X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

স্মার্টকার্ডে জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ শুরু ২ অক্টোবর

এমরান হোসাইন শেখ
২৯ আগস্ট ২০১৬, ২১:০৪আপডেট : ২৯ আগস্ট ২০১৬, ২৩:১৯

 



স্মার্টকার্ড আগামী ২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম। ওইদিন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার স্মার্টকার্ডটি হস্তান্তরের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। এছাড়া ওইদিন প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়া হবে। এর পরদিন থেকে ভোটাররা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকা স্মার্টকার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব সিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, স্মার্টকার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া গেছে। আগামী ২ অক্টোবর উদ্বোধন হবে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রীর হাতে তার স্মার্টকার্ডটি হস্তান্তর করা হবে।

এ বিষয়ে এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কার্ড কোন প্রক্রিয়ায় বিতরণ হবে, সেটা এখনও আমরা চূড়ান্ত করিনি। তবে ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্ড হস্তান্তর হবে। তিনি বলেন, আমাদের ইচ্ছা আছে, প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াডদের কার্ডগুলো হস্তান্তর করার মাধ্যমে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করার।

সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, এর আগে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এ কার্ড উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে কোরবানির ঈদ এবং শেষভাগে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সফর থাকায় তখন তিনি সময় দিতে পারেননি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, স্মার্টকার্ড বিতরণের বেশ কিছু কাজ এগিয়ে নিয়েছে কমিশন। ইতোমধ্যে ঢাকার বেশ কয়েকটি থানা নির্বাচন অফিসে স্মার্টকার্ড পৌঁছে গেছে। প্রথম পর্যায়ে ঢাকার ৪০ লাখের মতো ভোটারের কাছে এই কার্ড বিতরণ করা হবে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের অবহেলিত কোনও একটি জেলায় কার্ড বিতরণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে আগামী ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সব ভোটারদের এই কার্ড বিতরণ করা হবে।

ইসির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এবার জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) উন্নতমানের স্মার্টকার্ড গ্রহণের সময় ভোটারকে নতুন করে আঙুলের ছাপ দিতে হবে। এক্ষেত্রে সবাইকে হাতের ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের মনি/কর্নিয়ার ছবি দিতে হবে।

স্মার্টকার্ড বিতরণ করবে নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন-২০১০-এ বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়েরপত্রের জন্য একজন নাগরিকের বায়োমেট্রিক ফিচার-যথা আঙুলের ছাপ, হাতের ছাপ, তালুর ছাপ, আইরিশ বা কর্নিয়া, মুখাবয়ব, ডিএনএ, স্বাক্ষর ও কণ্ঠস্বর সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে। তবে, আইনে থাকলেও স্মার্টকার্ড বিতরণে আপাতত সবগুলো অঙ্গপ্রত্যঙ্গের তথ্য নেওয়া হচ্ছে না।

জানা গেছে, গত অক্টোবর থেকে আমেরিকা হতে কেনা ১০টি মেশিনে এনআইডি’র স্মার্টকার্ড তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রতিমাসে ৫০ লাখ কার্ড তৈরির ক্ষমতা রয়েছে এসব মেশিনের। প্রতি ঘণ্টায় একটি মেশিনে ৯৫০টি কার্ড উত্পাদন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজধানীর অধিকাংশ কার্ড তৈরি শেষ হয়েছে। পাশাপাশি ২০১৪-১৫ সালে হালনাগাদে যারা ভোটার হয়েছেন, তাদের কার্ড তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। কার্ড বিতরণের সময় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭৫টি ক্যাম্প স্থাপন করবে কমিশন। ওই ক্যাম্প থেকে প্রতিদিন দুই লাখ ভোটারকে কাঙ্ক্ষিত স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে। দেশে বর্তমানে ১০ কোটির মতো ভোটার রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ কোটি ২০ লাখের মতো নাগরিককে লেমিনেটেড করা জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ করা হয়েছে। ২০১৪ ও ১৫ সালে হালনাগাদে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নাগরিকদের এখনও কোনও ধরনের কার্ড দেওয়া হয়নি। তিন স্তরে ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সংবলিত প্রতি স্মার্টকার্ড তৈরিতে ইসিকে প্রায় ২ ডলার খরচ করতে হচ্ছে, যা বিনামূল্যে নাগরিকদের দেওয়া হবে। এরপর নবায়ন, হারানো কার্ড উত্তোলন বা সংশোধনের জন্য ইসি নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে।

এ কার্ডটি ১০ বছরের জন্য তৈরি হচ্ছে বলে গত বছরের ৩ আগস্ট ইসির প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানানো হয়েছিল। এ কার্ড ২০১৬ সালের জুনে ভোটারদের হাতে পৌঁছাবে বলেও ওই সময় ইসির প্রতিনিধিরা জানিয়েছিলেন। তবে, নির্ধারিত সময়ের পর দুই মাস চলেও গেলেও এখনও কার্ড বিতরণ কার্যক্রমই শুরু হয়নি।

এই স্মার্টকার্ড ব্যবহারে ২৫ ধরনের সেবা গ্রহণ করা যাবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, চাকরির জন্য আবেদন, ভোটার শনাক্তকরণ, ব্যাংকহিসাব খোলা, পাসপোর্ট তৈরি, ই-গভর্নেন্স ও ই-পাসপোর্ট সেবা। এছাড়া স্মার্টকার্ডটি অনলাইনে ও অফলাইনে দু’ভাবেই ভেরিফিকেশন করা যাবে। এতে নাগরিকের সব তথ্য সংবলিত মাইক্রোচিপস থাকবে। বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর ইনহ্যান্স একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের জুলাইয়ে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৭৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা। পাঁচবছর ব্যাপী প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালের জুনে। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র স্মার্টকার্ড প্রদান ও বিতরণ প্রকল্পের মেয়াদ ১৮ মাস বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।
ইএইচ/এবি/

আরও পড়ুন
কেরির ঢাকা সফরের হাইলাইটস

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
পানিতে ডুবে ভাইবোনসহ ৩ শিশুর মৃত্যু
পানিতে ডুবে ভাইবোনসহ ৩ শিশুর মৃত্যু
‘এমপি হতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলবো, এটুকু অন্যায় করবো-ই’
‘এমপি হতে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, এটা তুলবো, এটুকু অন্যায় করবো-ই’
ইডি হেফাজতে আরও ৪ দিন কেজরিওয়াল
ইডি হেফাজতে আরও ৪ দিন কেজরিওয়াল
ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী উন্নয়ন ফোরামের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী উন্নয়ন ফোরামের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি