X
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কের গতিশীলতা ধরে রাখার উদ্যোগ

শেখ শাহরিয়ার জামান
০১ মার্চ ২০১৭, ২৩:০৩আপডেট : ০২ মার্চ ২০১৭, ১১:৫৫

বাংলাদেশ-চীন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঐতিহাসিক বাংলাদেশ সফরের পরে ঢাকা-বেইজিং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে আসা গতি ধরে রাখতে চায় দুই দেশের সরকার। আর তা নিশ্চিত করতে দুই দেশের মধ্যে চলছে নানা ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে চীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সম্মেলন ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’। ঢাকা-বেইজিং সম্পর্কের গতি ধরে রাখতে এই সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রভাবশালী ছয় মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে চীন।
জিনপিংয়ের ওই সফরে যেসব বিষয় নিয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রে দুই দেশ একমত হয়েছে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকার খাতগুলোকে বেছে নিয়ে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
এছাড়া, এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের পর ঢাকা-বেইজিং পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে চলছে আলোচনা। প্রায় একই সময়ে দুই দেশের মধ্যে সুমদ্র অর্থনীতি নিয়ে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী সহযোগিতার ক্ষেত্র নির্ধারণের জন্য প্রথম বৈঠকটি আয়োজনের বিষয়টিও আলোচনা করা হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বিষয়গুলো নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক এবং চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিংছিয়াংয়ের মধ্যে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আলোচনা হয়। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের বর্তমান সম্পর্কের গভীরতা ও প্রগাঢ়তা আমরা ধরে রাখতে চাই। সে লক্ষ্যে আমাদের মধ্যে যোগাযোগের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।’

উল্লেখ্য, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত বছরের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ সফর করেন। সেসময় ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়। ওই সফরে চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের জন্য ২৪ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহযোগিতার অঙ্গীকার করা হয়। এছাড়া বেসরকারি খাতে ১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ওই সংক্ষিপ্ত সফরে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার সফরের উদ্দেশ্য ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে গতি ধরে রাখা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করা।’

চীনের প্রেসিডেন্টের সফরে দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন একটি উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর নতুন নামকরণ করা হয় ‘কৌশলগত সম্পর্ক’। ওই সফরে ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ ও সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে আরও দু’টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চীন তার ব্যবসা-বাণিজ্যের কর্তৃত্ব ধরে রাখার জন্য ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ঢাকা ও বেইজিং যৌথভাবে এ উদ্যোগকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে।’

‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ উদ্যোগকে আরও জনপ্রিয় করতে চীন এ বছরের মাঝামাঝিতে বড় একটি সম্মেলনের আয়োজন করছে। এতে অর্থমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে যে চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করা হয়েছিল, সেগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি কমিটি আছে। একই কমিটি চীনের রাষ্ট্রপতির সফরের অগ্রগতি বর্তমানে পর্যালোচনা করছে। দুই উচ্চপর্যায়ের সফরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য নতুন কোনও ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা নিয়ে আমরা আলোচনা করছি যেন করা যায়।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এপ্রিলে এ বৈঠক আয়োজনের আলোচনা করছে দুই দেশ।’

এদিকে, ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সুমদ্র সীমানা সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার পরে সুমদ্র সম্পদ টেকসই পদ্ধতিতে আহরণ এবং ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন দেশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে সরকার। চীন, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এ বিষয়ে আমাদের সমঝোতা স্মারক রয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সুমদ্র অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারকে জাহাজ নির্মাণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতার উল্লেখ আছে। সুমদ্রে যে বিশাল সম্পদ আছে সে সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান খুবই সীমিত এবং এ জ্ঞান বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের গবেষণা চালানোর জন্য সহায়তার কথা বলা হয়েছে সমঝোতা স্মারকে।’

এছাড়া সুমদ্রে ঝড় বা অন্য কোনও দুর্যোগের কারণে কোনও জাহাজ ও নাবিকরা বিপদে পড়লে উদ্ধার অভিযান চালানোর ক্ষমতা বাংলাদেশের অত্যন্ত সীমিত। সমঝোতা স্মারকে উদ্ধার অভিযান সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

/টিআর/

আরও পড়ুন: যে কারণে পিছু হটলেন শাজাহান খান

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন ইজিবাইকচালক
কুড়িয়ে পাওয়া সাড়ে চার লাখ টাকা ফিরিয়ে দিলেন ইজিবাইকচালক
সরকার ক্ষমতায় থাকতে ভোটের ওপর নির্ভর করে না: সাকি
সরকার ক্ষমতায় থাকতে ভোটের ওপর নির্ভর করে না: সাকি
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
ঢাকার পর্দায় আবার গডজিলা-কিং কং দ্বৈরথ
বিপজ্জনক অবস্থা থেকে ফিরেছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল
বিপজ্জনক অবস্থা থেকে ফিরেছেন খালেদা জিয়া: মির্জা ফখরুল
সর্বাধিক পঠিত
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
যেভাবে মুদ্রা পাচারে জড়িত ব্যাংকাররা
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
এবার চীনে আগ্রহ বিএনপির
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
কারাগারে যেভাবে সেহরি-ইফতার করেন কয়েদিরা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
আয়বহির্ভূত সম্পদ: সাবেক এমপির পিএস ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি
কুড়িগ্রাম আসছেন ভুটানের রাজা, সমৃদ্ধির হাতছানি