X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

পড়ার সাথে সাথে পর্যবেক্ষণের প্রকৃতিও বদলে যায় : অহ নওরোজ

.
১১ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:১২আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০১৭, ১৫:২৫

পড়ার সাথে সাথে পর্যবেক্ষণের প্রকৃতিও বদলে যায় : অহ নওরোজ অহ নওরোজ। জন্ম ১২ জুন ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুরে। বেড়ে উঠেছেন যশোরের অভয়নগরে। এখন ঢাকায় বাস। কবিতা এছাড়া জ্যোতির্বিজ্ঞান, ইতিহাস, ভ্রমণ, ধর্ম, সৃষ্টিতত্ব এবং সিনেমাসহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নিয়মিত লেখেন। কবিতার বই : নীল নৌকার নারী, রোমন্থনের সনদ।

দ্বিতীয় দশকের কয়েকজন কবির কাব্য-ভাবনা ও লেখালেখি নিয়ে বাংলা ট্রিবিউন সাহিত্যের এই আয়োজন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একই সময়ের কবি রাসেল রায়হান।

 

প্রশ্ন : খুব কমন একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি। কবিতায় আগ্রহী হলেন কীভাবে?

উত্তর : সাহিত্য বিষয়টিই যে পৃথিবীতে অবস্থান করে সেটি আমি বুঝেছি কবিতার মাধ্যমে। ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ের কবিতা পড়তে ভালো লাগত তার শব্দের কারণে। সুন্দর শব্দ পড়লে মুগ্ধ হতাম। শুরুটা সম্ভবত সেখান থেকে। তারপর ভালো শব্দ পেলে সেটার উৎপত্তি খোঁজা, অর্থ খোঁজা, নোটবইয়ে টুকে রাখা- সে চর্চাও চলত। কিন্তু পাঠ্যবইয়ের কবিদের বাইরেও যে কবিতা লেখা যায় সেটাও জানতাম না তখন। সে সময় আমার প্রতিবেশী, চিত্রশিল্পী মামুন ভাইয়ের সাথে সখ্য গড়ে বেশ অল্পসময়েই। তার কাছ থেকেই মাথায় ঢোকে, কবিতা পাঠ্য বইয়ের জিনিসই শুধু নয়, এর বাইরেই এর মূল সম্রাজ্য। তারপর থেকে পড়া, আর পড়ার সাথে সাথে পর্যবেক্ষণের প্রকৃতিও বদলে যায়। ক্রমশ গভীর হয় আবিষ্কারের নেশা। এই নেশাই আমাকে কবিতার প্রতি আগ্রহ তৈরি করেছে।

 

প্রশ্ন : কবিতায় জোর কিসের দিকে দেন? ভাষা, না বোধের প্রতি?

উত্তর : আমি দুইটির দিকেই জোর দেয়ার চেষ্টা করি। আমার কাছে মনে হয় সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি নজর দেওয়া উচিত এই ভাষা এবং বোধের দিকে। এই ভাষাকে ফর্ম বলা যেতে পারে, আর বোধকে বলা যেতে পারে ম্যাটার। এই ফর্ম এবং ম্যাটার (Form & Matter) উভয়েই শুধু কবিতার জন্য না, সাহিত্যের সকল শাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই দুয়ের অঙ্গাঅঙ্গী মিলন না ঘটলে সাহিত্য কখনো কালজয়ী প্রভাব বিস্তার করতে পারে না বলে আমি মনে করি। ফর্ম বলতে শুধু সাহিত্যের বহিরাগত প্রকাশভঙ্গী নয়- ফর্ম সাহিত্যের দেহ, যাকে অবলম্বন করে সাহিত্যের ভাববস্তু বিকাশ লাভ করে। ফর্মের ভেতর লেখকদের ব্যক্তিত্বও প্রতিবিম্বিত হয়।

ফর্মের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক হলো স্টাইল। স্টাইলের মধ্যে শুধু ভঙ্গির প্রাধান্য বা রচনার ঔজ্জ্বল্যই থাকে না, স্টাইল অনেকাংশে লেখকের আত্মার দর্পণও। আর এটি  পাঠকের আত্মাকে জাগ্রত করে নতুন বোধের রাজ্যে।

ম্যাটার হল বিষয় বা বস্তু। এই ম্যাটারের মধ্যে যেটি অনিবার্যভাবে থাকা প্রয়োজন সেটি হলো লেখকের নিজস্ব দর্শন। আমার জানা নেই, পৃথিবীর এমন কোনো মহৎ সাহিত্য রচিত হয়েছে কি না, যেখানে লেখকের নিজস্ব দর্শনের উপস্থিতি নেই।

যাদের শ্রেষ্ঠ শিল্পী বলে জানি, যেমন কালিদাস, রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়র বা গ্যেটে- তাদের মহৎ সৃষ্টির ভেতরে এই দুইটির সফল মিলন পূর্ণভাবে উদ্ভাসিত। আমার মনে হয় উভয়ের দিকেই জোর দেওয়া উচিত।

 

প্রশ্ন : কবিতা লেখার ক্ষেত্রে কতটা নিজের জগত নির্মাণ জরুরি? জরুরি হলে আপনার ক্ষেত্রে সেই পদ্ধতিটা ঠিক কেমন?

উত্তর : কবিতার লেখার ক্ষেত্রে নিজস্ব জগত নির্মাণ করা শুধু জরুরিই নয়, বরং অনিবার্য। নিজস্ব জগত তৈরি ব্যতিত কোনো কবিই সফল কবিতা রচনা করতে পেরেছেন বলে আমার জানা নেই। নিজস্ব জগত নির্মাণ তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তার মধ্যে কবির নিজস্ব দর্শন, নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, নিজস্ব উপস্থাপন শৈলী ইত্যাদির সংমিশ্রণ ঘটে।

কবিতা লিখতে যেমন প্রবল সচেতনতা দরকার, সাথে সাথে প্রবল ঘোরের মধ্যে থাকবারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এই ঘোর বিষয়টির সর্বোচ্চ পর্যায় হল একটি নিজস্ব জগত নির্মাণ। আমার মনে হয় নিজস্ব জগত নির্মাণ করার মূল পদ্ধতিই হল সকল পর্যবেক্ষণকে নিজের মতো করে বিশ্লেষণ করতে যাওয়া। তবে আমি এখনো পরিপূর্ণভাবে নিজস্ব জগত নির্মাণ করতে পারিনি।

 

প্রশ্ন : এই নিজস্বতা তৈরিতে কি আশেপাশের পরিবেশ বেশি প্রভাব ফেলে, না কি কবির পঠন-পাঠন?

উত্তর : দুইই। তবে পঠন-পাঠন উল্লেখযোগ্য।

 

প্রশ্ন : অন্য প্রসঙ্গে আসি। কবিতার ক্ষেত্রে গ্রুপিংয়েরঅভিযোগ শোনাযায়। অনেকেই না কি গ্রুপিং করেকবি হিসেবে টিকে থাকার চেষ্টা করে। এটা কি আসলে সম্ভব?

উত্তর : টিকে থাকা বলতে আমি শুধু বুঝি সময়ে টিকে থাকা। গ্রুপিং করে কিংবা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে অন্য কিছুতে টিকে থাকা গেলেও অন্তত শিল্প-সাহিত্যে সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আসলে টিকে থাকতে হলে প্রত্যেক কবি-সাহিত্যিককে নিজেকেই একেকটি প্রতিষ্ঠান হতে হয়। আর সেটা সম্ভব হয় তিনি যখন প্রাচুর্যময় হন। কিন্তু কেউ যদি নিজে প্রতিষ্ঠান না হয়ে কয়েকজন মিলে প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন কিংবা গ্রুপিং করে টিকে থাকতে চাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন, তাহলে বুঝতে হবে তারা স্বতন্ত্রভাবে শক্তিশালী নয়, যে কারণে তারা সংগঠিত হয়েছে। আর এগুলো করবে তো পাঠকরা। কবি তো তাদের পথ দেখিয়ে দেবেন, ভুল শুধরে দেবেন। তিনি সংগঠন করে বেড়াবেন, অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন, দাওয়াত দিয়ে বেড়াবেন এটা তো তাকে মানায় না।

 

প্রশ্ন : আরেকটি অভিযোগ শোনা যায়, সুযোগ পেতে নবীনরাজ্যেষ্ঠ কবিদের পেছনে ঘোরে, সম্পাদকের পেছনে ঘোরে। এই অভিযোগ কতটা সত্যি?

উত্তর : এই কথা তো সত্যই। আমাদের দেশে এটি বেশ চলে। তবে যিনি আসলেই কবি তাকে এইসব চিন্তার উপরে উঠতে হয়। তিনি যদি উঠতে না পারেন তাহলে তিনি কবি হয়ে উঠবেন কীভাবে? কবিকে হতে হয় মহান, বিশাল। তিনি পেছনে ঘোরাঘুরি করলে মহান হবেন কীভাবে? এতে জাতে ওঠা তো দূরে থাক, ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

 

প্রশ্ন : তবে পুরস্কার পেয়ে জাতে ওঠার বিষয়টিকে কীভাবে নেন?

উত্তর : পুরস্কার বিষয়টাকে আমি নিই পুরস্কার হিসেবেই। যেমন ধরুন কেউ আপনার কবিতা পড়ল, পড়ে ভালো লাগল, তখন সে স্বেচ্ছায় আপনাকে মন থেকে কিছু দিলো। পুরস্কার বলতে আমি এটাই বুঝি। তবে বর্তমানে এই বিষয়টা কেমন যেন একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। নিজের ব্যবসায়িক প্রচারণার স্বার্থে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অনেকে পুরস্কার চালু করছেন, সেটার জন্য অনেক লেখককে দেখা যায় আবার তদবির করতে। অনেকে মনে করেন কোনো না কোনোভাবে তার ঝুলিতে কিছু পুরস্কার জমা পড়লেই তিনি বড় লেখক হয়ে যাবেন। অথচ এটিকে স্রেফ একটি উপহার হিসেবেই দেখা উচিত। এর থেকে বেশি কিছু নয়। এর থেকে বেশি কিছু দেখার মানেই লেখকের মৃত্যু ঘটা। বিশ্বসাহিত্যের সেরা দুটি উপন্যাসের লেখক লিও তলস্তয়, কিংবা মার্ক টোয়েন, আন্তন চেখবের মতো গল্পকার, হেনরিক ইবসেনের মতো নাট্যকার অথবা  রবার্ট ফ্রস্ট,  এজরা পাউন্ড, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কবি/লেখক যখন নোবেল না পেয়েও মহাকালের আকাশে জ্বলজ্বল করতে থাকেন, তখন তো নিঃসন্দেহে বলাই যায় পুরস্কার দিয়ে কখনো লেখককে বিবেচনা করা যায় না। কে বড় লেখক, কে ছোট লেখক- সেটি পুরস্কার দিয়ে আসলে বিবেচনা করা যায় না।

 

প্রশ্ন : পুরস্কারে কি আদৌ ব্যবসায়িক প্রচারণা ঘটে? তেমন হলে সব বড় প্রতিষ্ঠানগুলোই কি পুরস্কার দিত না?

উত্তর : প্রচারণা ঘটে বৈকি! আর সবাই কেন পুরস্কার দিতে যাবে? সবার তো ব্যবসায়িক প্ল্যান এক নয়।

আর কোনো লেখক যদি পুরস্কারের বিনিময়ে, আই মিন পুরস্কারের অর্থমূল্যের বিনিময়ে তাদের ব্যবসায়িক প্রচারণার সঙ্গী হতে চান তার জন্য আমার বিশেষ কিছু বলার নেই।

 

প্রশ্ন : যে প্ল্যানে নিজেরও উপকার, অন্যেরও, সেই প্ল্যানই তো উৎকৃষ্ট। যা-ই হোক, বললেন, ‘কে বড় লেখক, কে ছোট লেখক- সেটি পুরস্কার দিয়ে আসলে বিবেচনা করা যায়না।’ লেখক বড়-ছোট হয়? হলে সেটা কেমন? এটা কীভাবে বিবেচনা করা যায়?

উত্তর : লেখক আসলে বড়-ছোট হয়। এই বিষয়টা আমি মানি। আমার কাছে মনে হয় যিনি লিখে এক বা একাধিক পাঠক তৈরি করতে পারেন তিনি লেখক, আর যিনি লিখে শুধু এক বা একাধিক পাঠকই নয়, সাথে সাথে এক বা একাধিক লেখক তৈরি করেন- তিনি বড় লেখক। ছোট লেখক-বড় লেখকের পার্থক্যটা আমি এভাবে করি। তবে বিষয়টাকে ছোট লেখক বললে নান্দনিক যেহেতু শোনায় না, তাই সাধারণ লেখক বলা যেতে পারে।

 

প্রশ্ন : নান্দনিক? আচ্ছা, নন্দন জিনিসটা কতটা জরুরি কবিতার জন্য?

উত্তর : কতটা জরুরি নয়, এটা আবশ্যিক। শুধু কবিতার জন্য নয়, সকল শিল্পের জন্য আবশ্যিক। আসলে শিল্প হল একটি কৌশল, এটি না থাকলে শিল্প হয় না। আর এই কৌশলকে উপস্থাপনার জন্য নান্দনিকতা জরুরী।

 

প্রশ্ন : এটা কি সকল শিল্পের উপরেই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া মনে হচ্ছে না আপনার কাছে?

উত্তর : আমার কাছে মনে হয় না এই বিষয়টি চাপানো। আমার মনে হয় শিল্প এবং নন্দন একে অপরের সাথে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত।

 

প্রশ্ন : আর অন্যান্য শিল্পমাধ্যমের সাথে কবিতার পার্থক্যটা কোথায়?

উত্তর : অন্যান্য শিল্পমাধ্যমের সাথে কবিতার মূল পার্থক্যটা উপস্থাপনায়। আর মূলত কবিতার ক্ষেত্রে নিজস্বতা একটি অনন্য ব্যাপার। যেমন ধরুন জর্জ ব্রেকে ও পাবলো পিকাসো প্রবর্তিত কিউবিজম আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ঐ সময়ে একই ধারায় ছবি এঁকে খ্যাতি অর্জন করলেন বেশ কয়েকজন শিল্পী। এদের মধ্যে রবার্ট ডালুয়ানে, ফার্নান্ড লেজার, জুয়ান গ্রিস প্রমুখেরা উল্লেখযোগ্য। প্রকাশ করার স্টাইল একই, কিন্তু এই শিল্পমাধ্যমে নিজেকে আলাদাভাবে প্রকাশ করা সম্ভব। অথচ কবিতায় যদি রবীন্দ্রনাথের উপস্থাপনের স্টাইলে আপনি আরেকটি কবিতা উপস্থাপন করেন, তখন আপনি আর আপনি থাকেন না। অন্য শিল্পের সাথে কবিতার এই পার্থক্যটি বিশেষভাবে দৃশ্যমান। এছাড়া শব্দ বাক্য কিংবা ঢং-এর বিষয়গুলো তো আমরা জানিই।

 

ধন্যবাদ, অহ।

আপনাকেও ধন্যবাদ।


 

আরো পড়ুন-

কবিতার বাইরে কিছুই ভাবি না : জব্বার আল নাঈম 

//জেডএস//
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ডাগআউট থেকে রিভিউ নিতে বলায় ডেভিড, পোলার্ডের শাস্তি
ডাগআউট থেকে রিভিউ নিতে বলায় ডেভিড, পোলার্ডের শাস্তি
হিট অ্যালার্ট উপেক্ষা করে কাজে নামতে হয় যাদের
হিট অ্যালার্ট উপেক্ষা করে কাজে নামতে হয় যাদের
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজের পাঠদানও বন্ধ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজের পাঠদানও বন্ধ
রুশ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউক্রেনের হামলা, ৫০টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি মস্কোর
রুশ বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইউক্রেনের হামলা, ৫০টি ড্রোন ভূপাতিতের দাবি মস্কোর
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি