্রূপের খোঁচা রয়েছে।
বিহারীলাল বর্ণিত মিথের এই সূক্ষ্ম খোঁচার কথা সৈয়দ মদত আলী সাহেব হয়তো জানেন না। তবে তিনি বললেন, তিতুমীর বিষয়ে এর চেয়ে ভারী ও কঠিন এক সাম্প্রতিক আঘাতের কথা। আঘাতটি এসেছে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তৃক অনুমোদিত দশম শ্রেণির জন্য লিখিত ‘ইতিহাস ও পরিবেশ’ নামক বই থেকে। বইটির লেখক জনৈক বিশ্বজিৎ বাগ। প্রকাশক ‘দে বুক কনসার্ন’। বইটিতে ‘বাংলার ওয়াহাবি আন্দোলন’ (১৮২২-১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দ) শীর্ষক ৩:২ (খ) অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে: ‘তিতুর নেতৃত্বে ওয়াহাবিরা বেশ কিছু হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে ও কিছু পুরোহিতকে হত্যা করে। ওয়াহাবি বিরোধী মুসলামানরাও রেহাই পায়নি। পুঁড়াসহ নদীয়া, বনগাঁও, চব্বিশ পরগনার জমিদার ও নীলকররা আতঙ্কিত হয়ে সরকারী সহযোগিতা লাভে সচেষ্ট হয়------’।
সৈয়দ মদত আলী সাহেব এ বিষয়ে আট-দশটি ফটোকপি কাগজের একটি বান্ডিল আমাকে দেখতে দিলেন। সেখানে দেখলাম শহীদ তিতুমীর মিশনের সভাপতি জনাব রবিউল হকের নেতৃত্বে এই ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে এই পুস্তকটি বন্ধ করার বা ঐ তথ্য বাদ দেওয়ার দাবিতে একটি দরখাস্ত রয়েছে। দরখাস্তটিতে স্বাক্ষর করেছেন পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি হরপ্রসাদ সমদ্দার, রবীন্দ্রকিশোর গুহরায়, শ্যামল বল, রবিউল হক, নুরুল আমিন মণ্ডল প্রমুখ। দরখাস্তটি একই সময়ে দাখিল করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের সচিব বরাবর এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট। একই সাথে বইটির প্রকাশনা সংস্থাকেও একটি প্রতিবাদপত্র পাঠানো হয়েছে।
জনাব মদত আলীর প্রদর্শিত ফটোকপিকৃত কাগজগুলো থেকে দেখা গেল এই প্রতিবাদ শুধু শহীদ তিতুমীর মিশনের ব্যক্তিবর্গ করেছেন এমনটাই নয়, রাজনৈতিকভাবেও এর প্রতিবাদ হয়েছে। সিপিআই (এম) এর রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র ইতিহাসের এই বিকৃতির তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এ প্রসঙ্গে এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন- ‘পশ্চিম বাংলার স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাসের বিকৃতি চলছেই। শোষিত মানুষের আন্দোলনের ধর্মনিরপেক্ষ নেতা তিতুমীরকেও সাম্প্রদায়িক তকমা দেওয়া হচ্ছে। ইতিহাসের এহেন বিকৃতি সম্পর্কে মিশ্রের প্রশ্ন- এটা কি তৃণমূল-বিজেপি যৌথ উদ্যোগ?’ প্রতিবাদরূপে কোলকাতা থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের উপ- সম্পাদকীয়তে লিখিত দেখলাম : ‘পাঠ্যপুস্তকসহ সামগ্রিকভাবে ইতিহাসের বিকৃতিতে শিরোপা পাবে অবশ্যই আরএসএস-বিজেপি। এর আগের এনডিএ সরকারের আমলে তো বটেই, মোদী সরকারের সময়েও প্রাচীনকাল থেকে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত, এমন কি তার পরেও বিভিন্ন ঘটনাকে বিকৃত করে সাম্প্রদায়িক মোড়কে ঢেলে সাজাবার কাজ করছে সঙ্ঘের মদদপুষ্ট ইতিহাস লেখকরা। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব হিস্টরিকাল রিসার্চসহ বিভিন্ন ইতিহাস গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির মাথায় সঙ্ঘঘনিষ্ঠ ঐতিহাসিকদের বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতিহাসের এই ‘গৈরিকীকরণ’ এর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে গোটা দেশে ধর্মনিরপেক্ষ ইতিহাসবিদরা সোচ্চার হয়েছেন।’
প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষা সচিবের নিকট যাঁরা পত্র দাখিল করেছেন তাঁদের মধ্যে শহীদ তিতুমীর মিশনের সম্পাদক জনাব রবিউল হককে আমি পরবর্তীতে ৮ এপ্রিল ২০১৭ তারিখ বাংলাদেশ থেকে ফোন করেছিলাম তাঁদের দরখস্তের বিপরীতে সরকার কর্তৃক কী কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে তা জানার জন্য। রবিউল হক জানালেন যে, কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে এক মাস সময় নিয়েছে যা এখনো শেষ হয়নি। ফোনালাপকালে শহীদ তিতুমীর মিশনের সম্পাদক জনাব রবিউল হকের কাছ থেকে পশ্চিমবঙ্গে তিতুমীর চর্চা বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেল। জনাব রবিউল হক জানান যে, ১৮৩১ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিতুমীর ও নারিকেলবেড়িয়া বিষয়ক স্মৃতি রক্ষার্থে কোনো সরকারী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ১৯৭২ সালে প্রথম কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শান্তিময় রায় নারিকেলবেড়িয়ায় এসেছিলেন তিতুমীর ও নারিকেলবেড়িয়ার স্মৃতি রক্ষার কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে। তাঁর উদ্যোগে সরকারিভাবে একটি ফলক উৎকীর্ণ হয়েছিল যেখানে তিতুমীরকে ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামের প্রথম শহীদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি রামচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের উদ্যোগে উক্ত স্থানে তিতুমীর মিউজিয়াম স্থাপন প্রকল্প গৃহীত হলে ফলকটি আপাতত তুলে ফেলা হয়েছে যা মিউজিয়াম সম্পন্ন হলে পুনরায় পূর্বের আকৃতিতে স্থাপন করা হবে। তাঁর কাছ থেকে জানতে পারি যে, শহীদ তিতুমীর মিশন খুব সম্প্রতি ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর আগে ‘বন্ধু ঐক্য’ নামে একটি সংগঠন তিতুমীরের স্মৃতি রক্ষার্থে অনেক কার্যক্রম হাতে নিয়েছিল। উক্ত সংগঠনের উদ্যোগে রাজকুমার দাসের পরিচালনায় ‘বীর তিতুমীর’ নামে একটি ডকুমেন্টারি ফিল্ম নির্মিত হয়েছিল। ডকুমেন্টারিটি কোলকাতায় ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেয়ারে প্রদর্শিত হয়েছিল এবং পুরস্কৃত হয়েছিল। জনাব রবিউল হকের প্রদত্ত তথ্যমতে, ১৯৭২ সালে ড. শান্তিময় রায়ই প্রথম উদ্যোগ নেন স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদেরকে বীর তিতুমীর সম্পর্কে জানানোর জন্য। সেই উদ্যোগের ফলস্বরূপ ১৯৭৮ সালে সর্বপ্রথম পশ্চিমবঙ্গের চতুর্থ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে ‘নারিকেলবেড়িয়ার লড়াই’ নামে একটি নিবন্ধ সংযোজিত হয়েছিল। পরবর্তীতে আবার পাঠ্য বই থেকে সে নিবন্ধটি হারিয়ে যায়।
জনাব রবিউল হক হোয়াটসএ্যাপের মাধ্যমে জনৈক এন. হক কর্তৃক লিখিত একটি নিবন্ধ আমাকে পাঠিয়েছেন যেখানে তিতুমীরের বাবা ও মায়ের নাম লিখিত আছে। উক্ত নিবন্ধমতে তিতুমীরের বাবার নাম সৈয়দ হাসান আলী এবং মায়ের নাম আবিদ রোকাইয়া খাতুন। এ তথ্যের কোন উৎস অবশ্য নিবন্ধটিতে লিখিত হয়নি। মুঈনউদ্দীন আহমদ খান, আব্দুল গফুর সিদ্দীকী, আই আর কোলাডিনের রিপোর্ট কোথাও তিতুমীরের বাবা মায়ের নামের উল্লেখ নেই। বাংলাদেশে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বইয়ে তিতুমীর বিষয়ে ছোট একটি পরিচয় জ্ঞাপক নিবন্ধ রয়েছে তাতেও তাঁর বাবা মায়ের নাম উল্লেখ নেই। ফলে এ তথ্যটি অত্যন্ত মূল্যবান। জনাব রবিউল হক আর একটি প্রবন্ধ পাঠিয়েছেন যার লেখক ড. মুস্তাফা আব্দুল কাইউম। তাঁর প্রবন্ধের তথ্যানুযায়ী দেখা যায় তিতুমীরের বাব সৈয়দ হাসান আলী ছিলেন হযরত আলী (রা.) এর ২৯ তম অধস্তন পুরুষ। প্রবন্ধটিতে তিতুমীরের ভাইবোনদের নামও লিখিত হয়েছে। তিতুমীর ছিলেন চার ভাইবোনের মাঝে সকলের ছোট। তাঁর বড় ভাইবোনরা হলেন সৈয়দ নিহাল আলী, হামিদা খাতুন ও হাসিনা খাতুন। এই সকল তথ্যের উৎস কতটা নির্ভরযোগ্য তা আমাদের জানা নেই।
জনাব রবিউল হকের কাছ থেকে প্রসঙ্গক্রমে আরো জানলাম যে, সকালবেলা আমি মছলন্দপুর থেকে যে রাস্তায় রামচন্দ্রপুর এসেছিলাম সেটির নাম শহীদ তিতুমীর সড়ক হলেও সরকারি কাগজপত্রের বাইরে সাইনবোর্ড ইত্যাদিতে সে নাম নিশ্চিতকরণের কোনো উদ্যোগ নেই। আমাদের বরিশালের বগুড়া রোড আর কী! বগুড়া রোডটিকে বেশ কয়েক বছর আগে জীবনানন্দ সড়ক নামকরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো সড়কের পাশের দোকানগুলোর সাইনবোর্ডে সড়কটির নাম বগুড়া রোডই রয়েছে। কে পাল্টায়?
আমি রবিউল হক সাহেবের কাছে জানতে চাইলাম শহীদ তিতুমীর মিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে। তিনি জানালেন শহীদ তিতুমীর মিশনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সরকারের কাছে তাঁরা কতগুলো দাবী পেশ করেছেন। যেমন :
ক) অবিলম্বে বিশ্বজিৎ বাগ রচিত ‘ইতিহাস ও পরিবেশ’ নামক পাঠ্যবইটি বাজেয়াপ্ত করা,
খ) নারিকেলবোড়িয়া ও হায়দারপুর গ্রামকে হেরিটেজ ভিলেজের মর্যাদা দান,
গ) নারিকেলবেড়িয়াতে স্থায়ী সংগ্রহশালা অর্থাৎ মিউজিয়াম স্থাপন,
ঘ) কৃষক নেতা তিতুমীরের নামে শস্য গবেষণাগার স্থাপন ইত্যাদি।
এই সব তথ্য অবশ্য আমার নারিকেলবোড়িয়ায় ও হায়দারপুর গ্রামে ভ্রমণের দিনে অর্জিত নয়, সে কথা ইতোমধ্যেই বলেছি। হায়দারপুর গ্রামে সৈয়দ মদত আলী সাহেবের কাছ থেকে শোনা তাঁদের বংশধরগণের নাম ও তিতুমীরের আনীত বেড়িশা ফকিরের মিথই আমার সে-দিনে লব্ধ সর্বশেষ তথ্য। এটুকু জেনে সৈয়দ মদত আলী সাহেবের কাছ থেকে আমি বিদায় নেই। তিনিও আমাকে বিদায় দেয়ার জন্য তখন উদ্গ্রীব। কারণ, তখন দুপুর গড়িয়ে গেছে অথচ তার লাঞ্চ হয়নি। এছাড়া তাঁর কাছে যিনি তাবিজ নিতে এসেছিলেন তাকে গাইড হিসেবে আমার সাথে তিনি দিয়ে দিতে চাচ্ছিলেন। একজন গাইড ছাড়া বিদেশ-বিভূঁয়ের এক গ্রামের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে বাগজোলা যেতে আমি স্বাভাবিকভাবেই পথ ভুল করতে পারি। আমার পথ ব্যবস্থাপনায় তাঁর এই আন্তরিক আয়োজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় নিলাম। বিদায় নিলাম তিতুমীরের ৫ম অধস্তন পুরুষ সৈয়দ মদত আলী সাহেবের কাছ থেকে, বিদায় নিলাম হায়দারপুর গামের সেই ছায়াঢাকা পাখিডাকা বাড়ি থেকে- সোয়াদুশো বছর আগের এমন কোন দুপুরে যে-বাড়িতে পৌঁছতে পারলে দেখতে পেতাম ও শুনতে পেতাম দুরন্ত এক কিশোর তিতুমীরের ছোটাছুটি। পাঠক, একই সাথে এখানেই বিদায় নিচ্ছি আপনাদের কাছ থেকেও।

আরো পড়তে ক্লিক করুন-

তিতুমীরের জন্মভিটায় || পর্ব-৬

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শুধু চাকরির পেছনে ছুটবে না, উদ্যোক্তা হবে:  স্বাস্থ্যমন্ত্রী
শুধু চাকরির পেছনে ছুটবে না, উদ্যোক্তা হবে:  স্বাস্থ্যমন্ত্রী
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক এমডিসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বঙ্গোপসাগরে ডুবলো জাহাজ, ভাসছেন ১২ নাবিক
বঙ্গোপসাগরে ডুবলো জাহাজ, ভাসছেন ১২ নাবিক
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির
মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ ইসির
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের
সিনিয়র শিক্ষককে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি জুনিয়র শিক্ষকের