X
শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বর্ষবরণে শ্লীলতাহানি: কোনও ভিকটিমের বক্তব্য পায়নি পিবিআই

রাফসান জানি
২১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১২:০৫আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৭:৩৬

পহেলা বৈশাখে শ্লীলতাহানি

২০১৫ সালের পহেলা বৈশাখে শ্লীলতাহানির ঘটনায় কোনও ভিকটিমের বক্তব্যই পায়নি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরই মধ্যে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) এক আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই-এর পরিদর্শক আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের শুধু ভিডিও ফুটেজ দেখে তদন্ত চালাতে হয়েছে। একজন ভিকটিমকেও পাওয়া যায়নি। ফুটেজ দেখে এটা নিশ্চিত যে অনেকে সেখানে অ্যাসল্ট হয়েছেন। কিন্তু লোকলজ্জা বা সামাজিকতার ভয়ে কেউ পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে আসেনি। সেটা পাওয়া গেলে তদন্তের কাজটা আমাদের জন্য আরও সহজ হতো।’

ভিকটিম না পাওয়া গেলেও প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। এ বিষয়ে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দীসহ অন্যান্যদের বক্তব্য আমরা শুনেছি। একাধিকবার তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাই ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামি কামাল ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন।’

তিনি বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে ওই ঘটনার জন্য ৮ জনকে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে একজন কামাল। বাকিদের পরিচয় খুঁজে না পাওয়ায় কামালকেই আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হয়েছে।

কামাল ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আসামি নিজে স্বীকার করেছে সে তখন ঘটনাস্থলে ছিল। তবে শ্লীনতাহানি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এ কাজ করেছে কেউ একথা স্বীকার করে নাকি? ফুটেজে অবশ্য স্পষ্ট দেখা গেছে, সে নারীদের শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেছে।’

গ্রেফতারকৃত কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে কি কারণে এসেছিলেন তা জানতে চাইলে পিবিআই এর এই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘কেউ তো আর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্য নিয়ে আসে না। সেও অন্যান্যদের মতো বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে এসেছিল। তবে একাই এসেছিল। পরবর্তীতে সে ভিড়ের মধ্যে এ অপকর্ম ঘটায়।’  

তিনি বলেন, এই মূহুর্তে একজনকে গ্রেফতার থাকায় শুধু তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭ জনকে পাওয়া গেলে পরবর্তীতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হবে।

বাকি সাতজনকে গ্রেফতারের ব্যাপারে পিবিআই-এর কর্মকর্তা বলেন, ‘লাখ-লাখ মানুষের মাঝে এই সাতজনকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আমরা তাদের গ্রেফতার করতে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকে জানিয়েছি। এছাড়া সোর্সদের কাছে প্রকাশিত ছবিগুলো পাঠানো হয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমেরও সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

২০১৫ সালের ১৪ এপিল (পহেলা বৈশাখ) সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি ফটকে ভিড়ের মধ্যে শ্লীলতাহানির শিকার হন নারীরা। ভিড়ের মধ্যে বেশ কয়েকজন যুবক এই শ্লীলতাহানি ঘটায়। পরদিন ১৫ এপ্রিল অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন শাহবাগ থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ। এরপর ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শ্লীলতাহানির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আট যুবকের ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। একই বছরের ১৭ মে আইজিপি এই আটজনকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।

জড়িতদের কারও হদিস না পেয়ে ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্ষবরণে যৌন হয়রানির ঘটনা গোপন ও প্রকাশ্য তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে চিহ্নিত ৮ উত্যক্তকারীকে গ্রেফতার করা যায়নি।  চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি এ মামলায় কামাল হোসেনকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। একজন গ্রেফতারের পর ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার ডিবি পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

গত ১৮ জুলাই হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন নেয় কামাল। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।

/এসটি/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কেউ হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী
কেউ হতাশ হবেন না: প্রধানমন্ত্রী
বিশ্বকাপ ফিরছে ব্রাজিলে
বিশ্বকাপ ফিরছে ব্রাজিলে
৮১তম জন্মদিনে একক বক্তৃতা দেবেন মেনন
৮১তম জন্মদিনে একক বক্তৃতা দেবেন মেনন
শরীফার গল্প ফেরাতে প্রতিবাদ করবে উদীচী
শরীফার গল্প ফেরাতে প্রতিবাদ করবে উদীচী
সর্বাধিক পঠিত
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
সিলেটে বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
জাহাজে ওঠার পর কোরআনের সুরা শুনিয়ে দস্যুদের নিবৃত্ত করা হয়
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
এমপিও আবেদন সরাসরি অধিদফতরে পাঠানো যাবে না
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আসতে পারে আইনি ব্যবস্থা
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বিতর্ক
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বিতর্ক