সাত ঘণ্টার বাংলাদেশ সফরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সবার মন জয় করে দেশে ফিরলেন। বাংলাদেশে নেমেই তিনি প্রথমে হাজির হন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় হয়ে যান রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে। এরপর বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত করে বিকাল সাড়ে ৫টার কিছু পরে ইতি টানেন সংক্ষিপ্ত সফরের। পুরো সময়জুড়ে বাংলাদেশকে দেখার এবং বাংলাদেশকে নিয়ে তার অনুভূতি দেখে মনে হবে, তিনি এলেন, দেখলেন এবং সবার মন জয় করেই ফিরলেন।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গেলে কেরিকে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।
সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জন কেরি। সেখানে পরিদর্শনকালে তিনি পরিদর্শন বইয়ে নিজের অনুভূতির কথা লেখেন।
এরই মাঝে এক সময় বাংলাদেশ সফর নিয়ে টুইট করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। একটি টুইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের ছবিও পোস্ট করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি তাকে জাদুঘরটি ঘুরিয়ে দেখান। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের ছবি পোস্ট করে জন কেরি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের অসাধারণ অগ্রগতির ইতিহাস রয়েছে। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনন্দিত।’ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে সরাসরি তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশ্যে।
এই সফরের আগে কেরির দফতর এক বিবৃতিতে জানায়, সফরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। তিনিও একসঙ্গে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা কথা জানিয়ে দিলেন বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের খাতায়।
এরপর তিনি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে। বৈঠক শেষে রাজধানীর এডওয়ার্ড এম কেনেডি সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস অ্যান্ড আর্টস (ইএমকে সেন্টার) মিলনায়তনে বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গেও সাক্ষাত করেন জন কেরি। সেখানে ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠক বিকাল ৪টা ৩৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে শুরু হয়। সেখানে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
এরপর সফর শেষে জন কেরি ঢাকা ত্যাগ করেন। তিনি দিল্লির উদ্দেশে বিশেষ বিমান নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার পর ঢাকা ত্যাগ করেন। পররাষ্ট্রসচিব এম শহীদুল হক তাকে বিমানবন্দরে বিদায় জানান। ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সফরের চার বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন।
/ইউআই/এআরএল/
আরও পড়ুন: