X
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪
১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমিনুদ্দির ঈদ

রনি রেজা
০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২১আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:২১

‘ইট্টু জিরাইয়া নিই। মরার আগে জানডারে সাজা দিয়ার কোনো কাম নাই।’ বিড়বিড়িয়ে কথাগুলো বলেই একটা বিড়ি জ্বালায় আমিনুদ্দি। হাঁপাতে হাঁপাতেই বিড়ির পশ্চাৎদেশে ঠোঁট ছুঁইয়ে দীর্ঘ এক টান দেয়। যাকে বলে সুখটান। কিন্তু এখন তাতে সুখ আসে না একটুও। বিড়ির কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়ার সঙ্গে হাঁপিয়ে ওঠা গাঢ় শ্বাস আকাশে উড়িয়ে দেওয়ার বৃথা চেষ্টা চালায় খানিকক্ষণ। অনেকদিন পর গাছে উঠে হাঁপিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এত বড় গাছে উঠলে যে কেউই হাঁপিয়ে যাবে। কোমরে ব্যথা। বয়সও বেড়েছে। না হলে আমিনুদ্দির কাছে এ কোনো ব্যাপারই ছিল না। তার ওপর আমিনুদ্দির এক হাত কাটা। সূক্ষ্মভাবে গাছ চিড়তে চিড়তে একদিন নিজের হাতটিই কাটা পড়ল স-মিলের করাতে। সঙ্গে সঙ্গে কাটা পড়ল আমিনুদ্দির সুখের দিন।
একসময় দেশ-বিদেশের কত বড় বড় গাছগাছালি চোখের পলকে চড়ে বেড়িয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই। ছোটবেলায় বাঁদর-ছ্যাঁদর কত কিছু বলেছে বড়রা। বিনা স্বার্থে একেবারেই শখের বসে কত মানুষের আম, জাম, কাঁঠাল, নারকেল পেড়ে দিয়েছে। আমিনুদ্দিকে ডেকে কেউ কাজে পায়নি এমন ইতিহাস এই বারইপাড়া গ্রামে নেই। গাছপ্রেমিক আমিনুদ্দির জীবনে কখন যে আষ্টেপৃষ্ঠে গাছ জড়িয়ে গেছে নিজেও টের পায়নি। এই তো সেদিনের কথা। পশ্চিমপাড়ার শাহেদ আলী মাতুব্বরের বাড়িতে তার বড় ছেলের জন্য ডাব পেড়ে দিতে গিয়ে মিলন মিস্ত্রির নজরে আসে আমিনুদ্দি। তখন বয়স কত হবে? ১০ কি ১১। অতটুকু বয়সে তো ঘর থেকেই বের হওয়ার কথা না। অথচ বড় বড় গেছোরা যে গাছে ওঠার সাহস পায় না সেগুলোও আমিনুদ্দি বেয়ে বেড়ায় চোখের পলকে। মিলনের ভালো লেগে যায়। ডেকে সাহসের তারিফ করে।
‘মা মারা যাওয়ার পর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে আমিনুদ্দির। ঘরে সৎমা থাকলে বাপ হয়ে যায় তালুই। বলা যায় আমিনুদ্দির এ কুলে আপন বলতে কেউ নেই। যত বড় গাছেই উঠুক; কেউ নেই পড়ে যাওয়ার ভয়ে বারণ করবে। শাসন করবে।’ জানায় শাহেদ আলী মাতুব্বরের বউ। শুনে মনটা ভারী হয়ে ওঠে মিলন মিস্ত্রির। দক্ষিণ দিক থেকে একটা আচমকা বাতাস এসে কাবু করে দেয় তাকে। নাড়িয়ে দেয় ভেতরটা। আমিনুদ্দিকে কাছে টেনে বলে—‘তুই আমার সাথে থাইক্যা কাম শিখপি? তুর মতন ছাওয়ালেরই দরকার। এই লাইনে কাঁচা টাহা আছে। ভালো থাকতি পারবি সারা জীবন।’
গ্রাম মাতানো দুরন্ত ছেলেটি যেন মুহূর্তেই শান্ত হয়ে গেল। একদম স্থির। মুখেও কিছু বলতে পারল না। ফাল্গুন মাসের বাতাসে সরু সুপারি গাছ যেভাবে মাথা দোলায় ঠিক সেভাবেই ঘাড়টা দক্ষিণ দিকে বাঁকিয়ে দিল একটু। ওতেই মিলন মিস্ত্রির পান খাওয়া গালে ফিনকি দিয়ে ছুটল লাল হাসি। আমিনুদ্দির সম্মতিতে একটা শিষ্য নয় যেন নিজের কাঙ্ক্ষিত পুত্রসন্তান পেল মিলন মিস্ত্রি। মিলন মিস্ত্রির কোনো ছেলেসন্তান নেই। একটা ছেলের আশায় পাঁচ পাঁচটা মেয়ে জন্ম দিয়েছে। শেষে ভাগ্য মেনে নিয়ে খ্যান্ত দিয়েছে। আমিনুদ্দিকে পেয়ে সেই অভাব কিছুটা পূরণ হলো যেন। মনে মনে মিলন ভাবে—বংশের বাতি জ্বালাতে ছেলেসন্তানের দরকার হয়। মানুষ তো ছেলের মাধ্যমেই বেঁচে থাকে। আমিনুদ্দিকে দিয়ে সেই কাজটি হবে। শিষ্য বড় হলে সঙ্গে সঙ্গে ওস্তাদের নামও ছড়িয়ে পড়ে। ওকে দিয়েই হবে। মিলন এরই মধ্যে মনে মনে স্বপ্নের জাল বুনে ফেলেছে মাকড়সার মতো। সেই থেকে মাঝেমধ্যেই কাজে নিয়ে যায়। হাতে ধরে কাজ শেখায়। একটু একটু করে মিলন মিস্ত্রিই আমিনুদ্দির নামডাক ছড়িয়ে দেয় চারদিকে। এমন শিষ্য পেলে নিজেকে উজাড় করে দিতে কার না মন চায়। মিলন মিস্ত্রিও করেছে সর্বোচ্চটা। ওতেই যে স্বপ্ন বেঁচে আছে! কায়দাকানুন যা কিছু আছে সবই শিখিয়ে দিয়েছে। কোনো গোমর রাখেনি আমিনুদ্দির কাছে। দেখতে দেখতে এলাকার নামকরা মিস্ত্রি হয়ে ওঠে আমিনুদ্দি। ছোট, বড় কোনো গাছ কাটতে হলেই খোঁজ পড়ে আমিনুদ্দির। তবু সে আগের মতোই আছে। বরং গুরুভক্তি আগের চেয়ে বেড়েছে। দূরে কোথাও খ্যাপ মারলে ভালো টাকা পাওয়া যায়। পকেট গরম থাকে তখন। ভালো-মন্দ খাইতে মন চায়। যখন যা মন চায় ওস্তাদের বাড়িতেই কিনে নেয় আমিনুদ্দি। মাঝেমধ্যে ভাড়া করে ভিসিয়ার এনে সারা বাড়ির মানুষ একত্রিত হয়ে দেখে। বাড়ির সবাইও তারিফ করে। সবাই বলে আমিনুদ্দির দিল বড়। আর মিলন মিস্ত্রি বলে খরচের হাত বেশি লম্বা। কমাতে হবে। মাঝেমধ্যে কৃত্রিম রাগও দেখায় মিলন মিস্ত্রি। হিসেবি হতে বলে তালিম দেয়। ‘এভাবে আর কতদিন। সামনে বিয়েশাদি করতে হবি। সংসার পাততে হবি। টাহাপয়সা কিছু জমাও মিয়া।’
স্নেহমিশ্রিত সে রাগ আমিনুদ্দির ভালো লাগে। বলে—‘খাইয়া-দাইয়াই তো কামাই গুরুজি। খাটুনির কাম হরি, চাড্ডি ভালো-মন্দ খাইতে না পারলি কাম হরব ক্যাম্বায়?’
গুরু-শিষ্যর কথার ফাঁকে মাঝেমধ্যে মিলন মিস্ত্রির বড় মেয়ে জ্যোৎস্না ঢুকে পড়ে। টিপ্পনী কাটে মাঝেমধ্যে। ভেতরঘর থেকে বলে ওঠে—‘খাইয়া তো সব ধ্বংসই হরলেন আমিনুদ্দি ভাই। শরীর, স্বাস্থ্য তো কিছু অইল না।’
‘খাওয়ায়ে খোটা দিলে গায়-গতরে লাগবি ক্যাম্বায়?’ সরল রসিকতায় জবাব দেয় আমিনুদ্দি। একটা অন্যরকম ভালো লাগার ভেতর দিয়ে পার হয় আমিনুদ্দির প্রতিটি দিন। এমন আপনভাবে শাসন তো কেউ কখনো করেনি। গ্যাদা থাকতেই মা মরেছে। বাপ শাসন করেছে মাঝেমধ্যে; তাতে আদর ছিল না। ছিল তার দ্বিতীয় বউয়ের যন্ত্রণার ক্ষোভ মেটানোর কায়দা। মিলন মিস্ত্রির সংসারে এসে তাই একটুতেই গলে যায় আমিনুদ্দি। আপন করে নেয় এ বাড়ির সবাইকে।
আমিনুদ্দিকে খাবার-টাবার বেড়ে দেয় জ্যোৎস্নাই। উপড়ি পাতে মাছ, মাংসের বাড়তি টুকরো তুলে দেয়। অনেক সময় পিঠা-পায়েসও তুলে রাখে গোপনে। সবার চোখের আড়ালে তা খাওয়ায় যত্ন করে। বাড়তে থাকে ভাব-ভালোবাসা। জ্যোৎস্না মেয়েটি অনেক দায়িত্বশীল। ওইটুকু মেয়ে সংসারের সব বোঝে। আমিনুদ্দির চোখের সামনেই তো দেখতে দেখতে বড় হলো। সেদিনও হাফপ্যান্ট আর ফ্রক পরে ঘুরে বেড়াত। এটা-সেটা বায়না ধরত আমিনুদ্দির কাছে। অমুকের গাছের কাঁচা-মিঠালো আম, তমুকের গাছের কদবেল, তেঁতুল; যা খেতে মন চাইত একবার বললেই হাজির করত আমিনুদ্দি। বাজার থেকে এনে দিত গজা, মদন-কটকটি, বাদাম, বুট আরও কত কী! মেলা থেকে আনত কাচের চুরি, লাল ফিতা, কানের দুল। ঘাড়ে করে ঘুরিয়েছে কত। গোসলের সময় লাফালাফি, ঝাঁপাঝাঁপি করেছে। হঠাৎই যেন বড় হয়ে গেল জ্যোৎস্না। ফ্রকের ভেতর দিয়ে উঁকি মারে সুডৌল বক্ষবিতান। শরীরের ঔজ্জ্বল্য বাড়ল হঠাৎ করে। গায়ের রং ময়লা হওয়ায় গ্রামের মানুষ বলত—‘মিলন মিস্ত্রির মাইয়াডার নাম পালটাই রাখতি হবি। কালা মাইয়ার নাম জ্যোৎস্না শুনলে কবি-সাহিত্যিকরা মাইন্ড খাবি। তারা নাকি চান্দের ভক্ত। চান্দের আলোর অপমান সহ্য করবি ক্যাম্বায়? তারচে নাম রাখো আমাবস্যা।’ এমন কথায় আমিনুদ্দির মেজাজ চড়া হতো। অনেকের সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদও করেছে। মিলন মিস্ত্রিই বুঝিয়ে, শুনিয়ে থামিয়েছে। হঠাৎ জ্যোৎস্নার গায়ের ঔজ্জ্বল্য দেখে আমিনুদ্দির ইচ্ছে হয় পুরো গ্রামের মানুষকে ডেকে দেখাতে। পারে না; লোকে কী বলবে ভয় এরই মধ্যে ঘিরে ধরেছে। সতর্ক হয় আমিনুদ্দি। তবু যেন রক্ষা নেই। কিন্তু গ্রামের মানুষের চোখ ফাঁকি দেওয়া কি অত সহজ! কানাকানি শুরু হয়ে যায় গ্রামের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত। চায়ের দোকানের প্রধান আলোচ্য বিষয়ই যেন আমিনুদ্দি-জ্যোৎস্না। মাঝেমধ্যে আমিনুদ্দি হুংকার ছাড়ে বটে। কিন্তু ওতে কি আর গ্রামের মানুষের মুখ আটকানো যায়? শেষে দিনক্ষণ ঠিক করে আমিনুদ্দির হাতেই জ্যোৎস্নাকে তুলে দেয় মিলন মিস্ত্রি। বাড়ির পশ্চিম পাশের ছনের পালানে মাটি কেটে দুই চালা একটি টিনের ঘর তুলে দেয় মিলন মিস্ত্রি। বাসনকোসন, হাঁড়ি-পাতিল; সংসার করতে যা কিছু লাগে তার সবই কিনে দেয় মিলন মিস্ত্রি। নতুন টিনের চাল ভেদ করে প্রতিদিনই সেখানে সুখের বৃষ্টি ঝরে। সুখের বাতাস পেয়ে আরও লকলকিয়ে ওঠে জ্যোৎস্নার শরীর। কালো চামড়ার শরীরে যেন তেল চোয়াতে লাগল। মাঝেমধ্যেই খ্যাপ মারতে দূর গ্রামে যেতে হয় আমিনুদ্দির। বাড়িতে জ্যোৎস্নার একা থাকতে হয়। তাছাড়া কামাইও ভালো আছে। একটা বাচ্চা নেওয়াই যায়। যদিও জ্যোৎস্না চাচ্ছিল কিছু অর্থকড়ি জমিয়ে বাচ্চা নেবে। আমিনুদ্দি এখনও হিসেবি হতে পারেনি। দুই হাতে রোজগার করে তো ছয় হাতে ওড়ায়। একটি টাকা জমা নেই। জ্যোৎস্না কোনোভাবেই লাগাম ধরতে পারে না। শেষে আমিনুদ্দিকে হিসেবি করে তোলার জন্য হলেও বাচ্চা নিতে রাজি হয় জ্যোৎস্না। টোনা-টুনির সংসারে আসে নতুন অতিথি। তাকে নিয়ে নতুন ব্যস্ততা। এরপর আরেক সন্তান, তারপর আরেক। ক্রমেই বড় হলো সংসারের পরিধি। বাড়তে থাকল খরচ। এরই মধ্যে গাছ চিড়তে গিয়ে হাত খোয়াল আমিনুদ্দি। জ্যোৎস্না যা কিছু কৌশলে জমিয়েছিল তা দিয়ে আমিনুদ্দির চিকিৎসা হলো। কিন্তু সার্জারি করে কৃত্রিম হাত লাগানোর মতো অত টাকা তো তাদের নেই। এক হাত নিয়ে কোনো কাজও পাওয়া যায় না। কদিন পান-বিড়ি বিক্রি করেছিল বাজারে ঘুরে ঘুরে। কিন্তু অত বড় সংসার কি আর তাতে চলে? শেষে লোকলজ্জার মাথা খেয়ে নেমে পড়ে ভিক্ষাবৃত্তিতে। প্রতিদিন সেই ভোরে বের হয়, আর ফেরে সন্ধ্যায়। দূর গ্রামে গেলে তো ফিরতে গভীর রাতও হয়। পাঁচ পাঁচটি পেট। কম করে হলেও আড়াই কেজি চাল লাগে। সবজি তরকারি তো আছেই। হোক চেয়ে-চিন্তে আনতে হয়। বাড়ির আশপাশে ছুটা কাজ করে জ্যোৎস্না। আশপাশের লোকজনও মন্দ জানে না। যে যেভাবে পারে সাহায্য সহযোগিতা করে। যা পায় খেয়েপরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করে। ঈদ কোরবানি এলে জাকাত, ফেতরার টাকা তুলে ছেলেমেয়েগুলোকে নতুন পোশাক কিনে দেয়। পোলাও, সেমাই খায়। সব মিলে চলে যাচ্ছিল দিন। সুখের বলা না গেলেও কোনো অশান্তি হানা দিতে পারেনি।
দাম্পত্যজীবনের কুড়ি বছরে সম্ভবত এই প্রথম জ্যোৎস্নার সঙ্গে ঝগড়া হলো। আমিনুদ্দির অক্ষমতাকে কটাক্ষ করল। করবেই না কেন? রাত পোহালেই ঈদ। সবার ছেলেমেয়ে নতুন পোশাক পরবে। ফিরনি, সেমাই, পোলাও, গোস্ত খাবে। কিন্তু আমিনুদ্দি এখনও কিছুরই ব্যবস্থা করতে পারেনি। এ বছর উত্তরপাড়ায় নতুন মাদরাসা হয়েছে। পাড়ার সিদ্ধান্ত—‘জাকাত ফেতরার সমস্ত টাকা ওই মাদরাসাতেই দিতে হবে। নতুন মাদরাসা, খরচ বেশি। দুইজন ছাত্র ও তিনজন হুজুর রাখা হয়েছে। দিন গেলেই ছাত্রসংখ্যা বাড়বে। শিক্ষকও বাড়াতে হবে। খরচও বাড়বে। তাই মাদরাসার ফান্ড তৈরি করাও দরকার।’ পাড়ার এমন সিদ্ধান্তে আমিনুদ্দি ফেতরার কোনো টাকা তুলতে পারেনি। ভেবেছিল অন্য পাড়ার কেউ হলেও দু-দশ টাকা দেবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক টাকাও পায়নি। মনে পড়ল—‘অন্য পাড়ায়ও তো মাদরাসা আছে। হোক ছাত্র একজন বা দুইজন। তবু তো মাদরাসার খরচ আছে। জাকাত ফেতরা দিতে হবে সেখানেই। আমিনুদ্দি তো নামাজ পড়ে না। তাকে দিলে সওয়াব হবে কি না নিশ্চিত নয়। নিশ্চিত সওয়াবের জন্য গ্রামের সবাই মাদরাসাতেই দিয়েছে।’ আমিনুদ্দির ভাবনাই ঠিক হলো। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত কেউ কোনো জাকাত ফেতরার টাকা দেয়নি। সন্ধ্যা অবধি অপেক্ষা করে খালি হাতেই বাড়িতে ফিরতে হয়েছে আমিনুদ্দিকে। যা দেখে কান্না জুড়ে দেয় ছেলেমেয়েগুলো। রাগটা সামলাতে পারেনি জ্যোৎস্নাও। রাগের বসেই বলে দু-চার কথা। ওটুকু আমিনুদ্দিও বোঝে। তারও তো ভেতরটা চুরমার হচ্ছিল। কিন্তু যখনই জ্যোৎস্না বলল—‘তোমার মতো মর্দ থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। মরলে তবু মানুষ ছেলেমেয়েগুলোকে এতিম বলে দয়া করবে।’ কথাটা ভারি পছন্দ হয় আমিনুদ্দির। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, মানুষের দয়া পেতে ছেলেমেয়েগুলোকে এতিম করতে হবে। তাই তো রশিটুকু সঙ্গে করে এত বড় গাছে চড়তে হলো।
বিড়িটা শেষ করে গাছের শক্ত একটা শাখা দেখে রশিটা বেঁধে নেয়। মসজিদের মাইক থেকে ভেসে আসে—‘ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক!! ঈদ মোবারক!!!, পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায়।’
আমিনুদ্দি ভাবে—‘তাহলে তার জানাজার নামাজ হবে কয়টায়? ঈদের নামাজের আগে নাকি পরে?

/জেড-এস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
দুর্নীতির অভিযোগে ইসলামপুর পৌর মেয়র বরখাস্ত
মাটি কাটার সময় ‘গরমে অসুস্থ হয়ে’ নারী শ্রমিকের মৃত্যু
মাটি কাটার সময় ‘গরমে অসুস্থ হয়ে’ নারী শ্রমিকের মৃত্যু
সাকিবের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাক্ষাৎ
সাকিবের সঙ্গে উপজেলা নির্বাচনের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সাক্ষাৎ
স্বর্ণপামে ৯ বিচারক: সর্বকনিষ্ঠ আদিবাসী লিলি, আছেন বন্ডকন্যাও
কান উৎসব ২০২৪স্বর্ণপামে ৯ বিচারক: সর্বকনিষ্ঠ আদিবাসী লিলি, আছেন বন্ডকন্যাও
সর্বাধিক পঠিত
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
‘পুলিশ’ স্টিকার লাগানো গাড়িতে অভিযান চালাবে পুলিশ
আজ কি বৃষ্টি হবে?
আজ কি বৃষ্টি হবে?
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
জালিয়াতির মামলায় সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছরের কারাদণ্ড
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
মঙ্গলবার দুই বিভাগের সব, তিন বিভাগের আংশিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার
খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে সরকার