রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলা ফটক থেকে মিছিল বের হয়। মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিকউদ্দিন আহমদ, আবদুল জব্বার, আবুল বরকত, শফিউর রহমান, আবদুস সালাম। অনেক শহীদের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঐতিহাসিক এ ফটকটি সংস্কারের মাধ্যমে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখন তা পড়ে আছে অবহেলা আর অনাদরে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, ফটকের প্রবেশমুখটি বন্ধ। সামনে কয়েকটি রিকশা ও মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে আছে। ফুটপাথে কয়েকটি দোকানে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। রয়েছে চা-সিগারেটের দোকানও। দেখে বোঝার উপায় নেই, এখান থেকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল বের হয়েছিল। যে মিছিল পাল্টে দিয়েছিল এদেশের ইতিহাস।
স্থানীয় দোকানদার ও হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব দোকান দীর্ঘদিন ধরে চলছে। স্থানীয় ছাত্রনেতা ও পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে চালানো এসব দোকান সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে উচ্ছেদ করে। কিন্তু কয়েক দিন পরই আবার আগের মতো ফুটপাথ দখল করে বসে যায়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ প্রশাসনের অভিযোগ, সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সদিচ্ছার কারণে ফটকের প্রবেশমুখটি দখলমুক্ত হচ্ছে না। ফুটপাথ ও জরুরি বিভাগের সামনের অংশ থেকে হকার উচ্ছেদ করার জন্য সিটি করপোরেশনকে অনুরোধ করা হলেও স্থায়ী কোনও সমাধান হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক খাজা আবদুল গফুর।
তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশন ও অন্যদের সহায়তায় ভাষা শহীদদের স্মৃতি বিজড়িত ফটকটি সংরক্ষণ করেছি। এটার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করতে ভিতরের অংশে ফোয়ারাও তৈরি করেছি। ফটকটি অবশ্য বন্ধ রাখা হয়েছে, কারণ পাশেই আরেকটি বড় ফটক রয়েছে। সেটা খোলা থাকায় এই ফটক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কোনও শুটিং বা সাংবাদিকদের ফুটেজের প্রয়োজনে এটা খুলে দেওয়া হয়।’
এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করি। কিন্তু পরে আবার হকাররা চলে আসে। উচ্ছেদ অভিযান একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এটি নিয়মিত না করলে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ সম্ভব হয় না।
আরজে/এএআর/