X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাহজালালে ১ বছরেও প্রত্যাহার হয়নি যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা

চৌধুরী আকবর হোসেন
২৮ মার্চ ২০১৭, ০১:২০আপডেট : ২৮ মার্চ ২০১৭, ০৭:৩৬

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পার করেছে ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ‘রেড লাইন অ্যাসিউরড সিকিউরিটি’। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সরাসরি কার্গো ফ্লাইটে নিষেধাজ্ঞা জারি করা যুক্তরাজ্যের পরামর্শেই শাহজালালে ২ বছরের জন্য দায়িত্ব পায় ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানটি। চুক্তির একবছর পেরিয়ে গেলেও কার্গো পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়নি যুক্তরাজ্য, বরং চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তৎপর তারা। তবে রেড লাইনের সঙ্গে চুক্তির পর বিমানবন্দরে কি অগ্রগতি হয়েছে সে বিষয়ে মুখ খুলছেন না সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তারা।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরি কার্গো পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে যুক্তরাজ্য। পরবর্তীতে নিরাপত্তা পরামর্শক, প্রশিক্ষণের জন্য গত বছর ২১ মার্চ যুক্তরাজ্যের রেড লাইন অ্যাসিউরড সিকিউরিটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি।

সূত্র জানায়, গত একবছরে রেড লাইন সিভিল এভিয়েশন নিরাপত্তা কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজনের পরামর্শ দেয়। ইতিমধ্যে রেড লাইনের পরামর্শে আরেক ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান ‘স্মিথ ডিটেকশন’ থেকে কেনা হয়েছে বিস্ফোরক শনাক্তকরণ যন্ত্র। এসব যন্ত্র শাহজালালে বসানোর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি রেডলাইনও চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে সিভিল এভিয়েশনে প্রস্তাব দিয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) ব্রিটিশ একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় মন্ত্রণালয়, সিভিল এভিয়েশনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবে। এর আগে, গত বছরের ১৬ নভেম্বর শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ পরিদর্শন করে ব্রিটিশ প্রতিনিধি দল। পরিদর্শন শেষে প্রতিনিধি দল মতামত দেয়, বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন। বিশেষ করে কার্গো ভিলেজ থেকে পণ্য উড়োজাহাজে উঠানোর সময়টি এখনও ঝুঁকিমুক্ত নয়। রেড লাইনের মাধ্যমে কর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি প্রশংসায় এলেও অভিযোগ রয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষিত কর্মীরা ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করছে না।

রেড লাইনের পরামর্শে আনা নিরপত্তা সরঞ্জাম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বার্ষিক প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে কার্গো পরিবহন বন্ধ থাকায় গত অর্থবছরে এ খাত থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আয় কমে যায়। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে কার্গো হোল্ডের মাধ্যমে বিমানের আয় হয়েছে ৩১৫ কোটি টাকা। যা ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ছিল ৩৯২ কোটি টাকা। বর্তমানে কার্গো সেবার পরিধি বাড়াতে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ ও এমিরেটস এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বিমান।

রেড লাইন সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৩ মার্চ থেকে সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা কর্মকর্তা, ম্যানেজারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে রেড লাইন। এ পর্যন্ত ১ হাজার ২৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষক হিসেবে ১০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে রেডলাইন। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যগামী যাত্রীদেরও রেড লাইনের তত্ত্বাবধানে সরাসরি তল্লাশি করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেড লাইনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচিক) আমাদেরকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে মানা করেছে। ফলে তাদের অনুমতি ছাড়া বিশেষ কোনও তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়।’

কার্গো পরিবহনে বিমান সহায়তা নিচ্ছে ইতিহাস ও এমিরেটস এয়ারলাইন্সের সূত্র জানায়, শাহজালালে নতুন করে বসানোর জন্য উজোজাহাজের হোল্ডে রাখার মতো ভারি ব্যাগ তল্লাশির জন্য ডুয়েল ভিউ এক্সরে স্ক্যানিং মেশিন ৮টি, হ্যান্ড ব্যাগ তল্লাশির জন্য ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন ১৪টি, লিকুয়িড এক্সপ্লোসিভ (explosives) ডিটাকশন সিস্টেম (এলইডিএস) ৬টি, আন্ডার ভিহিকল স্ক্যানিং সিস্টেম (ইউভিএসএস) ৯টি, ফ্যাপ বেরিয়ার (Barrier) গেট উইথ কার্ড রিডার ৪টি, বেরিয়ার গেট উইথ আরএফআইডি কার্ড রিডার ৫টি, এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস) ২টি, এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন (ইটিডি) ৪টি কেনা হয়েছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের এসব যন্ত্রপাতি পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

জানা গেছে, বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বিশেষ প্রকল্প গত বছর ৮ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। দেশের অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য জরুরি সরঞ্জাম সরবরাহ ও সংস্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয় ৮৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

এ প্রসঙ্গে জানতে সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবুল হাসনাত মো. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিট্রিশ একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসেছে। তারা আগামীকাল (২৮ মার্চ) সিভিল এভিয়েশনসহ সশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করবে।’

রেড লাইন প্রসঙ্গে আবুল হাসনাত মো. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রেডলাইন আমাদের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। রেড লাইনের সঙ্গে দু’বছরের চুক্তি, সেসময় পর্যন্ত তারা কাজ করবে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

/এমও/এমপি/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
প্রতিবন্ধী শিল্পীদের আয়োজনে মঞ্চস্থ হলো ‘সার্কাস সার্কাস’ নাটক
‘শো মাস্ট গো অন’
চিকিৎসা সুরক্ষা আইন জরুরি‘শো মাস্ট গো অন’
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছাদে আম পাড়তে গিয়ে নিচে পড়ে শিশুর মৃত্যু
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
বেয়ারস্টো-শশাঙ্কে হেসেখেলে ২৬২ রান করে জিতলো পাঞ্জাব
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!