দারিদ্র্য বিমোচনে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে দেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও উন্নতি সাধন করেছে। ১৯৭৩ সালে সাড়ে ৭ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৬ কোটি লোক দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করত। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি লোক দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করছে। এদের মধ্যে প্রায় ৫ কোটি মানুষের বয়স ১৫-৩০ বছরের মধ্যে। দেশের এই বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে পরিণত করতে নিত্য নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে।
আজ ১৩ নভেম্বর ‘দারিদ্র্য বিমোচনে প্রযুক্তির প্রসার: সম্ভাবনা ও ঝুঁকি’ প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দারিদ্র্য বিমোচনের রিজিওনাল নেটওর্য়াক অন প্রোভার্টি ইরাডিকেশনের (রেনপার) ৭ম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন।
রবিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে সেমিনারের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবরের প্রধান পৃষ্ঠপোষকতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালেশিয়ার ক্যালেটান ইউনিভার্সিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান এবং রেনপারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ড্যাটো ড. ইব্রাহিম বিন চে ওমার। আরও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির, অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. মাইক রবসন।
মূল প্রবন্ধে মাইক রবসন বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসমূহে বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে একটা বিশাল জনগোষ্ঠী দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করছে। এছাড়াও বাংলাদেশের প্রতিবছর প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচী শুধু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সীমাবন্ধ রাখলেই হবে না। শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকায়ও প্রসার ঘটাতে হবে।
এছাড়াও তিন দিনব্যাপী সেমিনারের ৬টি সেশনে দারিদ্র্যতা নিয়ে গবেষণালদ্ধ ১৪১টি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। মালেশিয়া, কম্বোডিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ভিয়েতনামের ৩৩জন বিজ্ঞানীসহ প্রায় ২০০ শতাধিক গবেষক উপস্থিত ছিলেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্বাবিত প্রযুক্তি প্রদর্শনে জন্য কৃষি প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করা হয়। এতে দেশের প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠান তাদের কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শন করছে।
/এনএ/