বোরো মৌসুমে চাষ উপযোগী উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। নতুন এই জাতের ধানের নাম রাখা হয়েছে ‘বাউ ধান-৩।’
ব্লাস্ট ও লিফব্লাইট রোগ প্রতিরোধী ধানের জাতটি দেশে জনপ্রিয় ব্রি ধান-২৮ এর বিকল্প হতে পারে বলে দাবি করেছেন উদ্ভাবক লুৎফুল হাসান। সম্প্রতি জাতীয় বীজ বোর্ডে এ জাত নিবন্ধিত হয়েছে। এই জাতের ধানে আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের সব বৈশিষ্ট্য আছে। নতুন এ জাতের হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৭-৮ মেট্রিক টন, যা ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে ১-২ মেট্রিক টন বেশি। উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ এ জাতের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো দানার আকৃতি ব্রি-২৮ এর মতো। পূর্ণবয়ষ্ক একটি গাছ ১১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। এ জাতের গড় জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন যা ব্রি ধান-২৮ এর সমসাময়িক। ১০০০টি পুষ্ট দানার ওজন প্রায় ২৫ গ্রাম। গাছের কাণ্ড শক্ত ও মজবুত হওয়ায় গাছ ঢলে পড়ে না। এ জাতের ধান পাকা অবস্থায় শীষ হতে সহজে ঝরে পড়ে না বলে অপচয় কম হয়। পাতার রঙ সবুজ। রান্না করা ভাত ঝরঝরে ও খেতে সুস্বাদু।
নতুন উদ্ভাবিত জাতটি সম্পর্কে অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, ‘বর্তমানে ধানের নেকব্লাস্ট আক্রমণের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ধান উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের ধানের উৎপাদন ঠিক রাখতে হলে বিকল্প জাতের দরকার হবে। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) থেকে একটি ‘কৌলিক সারি’ এনে এসিআইয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গবেষণা করা হয়। ব্লাস্ট ও লিফব্লাইট প্রতিরোধী এবং ফলন ব্রি ধান-২৮ থেকে বেশি হওয়ায় বাউ ধান-৩ নামে অবমুক্ত করা হয়।’ তিনি জানান, এই জাতটি আগাম এবং ফলন ব্রি ধান-২৮ এর চেয়ে বেশি হওয়ায় লবাণাক্ত এলাকা ছাড়া হাওড়াঞ্চলসহ দেশের প্রায় সকল অঞ্চলে চাষ করা যাবে।