X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ফেসবুকজুড়ে একুশের গান, একুশই প্রাণ

উদিসা ইসলাম
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১৫:৩৩আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০৮:৪৮

ফেসবুকজুড়ে একুশের গান, একুশই প্রাণ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে আজ মঙ্গলবার প্রথম প্রহর থেকেই একুশ স্মরণে স্ট্যাটাস ও ছবি শেয়ার করছেন অনেকে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে একুশের গান ও কবিতার পাশাপাশি বেছে নিচ্ছেন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ছবি।

‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ অঙ্গীকার চেতনায় ধারণ করে মহান ভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে গানে ও কবিতায় ফেসবুকের ওয়াল সাজিয়ে তুলেছেন অনেকে। সবারই ওয়ালে ভেসে উঠছে— একুশের সেই মিছিল, সবার মাতৃভাষার সমানাধিকার, একুশ আমার বর্ণমালা, যেন হারিয়ে না যায় চেতনা, বাংলা ভাষা পাক রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রভৃতি।

ফেসবুকে হুমায়রা চৌধুরী নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘১৯৫২ সালে মেয়েদের প্রথম যে গ্রুপটা ১৪৪ ধারা ভেঙেছিলো, তার মধ্যে শামসুন্নাহার ওরফে জুন্নুর খালা ছিলেন। আর ওদিকে ছিলেন মির্জার দাদা ডা. মির্জা, যিনি পরবর্তীতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল পর্যন্ত হয়েছিলেন। আমাদের পরিবারের মেয়েরা দেশের জন্য সংগ্রামে নিজেদের জড়িয়েছিলেন। আর ছেলেরা তো ছিলেনই। তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। সেই রক্ত বয়ে বেড়াচ্ছি ভাবলে নিজের কাছেই দেশের জন্য জীবন দিতে ইচ্ছে করে! রক্ত, পরম্পরা— আসলেই কথা বলে।

এদিকে পরম্পরার কথা বলতে গিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কাবেরী গায়েন। তিনি ফেসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন ‘…আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কোনও সন্তান বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেনি। তাদের মধ্যে চারজন বাংলা বলতে পারে, একজন ভালো লিখতে পারতো ছোটবেলায়, এখন কী অবস্থা জানি না। বাংলায় লেখে না, সেটা জানি। আর কেউ বাংলায় লিখতে পারে কিনা আমার জানা নেই। এরাও লিখছে। শুধু প্রবন্ধ নয়, গল্প-কবিতাও। কিন্তু ইংরেজি ভাষায়। অন্যরা বাংলা শেখেনি। আমি জানি না, আমার বন্ধুবান্ধবদের ছেলেমেয়েদের অবস্থাটা কী। সবার ছেলেমেয়েকেই তো প্রায়ই দেখি ইংরেজি মাধ্যমে পড়াচ্ছেন। অবস্থা খুব ভিন্ন হওয়ার কথা না। …আমাদের সন্তানরা পড়বে ইংরেজি মাধ্যমে, লিখবে ইংরেজি মাধ্যমে, তাহলে বাংলা ভাষার বিকাশ হবে কীভাবে?’

কাবেরী গায়েন আরও লিখেছেন, ‘... একুশ এলে মাতৃভাষার প্রতি যত দরদই দেখাই আমরা, ভেতরে আসলে ভাষাটাকে কতোটুকু ভালোবাসি তা নিয়ে আমার নিজেরই সন্দেহ হয়। সন্তান বাংলা ঠিকভাবে পারে না, সেজন্য কোনও মা-বাবাকে অস্থির হতে দেখি না, কিন্তু ইংরেজি কোনও বানান ভুল করলেই মা-বাবারা যেন মর্মে মরে যান!’

ফেসবুকজুড়ে একুশের গান, একুশই প্রাণ

দেশের অন্য জাতিগোষ্ঠী নিজ ভাষায় পড়া ও বলার অধিকার পাবে, এই প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছেন অনেকে। লেখক আসমা বীথি ম্রো শিশুদের একটি স্কুলের ছবি আপলোড করে লিখেছেন, ‘আমি চাই সকল মাতৃভাষা সম্মানের হয়ে উঠুক। সব জাতিগোষ্ঠীর ন্যায্য অধিকার রক্ষা হোক। ভিন্নমতের অধিকারীদের জীবন সুনিশ্চিত হোক।’

ফেসবুকে অনেকেই শৈশবে একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের স্মৃতি রোমন্থন করেছেন। তাদেরই একজন মোহম্মদ সাঈফ উদ্দিন। তিনি লিখেছেন, ‘স্কুলে পড়ার সময় আমাদের জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি সবসময়ই এক বিশেষ দিন ছিল। সপ্তাহখানেক আগে থেকে শুরু হতো প্রস্তুতি। ২০ ফেব্রুয়ারি স্কুল ছুটি হলে শুরু হতো মূল কাজ। পুরো এলাকা ঘুরে ঘুরে দেয়াল ভেঙে ইট সংগ্রহ করতাম। এরপর মাটির প্রলেপ দিয়ে নিজেরাই বানাতাম শহীদ মিনার। রঙিন কাগজ কেটে বানাতাম কাগজের ঝুল। সব বানানো শেষ হতো রাত ১০টার মধ্যে। এরপর এলাকার বিভিন্ন বাগান থেকে চুরি করে ফুল সংগ্রহ করতাম। রাত ১২টা বাজলেই নিজেদের বানানো শহীদ মিনারে ফুল দিতাম। এতোকিছু বলার কারণ হলো আমরা সেই সময়ে খুব বেশি কিছু না বুঝলেও অন্তরে আমার ভাষাকে লালন করতাম। যেভাবে এখন চলছে তাতে একুশে ডিজে পার্টি হয়তো খুব বেশি দূরে নয়! মোদের গরব, মোদের আশা আ-মরি বাংলা ভাষা।’







ফেসবুকজুড়ে একুশের গান, একুশই প্রাণ

আবৃত্তিকার রূপা চক্রবর্তী একটি ছবি শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, “এই ছোট্ট বন্ধুরা মা-বাবার সঙ্গে বেড়াতে এসেছিলো। আবৃত্তি শুনে শান্ত হয়ে বসলো। কে বলবে মিনিট দশেক আগে ওরা ‘বাংলা চাই, বাংলা চাই’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল! পরে আমাদের তিনটি ছড়া আর একটি কৌতুক শুনিয়ে ছবি তুলে তারপর ফিরে গেলো।”

/ইউআই/জেএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা