X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিল সংসদে পাস

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৮ ডিসেম্বর ২০১৬, ২০:৩৯আপডেট : ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:১০

জাতীয় সংসদ একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কার্যক্রম পাশাপাশি অব্যাহত রাখতে ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক (সংশোধন) বিল-২০১৬’ সংসদে পাস হয়েছে। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিল পাসের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশাল একটি জনগোষ্ঠীতে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে তারা আইনটি সংশোধনীর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

এর আগে গত মঙ্গলবার বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন প্রতিমন্ত্রী মান্নান। পরে বিলটি পরীক্ষা করে একদিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক আইনের ৩৯ ধারায় বলা ছিল, ২০১৬ সালের ৩০ জুনের পর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প বিলুপ্ত হবে। বিলুপ্ত প্রকল্পের সব সম্পদ, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, অর্থ, কর্মসূচি এবং দায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের হাতে চলে যাবে।

এই আইন সংশোধন না করেই গত ২৫ অক্টোবর ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের মেয়াদ চার বছর বাড়িয়ে আট হাজার ১০ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

সংসদে পাস হওয়া বিলে ৩০ জুনের ওই সময় সীমা বাদ দিয়ে সরকার নির্ধারিত তারিখে প্রকল্পটি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের হাতে চলে যাবে বলে বিধান রাখা হয়েছে।

বিলটি পাসের আগে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্যরা দাবি করেন, সরকার ভুল করে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোতে আইনের সংশোধনী এনেছে। তারা বিলটি এক মাসের সময় নিয়ে জনমত যাচাই করারও দাবি করেন।

জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাবটি ভোটে দেওয়ার আগে বিরোধী দলীয় সদস্যদের কথার জবাব দেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা ভুল করে এটা করিনি। আইনে রয়েছে ৩০জুন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে এই প্রকল্পের প্রবল আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তারা এই এই প্রকল্প অব্যাহত রাখার পক্ষে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা ‍বৃদ্ধির চিন্তা থেকেই ওই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। সমগ্র বাংলাদেশে সমিতি না হওয়ায় বিশাল জনগোষ্ঠীকে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতেই আমরা ‍দুটি প্রকল্প একইসঙ্গ অব্যাহত রাখাই উদ্যোগ নিয়েছি। বিশাল জনগোষ্ঠীকে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি করতে এই সংশোধনী আনা হয়েছে। ফলে একইসঙ্গে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কার্যক্রম চলবে আবার প্রকল্পও অব্যাহত থাকবে।

বিলটির বিষয়ে জাতীয় পার্টির জনমত যাচাইয়ের দাবির জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনমতের চাপেই আমরা এই সংশোধনীটি আনা হয়েছে। জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে এই সংসদে অনেক সদস্যও এটা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন। কাজেই এখানে জনমত যাচাইয়ের প্রয়োজনটা আসছে কেন?’

সমন্বিত গ্রাম উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিটি বাড়িকে অর্থনৈতিক কার্যাবলির কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে গড়ে তোলার প্রয়াসে ১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পটি নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। 

২০০৯ থেকে শুরু করে ২০১৪ সালে শেষের কথা থাকলেও পরে ব্যয় ১ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকায় উন্নীত করে মেয়াদ ২০১৬ সালে জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

এরই মধ্যে ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ ২০১৬ সালের জুনে বিলুপ্তির বিধান রেখে ২০১৪ সালের ২ জুলাই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক বিল সংসদে পাস হয়।এবার প্রকল্পটি বিলুপ্তির সুনির্দিষ্ট সময়ের বিধান বাতিল করে সংসদে সংশোধনী বিলটি পাস করা হলো।

বিলে আরও বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন ব্যাংকের সঙ্গে নিবন্ধিত সমিতির ক্ষেত্রে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি আইন-২০০৬ এর বিধানগুলো প্রযোজ্য হবে না।

বিলে আরও বলা হয়েছে, এটি চলতি বছরের ৩০ জুন তারিখে কার্যকর হয়েছে গণ্য হবে। ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার সমিতি ব্যাংকের নামে এবং বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে বলেও বিধান রাখা হয়েছে।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী মান্নান বলেন, ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক সংশোধন আইন’ প্রণয়নের ফলে দেশের গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ, তাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ নারীর ক্ষমতায়ন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য গ্রাম সংগঠন সৃজন, তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান, তহবিলের জোগান এবং ঋণদানের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে ‘একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প’ এবং ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।

বিআইডিএস সংসদে উত্থাপন

এর আগে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিল-২০১৬’ সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিলটি ৩০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

১৯৭৪ সালের এ সংক্রান্ত আইন জারি করা হয়। পরে ১৯৮৪ সালের সামরিক আমলে এর সংশোধন করা হয়। সামরিক আমলে জারি করা অধ্যাদেশটি বাতিল করে নতুন করে আইন করার জন্য বিলটি আনা হয়েছে।

 ১৯৫৭ সালে একটি আইনের বলে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)। তখন এর নাম ছিল পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট ইকনোমিকস। স্বাধীনতার পর নাম হয় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট ইকনোমিকস। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ অ্যাক্ট নামে নতুন আইন প্রণয়ন করা হয়। এর সংশোধন হয় ১৯৮৪ সালে সামরিক শাসনামলে।

গত বছরের জানুয়ারি মাসে বিলটি মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন পায়।

আগের আইনের মতোই প্রস্তাবিত আইনে পরিকল্পনামন্ত্রীকে বিআইডিএস’র বোর্ডের চেয়ারম্যান রাখা হয়েছে। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ১৩ জন। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হবেন বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত মহাপরিচালক, যিনি তিন বছরের নিযুক্ত হবেন।

/ইএইচএস/ এমএনএইচ/

 

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
হাতিরঝিলে ভাসমান অবস্থায় যুবকের মরদেহ
হাতিরঝিলে ভাসমান অবস্থায় যুবকের মরদেহ
ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রুশ সাংবাদিক নিহত
ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রুশ সাংবাদিক নিহত
নীলফামারীতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিসহ ৩ জন গ্রেফতার
নীলফামারীতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারিসহ ৩ জন গ্রেফতার
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরলো বাংলাদেশ
পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরলো বাংলাদেশ
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি
দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি