X
সোমবার, ০৬ মে ২০২৪
২৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্য ড্রিমস ।। নাগিব মাহফুজ

অনুবাদ ও ভূমিকা : ফজল হাসান
০৪ জুন ২০২৩, ১৫:৩৫আপডেট : ০৪ জুন ২০২৩, ১৫:৩৫

[নোবেলজয়ী মিশরীয় লেখক নাগিব মাহফুজ আরবি সাহিত্যের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং তাকে আধুনিক আরবি সাহিত্যের প্রাণপুরুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্প লেখক, চিত্রনাট্য রচয়িতা এবং নাট্যকার। ‘কায়রো ট্রিলজি’র জন্য তিনি দেশ-বিদেশের পাঠকের কাছে সুপরিচিত। তিন খণ্ডের এই বিশাল আকারের এপিকধর্মী উপন্যাসের নাম হলো ‘প্যালেস ওয়াক’ (১৯৫৬), ‘প্যালেস অব ডিজায়্যার্’ (১৯৫৭) এবং ‘সুগার স্ট্রিট’ (১৯৫৭)। এই ত্রয়ী উপন্যাসের জন্য তিনি ১৯৮৮ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সুদীর্ঘ সত্তর বছরের সাহিত্যিক জীবনে তিনি ৩৫টি উপন্যাস, এবং প্রায় ৩৫০টি ছোটোগল্প (যা ষোলোটি ছোটোগল্প সংকলনে অন্তর্ভুক্ত), পাঁচটি নাটক এবং প্রায় ২৫টি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য রচনা করেন।

‘দ্য ড্রিমস’ এবং ‘ড্রিমস অব ডিপারচার’ নাগিব মাহফুজের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। গ্রন্থ দুটির অনেকগুলো স্বপ্নের বুনট এবং একটিমাত্র আবেগকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে, যেমন লজ্জা, আশা, ভয় এবং ভালোবাসা। তবে লেখক কেবল আবেগ বর্ণনা করেননি, তিনি ছোটো পরিসরে কাজ করে পাঠককে স্বপ্নদ্রষ্টার বাস্তবতা ভাগ করে নিতে এবং অনুভূতিকে অনুভব করতে বাধ্য করেছেন। যদিও প্রচলিত অর্থে কোনো গল্পেই আখ্যান (প্লট) নেই, তবে সবগুলো লেখাই সমৃদ্ধ এবং আকর্ষণীয় সংক্ষিপ্ত চরিত্রচিত্রণ বা বর্ণনা, যা কাব্যিক, সুন্দর এবং প্রায়শই পরাবাস্তব। এ কথা সত্যি যে, এ দুটি গ্রন্থে নাগিব মাহফুজ তার মহাকাব্যিক গল্প বলার অতুলনীয় ক্ষমতা প্রদর্শন করেছেন।

নাগিব মাহফুজের স্বপ্ন নিয়ে রচিত ১০৪টি অতি ছোটোগল্প আরবি ভাষায় ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত আহলাম ফাতরাত আল-নাকাবা (আক্ষরিক অর্থ, আরোগ্য লাভের সময়ে দেখা স্বপ্ন) শিরোনামে কায়রোর নিসফ্ আল-দুনিয়া ম্যাগাজিনে প্রথম ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। পরে লেখকের অন্যতম অনুবাদক রেমন্ড স্টক ইংরেজিতে অনুবাদ করেন, যা গ্রন্থাকারে ‘দ্য ড্রিমস’ শিরোনামে ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয়। অন্যদিকে কায়রোর একই ম্যাগাজিনে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে (জানুয়ারি ২০০৪ থেকে সেপ্টেম্বর ২০০৬) স্বপ্নের ওপর ভিত্তি করে লেখা দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘ড্রিমস অব ডিপারচার’, যা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন রেমন্ড স্টক এবং গ্রন্থটি ২০০৭ সালে প্রকাশিত হয়। ‘ড্রিমস অব ডিপারচার’-এ রয়েছে স্বপ্ন নিয়ে লেখা ১০৮টি গল্প, যার মধ্যে ১০২টি প্রকাশিত হয়েছে নিসফ্ আল-দুনিয়া ম্যাগাজিনে এবং বাকি ছয়টি প্রকাশিত হয়েছে ২০০৫ সালের ৯ ডিসেম্বরে (নাগিব মাহফুজের শেষ জন্মদিনের কয়েক দিন আগে) কায়রোর দৈনিক পত্রিকা আল-আহরাম-এ। পরে গ্রন্থ দুটি একত্রে ‘দ্য ড্রিমস ইনক্লুডিং ড্রিমস অব ডিপারচার’ শিরোনামে ২০০৯ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত হয়।

উৎসুক পাঠকের জন্য ‘দ্য ড্রিমস’ গ্রন্থ থেকে নির্বাচিত ছয়টি খুদে গল্পের অনুবাদ প্রকাশ করা হলো। উল্লেখ্য, মূল গ্রন্থে গল্পগুলো সংখ্যা দিয়ে সাজানো হয়েছে।]


স্বপ্ন ১

আমি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আমার সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমি ছিলাম ক্ষুধার্ত এবং আমার সীমিত অবস্থার কথা ভেবে উপযুক্ত রেস্টুরেন্ট খুঁজছিলাম। প্রত্যেকটিতে আমি দরজায় তালাবদ্ধ দেখতে পেয়েছি এবং যখন আমার দৃষ্টি চত্বরের ঘড়ির দিকে পড়ল, তখন আমি আমার বন্ধুকে ঘড়ির পাদদেশে দেখতে পেলাম।

সে হাত নেড়ে আমাকে ডাকল। সুতরাং আমি সাইকেল নিয়ে তার দিকে এগিয়ে যাই। আমার অবস্থার কথা বিবেচনা করে সে পরামর্শ দেয় যে, রেস্টুরেন্ট খোঁজার কাজ আরো সহজ করার জন্য আমি যেন আমার সাইকেলটি তার কাছে রেখে যাই। আমি তার পরামর্শ গ্রহণ করি—এবং যতক্ষণ না আমি একটি পারিবারিক খাবারের দোকানের সন্ধান পেয়েছি, ততক্ষণ আমার ক্ষুধা ও খোঁজার পালা আরো বেশি তীব্র হয়ে ওঠে।

ক্ষুধায় কাতর এবং হতাশায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি সেই খাবারের দোকানের কাছে যাই, যদিও আমি জানতাম যে খাবারের মূল্য অনেক বেশি। আমি দেখলাম দোকানের মালিক প্রবেশদ্বারে একটি ঝুলন্ত পর্দার সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আমি দরজা উন্মুক্ত করা ছাড়া আর কী করতে পারি—কেবলমাত্র দেখার জন্য যে, ভেতরের জায়গাটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং বিশাল হলঘরে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যসামগ্রী পড়ে রয়েছে। হতাশ হয়ে আমি লোকটিকে জিজ্ঞেস করলাম, “এসব কী হচ্ছে?”

“তাড়াতাড়ি কাবাব বিক্রেতা যুবকের কাছে যাও,” লোকটি জবাবে বলল। “হয়ত বন্ধ করে সে চলে যাওয়ার আগেই তুমি তাকে ধরতে পারবে।”

এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে আমি চত্বরের ঘড়ির কাছে ফিরে যাই—কিন্তু সেখানে সাইকেল বা আমার বন্ধুকে খুঁজে পেলাম না।


স্বপ্ন ২

আমরা অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করেছি। মেয়েটি আগে এবং আমি ঠিক তার পেছনে ছিলাম, যখন দারোয়ান আমাদের ব্যাগ বহন করছিল। মেয়েটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল গভীর—যদিও কোন কারণে তার ব্যাখ্যা ছিল না। আমরা আমাদের জিনিসপত্র সাজাতে শুরু করেছিলাম। এক ফাঁকে আমি সমুদ্র দেখার জন্য বারান্দায় যাই এবং সমুদ্রের বিশাল দিগন্তে নিজেকে হারিয়ে ফেলি, ঢেউয়ের ভাঙা গর্জন ও আর্দ্র বাতাসে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি।

হঠাৎ ফ্ল্যাটের ভেতরে চিৎকার শোনা গেল। তৎক্ষণাৎ আমি ভেতরের দিকে দৌড়ে যাই এবং দেখি যে, মেয়েটি আতঙ্কে কাঁপছে এবং দরজার ওপরের দিকে আগুন জ্বলছে। আমি প্রচণ্ড ধাক্কা থেকে সামলে ওঠার আগেই যেন পাথর কেটে তৈরি করা হয়েছে এমন শক্ত চেহারার একজন লোক এসে তার হাতের স্পর্শে আগুন নিভিয়ে দেয়।

“হয়ত এখানকার পানি সরবরাহ পরিসেবা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে,” তিনি আমাদের দিকে ফিরে বললেন—তারপর চলে গেলেন।

আমার মন এখন শান্ত রয়েছে, আমি সুপারমার্কেট থেকে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি। ফিরে এসে দেখি অ্যাপার্টমেন্টের দরজা খোলা এবং পাশেই দারোয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আমি উদ্বিগ্ন হয়ে ফ্ল্যাটে যাই। ঘর খালি, কিন্তু মেঝেতে ফেলে দেওয়া কাপড়ের একটি মোটা প্যাকেট পড়ে আছে। মোড়ানো পায়জামা থেকে একটি বাহু গর্তের মধ্যে আটকে রয়েছে। মেয়েটির কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

“কী হয়েছে?” আমি বিস্মিত গলায় জিজ্ঞেস করলাম।

“স্যার, আপনি এখানে আসার পথে অবশ্য কোথাও ভুল করেছেন—এটি আপনার অ্যাপার্টমেন্ট নয়,” দারোয়ান জবাবে বলল।

গর্ত থেকে বেরিয়ে থাকা হাতের দিকে তাকিয়ে আমি বললাম, “এ পায়জামা আমার!”

দারোয়ান শান্তভাবে উত্তর দেয়, “আপনি দোকানে একই ধরনের হাজার হাজার পায়জামা পাবেন।”

আমি স্বীকার করতে শুরু করি যে, আমার ভুল হয়েছে, বিশেষত স্মরণ করতে গিয়ে মনে পড়ে এখানে এক সারিতে তিনটি বিল্ডিং রয়েছে, যা দেখতে অবিকল একই। আমি দ্রুত সিঁড়ি ভেঙে রাস্তার দিকে এগিয়ে যাই এবং দেখি মেয়েটি শূন্য দৃষ্টি মেলে মানুষ ও গাড়ির ভিড়ের মধ্যে চত্বরের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার আগে তাকে ধরার জন্য আমি ছুটে যাই।


স্বপ্ন ৩

নৌকার মেঝের ঠিক মধ্যখানে একটি মাস্তুল ছিল। মাস্তুলের চারপাশে দড়ি দিয়ে এক লোকের ঘাড় থেকে পা পর্যন্ত বেঁধে রাখা হয়েছে। সে ডান ও বাম উভয় দিকে প্রচণ্ড জোরে মাথা ঝাঁকাচ্ছিল, তার আহত বুকের গভীর থেকে চিৎকার করে বলছিল, “নির্যাতন কখন শেষ হবে?”

আমরা তিনজন সহানুভূতির দৃষ্টিতে তার দিকে তাকাই এবং বিভ্রান্ত হয়ে আমরা একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করি। আমাদের মধ্যে একজন তাকে জিজ্ঞেস করে, “কে তোমাকে বেঁধে রেখেছে?”

নির্যাতিত লোকটি উত্তর দিল, যেন তার মাথা একদিক থেকে অন্য দিকে ধাক্কা খাচ্ছিল, “আমিই করেছি।”

“কেন?”

“এটাই শাস্তি, যা আমার প্রাপ্য।”

“কোন অপরাধের জন্য?”

“অজ্ঞতা,” সে দীর্ঘশ্বাস ফেলে রাগী গলায় বলল।

"আমরা আপনাকে এমন একজন হিসেবে জানতাম যার স্বপ্ন ছিল, এমনকি অভিজ্ঞতাও ছিল,” জবাবে আমি তাকে বললাম। “আমরা জানতাম না যে, ক্রোধ প্রতিটি মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকে।”

“আপনিও সত্য সম্পর্কে অজ্ঞ রয়েছেন,” সে জবাব দেয় এবং তার কণ্ঠস্বর চড়া শোনায়। “যেকোনো মানুষের সমস্ত আভিজাত্য কেড়ে নেওয়া যায় না, তাদের অবস্থা যতই খারাপ হোক না কেন!”

তার কথা শোনার পরে দুঃখ ও নীরবতা আমাদের মনকে জয় করে।


স্বপ্ন ১৭

গামালিয়া আর আব্বাসিয়ার বাসাগুলোর অবস্থান আমার সামনে, তবুও মনে হচ্ছিল আমি যেন এক জায়গায়ই হাঁটছি।

আমার মনে হয়েছিল যে, কেউ আমাকে অনুসরণ করছে। পেছনে দেখার জন্য আমি ঘুরে দাঁড়াই, কিন্তু তখন প্রচণ্ড বেগে বৃষ্টি পড়ছিল, যা বিগত বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি তীব্র ছিল—সুতরাং আমি আমার বাড়িতে ফিরে যাই। আমি পোশাক খুলতে চেয়েছি, কিন্তু তখনই আমার অদ্ভুত অনুভূতি হয় যে, আগন্তুক লোকটি আমার ঘরের ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে। তার দুঃসাহস আমাকে ভীষণ রাগান্বিত করে—সুতরাং আমি তাকে উদ্দেশ্য করে তীব্র চিৎকার করি, যেন সে আত্মসমর্পণ করে। একসময় প্রবেশ পথের দরজা খুলে যায় এবং একজন লোকের আবির্ভাব ঘটে, যে কি না বিশাল দেহের এবং ভীষণ শক্তিশালী, যা আমি আগে কখনো দেখিনি। “আত্মসমর্পণ করুন,” সে দ্রুত ব্যঙ্গাত্মক কণ্ঠে বলল।

দুর্বলতা এবং ভয় আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি নিশ্চিত যে, হাতির মতো বিশাল হাত দিয়ে সে একটা ঘুসি দিলেই আমাকে সম্পূর্ণ ধরাশায়ী করবে। তারপর সে আমাকে আমার ওয়ালেট এবং ওভারকোট দিতে বলেছে। আমার কাছে ওভারকোট অত্যন্ত জরুরি জিনিস—তথাপি উভয় জিনিস তার হাতে তুলে দেওয়ার আগে আমি ইতস্তত করি। সে আমাকে ধাক্কা দেয় এবং আমি মেঝেতে পড়ে যাই। যখন আমি সোজা হয়ে দাঁড়াই, সে অদৃশ্য হয়ে যায়—এবং তখন আমি ভাবছিলাম লোকজনকে জানানোর জন্য চিৎকার করব কি না।

তবে ঘটনা যা ঘটেছে, তা অবমাননাকর ও লজ্জাজনক এবং আমাকে রীতিমতো কৌতুক ও উপহাসের পাত্র করে তুলেছিল—তাই আমি কিছুই করিনি।

আমি পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার কথা ভেবেছিলাম, কিন্তু আমার এক বন্ধু গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা ছিল। সুতরাং এক ভাবে না হয় অন্য উপায়ে কেলেঙ্কারি ছড়িয়ে পড়ত।

আমি নিশ্চুপ থাকার সিদ্ধান্ত নেই, তবে তা আমাকে দুশ্চিন্তার হাত থেকে রেহাই দেয়নি।

আমি ভয় পেয়েছি যে, চোরের সঙ্গে আমার কোথাও দেখা হবে এবং সে তখন আমার কোট পরে এবং আমার টাকা-পয়সা নিয়ে আনন্দ চিত্তে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


স্বপ্ন ৪৪

আমি নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মুখে তার ডেস্কে বসা অবস্থায় আবিষ্কার করি। কয়েক দিন আগে তিনি খবরের কাগজের অফিসে আমার সহকর্মী ছিলেন: মন্ত্রী হিসেবে তার নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি আকস্মিকভাবে ঘটে। তার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য জিজ্ঞেস করার সুযোগ আমি গ্রহণ করি। তিনি আমাকে উষ্ণ আতিথেয়তা এবং আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করেন। তারপর আমি তার সম্মুখে আমর অনুরোধ পেশ করি যে, তিনি যেন তার এক ব্যবসায়ী বন্ধুর কাছে আমার জন্য সুপারিশ করেন। আমি সেই ব্যবসায়ীর একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছি।

তিনি নিজের হাতে সুপারিশপত্র লেখেন এবং আমাদের সাক্ষাৎ হাসিখুশিভাবেই শেষ হয়। একইদিন সন্ধ্যায় আমি নীল নদের পাশের বেড়ানোর জায়গায় পায়চারি করছিলাম, তখন একজন লোক, যাকে নিয়ে সংবাদপত্রে হাস্যকৌতুক করা হয়, আমাকে বিরক্ত করছিল। সে একটি বন্দুক বের করে এবং আমার সমস্ত টাকা-পয়সা ছিনতাই করে নিয়ে যায়—মোটামুটি মিশরীয় পঞ্চাশ পাউন্ড।

আমি মর্মাহত হই এবং আমার ফ্ল্যাটে ফিরে যাই। তারপরও ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমার সাক্ষাতের কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। পরদিন সকালে আমি তার অফিসে গিয়েছি। কয়েক মিনিট পরে তিনি তার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেন। আমি তার হাতে সুপারিশপত্র তুলে দেই। তারপর আমি যেখানে দাঁড়িয়েছিলাম, সেখানেই জমে যাই।

“হায় খোদা,” প্রচণ্ড উদ্বেগের এই মুহূর্তে আমি নিজেকে বললাম—এই সেই চোর, অথবা তার যমজ ভাই, যে আমার টাকা ছিনতাই করেছে। আমার সামনে মাটি যেন দুলছে।


স্বপ্ন ৮১

অনেক দিন পর আমি প্রাসাদে যাই। আমি দারোয়ানকে বললাম সে যেন গণ্যমান্য মহিলাকে জানায় যে, তার সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্তির জন্য ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাতে একজন এসেছে, যদি তিনি তাকে অনুমতি দেন।

লোকটি তাড়াতাড়ি ফিরে আসে এবং আমাকে অভ্যর্থনা কক্ষে নিয়ে যায়। কক্ষের সৌন্দর্য এবং বিশালতা আমার চোখ ধাঁধায়। আমাকে স্বাগত জানানোর জন্য কিছুক্ষণের মধ্যেই বাদ্যযন্ত্রের সুর বেজে ওঠে—আর আমি চুপিচুপি ভদ্রমহিলার মনোমুগ্ধকর অবয়ব সুন্দর ছন্দে চলাফেরা করতে দেখি। আমি ধন্যবাদের চিঠিটি তার সম্মুখে উপস্থাপন করি—কিন্তু তিনি চমৎকারভাবে তার হাত দিয়ে বক্ষ উন্মোচন করেন এবং দুই উরোজের মাঝখান থেকে একটি ঝকঝকে ছোটো অস্ত্র বের করেন।

তিনি আমার দিকে পিস্তল তাক করেন। আমি চিঠির কথা ভুলে যাই—তিনি পিস্তলের ট্রিগার টানার আগেই আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
এবার যুক্তরাষ্ট্রের সুপার গ্র্যান্ডমাস্টারের সঙ্গে ড্র করে ফাহাদের চমক
আমান উল্লাহ আমানকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলেন আপিল বিভাগ
আমান উল্লাহ আমানকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দিলেন আপিল বিভাগ
বুধবার থেকে ঢাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা সশরীরে
বুধবার থেকে ঢাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা সশরীরে
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলে ১ লাখ ডলার পাবেন বাবররা!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলে ১ লাখ ডলার পাবেন বাবররা!
সর্বাধিক পঠিত
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
‘টর্চার সেলে’ নিজ হাতে অপারেশনের নামে পৈশাচিক আনন্দ পেতো মিল্টন, জানালেন হারুন
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে যা বললেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
নিজেদের তৈরি ভেহিকেল পেরুকে উপহার দিলো সেনাবাহিনী
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
অভিযোগের শেষ নেই মাদ্রাসায়, চলছে শুদ্ধি অভিযান
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?
কোন পথে এগোচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ?