X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

বইমেলায় আসছে শামীম রেজার ‘কবিতা সংগ্রহ’

সাহিত্য ডেস্ক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৩:৪৬আপডেট : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৪:০৩

বইমেলায় আসছে শামীম রেজার ‘কবিতা সংগ্রহ’
একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে নব্বই দশকের অগ্রগণ্য কবি শামীম রেজার ‘কবিতা সংগ্রহ’। বইটি প্রকাশ করছে চৈতন্য প্রকাশনী। দীর্ঘ ২৭ বছরের কাব্য জীবনে প্রকাশিত ৭টি কবিতার বই পাওয়া যাবে একই মলাটে। দাম রাখা হয়েছে ৩৪০ টাকা। প্রচ্ছদ করেছেন সব্যসাচী হাজরা। এছাড়া কলকাতা বইমেলায় ক্রৌঞ্চদ্বীপ প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে শিল্পী সমীরণ ঘোষের প্রচ্ছদে তার আরেকটি কবিতা বই ‘দেশহীন মানুষের দেশ’।

‘সংস্কৃতির কথা’ ও ‘তুলনামূলক সাহিত্য পাঠ’ নামে দুটি সম্পাদনা গ্রন্থ প্রকাশিত হবে একুশে গ্রন্থমেলায় কাগজ প্রকাশন থেকে। এর আগে কবি শামীম রেজা শিবনারায়ণ রায়ের সঙ্গে সম্পাদনা করেছেন আফ্রিকার সাহিত্য সংগ্রহ।

‘শামীম রেজার কবিতা’ নামে একটি সংকলন আগরতলার অক্ষর প্রকাশনী থেকে বের হয়েছিল। সংকলনটি ভারতের বাংলাভাষী পাঠকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে।

শামীম রেজা ঔপনিবেশিক কালের সূচনাপর্ব ও দাস ব্যবসার ইতিবৃত্ত নিয়ে এক মর্মন্তুদ কাহিনি লিখছেন ‘ভারতবর্ষ’ উপন্যাসে। বইটি শিঘ্রই প্রকাশিত হবে।


‘কবিতা সংগ্রহ’ থেকে তিনটি কবিতা বাংলা ট্রিবিউনের পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।


এক

এমন পাগলা বয়স, ঘুমরাত্তিরে মাটির বাঁশিবুকে ঘুমাইতে পারি

না, পাপ স্পর্শ করে না চোখের পাতা—পানশালায় সাতাইশ বছর

পইড়া আছি, বেহায়া বাতাস পিছন ছাড়ে না—অনুভূতির রহস্য

আছড়ে পড়ে বুকে, দুঃখের দেয়ালে ধাক্কা মারে—; পৃথিবীর বুকে

ঘুট-ঘুটে আন্ধার নিয়া অনিচ্ছায় শুইয়া থাকি কত কত বছর;

চোখের লাই ভাঙে না—পুঁথির গয়না পরি সাঁঝবেলায়, শামুকের

ভিতর দীঘির ঢেউ গুণি—; ইন্দ্রপাশা গ্রামের মেলায় পাশা

শিকারীদের সঙ্গে পাশা-পাশা খেলি, ঘুম আসে না; ধূলামাখা

চাকতির মতো শবরীর স্তন, সবই কলকব্জা মনে হয়, ছেউড়িয়ার

ঘাটে সিকিচাঁদ পইড়া থাকে দীঘল দৃষ্টির আড়ালে—এসব আমার

চোক্ষে ধরে না। ময়নামতির বৃক্ষ-ডালে মধুরাত্তিরে, জলপ্রণয়ী

পাখিসাঁতারও ভালো লাগে না; লাঙলের ঘষা খাওয়া রেখাহীন

হাত দেইখা-দেইখা মানুষ-জন্ম ভুইলা যাই, আদি-আদিম-একই

ঘৃণা কামশ্বাস—কোথাও ভালোবাসা নাই। পদ্মা-সুরমা-কুশিয়ারা-

আগুনমুহা কত কত নদী নাম বুকে বাজে না, ঘুম আসে না;

একবার কমলদহে প্রিয়তমার শরীর দাহ হলে কমলারঙের আগুন

ছড়ায়েছিল পূর্ণতোয়ার জলে; আর আমি সেইদিন থেইকা সাঁতার

কাটছি আগুন-জলের ভিতর, তাতেও মৃত্যু আসে না।

এমন পৃথিবীতে ঘুম আসে না—মৃত্যু আসে না।



৭ মাঘ ১৪১০

২০ জানুয়ারি ২০০৪

 

দুই

যখন রাত্তির নাইমা আসে মনের গভীরে আমার, শুকতারা গাঁইথা

থাকে আকাশের ঘরে, তুমিও তেমনি বাঁইধা থাকো মনের

অন্দরে; আর আমি শুঁড়িখানার ঠিকানা-হারানো বালক, নিজেরে

খুঁইজা মরি কোনো এক অজানা খাঁচায়।

যে আমি প্রলয় ছাড়া লড়তে জানি না, বানের জলকে বাগ

মানানোই যার স্বভাব, পূর্বপুরুষের আর্তনাদ খাবি খায় বরফ-

দেয়ালে—পশ্চিমে; অন্যদের বদলে দেয়ার যাদুকথা শোনানোই

যে-আমার কাজ; ক্ষুধার্ত ডোমের চোখে শ্মশানের আগুনে

হোলিখেলা দেখতে দেখাও পণ্যমানুষের কলজে ছিঁইড়া

ফ্যালানোই আমার আদর্শ, সেই আমি হাওয়ারে সাথী আর

নদীরে বাহন কইরা একদিন রাইতে শয্যাবাহারী জোছনায়

অজান্তে দিয়াছি সাঁতার! একটি চূড়ান্ত অপেক্ষার পর এইরহম

পরিবর্তন হয় বুঝি সবার? সব হলুদ পাতারা ক্যামন সবুজ হাসে

দিবালোকে, সব অনুভূতিই প্রথম-প্রথম, যেন এক নতুন শৈশব।

যখন রাত্তির নাইমা আসে মনের গভীরে আমার, তুমি বিন্ধা

থাকো হৃৎপিণ্ডের চলমান রক্তের ভাঁজে; আর আমি থমথমে জলে

বাইন্দা-রাখা নক্ষত্র আর তারাদের ছবি মুক্ত কইরা দেই হাত-

ইশারায়; মধুগন্ধা জোছনা আমারে ডাকে, তারা ভোর নামাতে

চায় আর শুকতারা গাঁইথা থাকে আকাশের গায়, আমি হাত

বাড়াইলেই কাছে আসে—দূরে চইলা যায়, আসলে সে কোথায়

লুকায়, শুঁড়িখানার ঠিকানা জানি না বইলা পথ হারাই। বলো

তোমায়, কীভাবে স্বপন দেখাই।


৩০ শ্রাবণ ১৪১১

১৪ আগস্ট ২০০৪

 

তিন

যখন রাত্তির নাইমা আসে উলঙ্গ সবুজ দ্বীপের শরীরে, ভয়ানক

কাইপা উঠি আমি, যেন ঝড়ে-পড়া সারস-শাবক। মৃত্যুর শীতল

শিস বইয়া যায় ভিতরে আমার। আর দোয়েলা তুই পবিত্র

পুরোহিতের মতন নির্বিকার তাকাও; এ কী দেখি ঢ্যালা উপড়ানো

শাদা চোখ!

 

তোর ঝলসানো চোখে অনুভূতির আংটা আগুন দেখে না কেউ,

দেখে শুধু হাজার বছরের অন্ধকার ঢেউ, মরণ যেথায় থির হইয়া

আছে বরফ রাত্তির দেয়ালে, ঘুমন্ত নদী হেথায় কাঁইপা ওঠে

মধুর আস্বাদে আর তারা ক্রুর হাসি হাসে গ্রহ্লান শেষে দুর্গম

বনে।

 

যখন রাত্তির নাইমা আসে হাজার বছরের ক্লেদ কোলে মেখে,

পৃথিবীর কোলাহল থাইমা যায় হাড়ভাঙা কৃষকের নিভন্ত চোখে,

ক্ষিপ্র চিতার থাবা গুড়ি গুড়ি নক্ষত্র ছেটানো আলোয়, তোর

শরীরে স্পষ্ট হয়। মৃত মুনিয়ার দেহে সমস্ত সমুদ্রজল ভর করে

জোয়ার নামাইতে চায় মরা জোছনায়। আর সবাই যখন মৃত দ্বীপ

ভেবে রাইখা যায় প্রাচীন পৃথিবীর অপার শাখায়, তখন আমি

চিনতে পারি প্রিয়তমা দোয়েলারে, আত্মার জোছনায় জ্বইলা ওঠে

সে, বেহুলার চোখে সুবর্ণ নদীটার ধারে।

 

যখন রাত্তির নাইমা আসে সুবর্ণনগরে

 

 

 

//জেড-এস//
সম্পর্কিত
ভুটানি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন
সাঙ্গ হলো প্রাণের মেলা
২৫০ শিশু লিখলো ‘আমাদের জাতির পিতা, আমাদের শ্রেষ্ঠ মিতা’
সর্বশেষ খবর
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধপরিকর
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সরকার বদ্ধপরিকর
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে স্বামীর পুরুষাঙ্গ কেটে স্ত্রীর ‘আত্মহত্যা’
‘ভারত কিংবা অন্য কোনও দেশে এমনটি দেখিনি’
‘ভারত কিংবা অন্য কোনও দেশে এমনটি দেখিনি’
পশ্চিম তীরে ১০ যোদ্ধাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
পশ্চিম তীরে ১০ যোদ্ধাকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের
সর্বাধিক পঠিত
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
শিল্পী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি মিশা, সম্পাদক ডিপজল
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
সোনার দাম কমেছে, আজ থেকেই কার্যকর
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও
দেশের ৯ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির বেশি, পারদ উঠতে পারে আরও