মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার শিগগির তা কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে টাওয়ার থেকে কী পরিমাণ তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটে তার মাত্রা নিরুপণে তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংস্থাগুলো হলো- আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আয়োনাইজিং রেডিয়েশন প্রটেকশনের (আইসিএনআইআরপি)। নির্দেশনায় আগামী ১০ এপ্রিলের মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতির প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো.সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তা আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।
গত ২২ মার্চ সেলফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত বিকিরণে মানব স্বাস্থ্যর ক্ষতিকর মর্মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা এক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মোবাইলফোনের টাওয়ারে রেডিয়েশনের মাত্রা অনেক বেশি অর্থাৎ উচ্চমাত্রার। যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তারা এটি বিটিআরসিকে জানিয়েছেন, যেন রেডিয়েশনের মাত্রা কমাতে ব্যবস্থা নেয়। আজ বিষয়টি নিয়ে আদালত আদেশে বলেছেন, মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলোর রেডিয়েশনের মাত্রা কমিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুযায়ী করতে হবে।’
২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। ওই সময় হাইকোর্ট রেডিয়েশনের মাত্রা এবং এর স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এছাড়াও সাত দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করতে স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই কমিটিতে বিজ্ঞানী, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অধ্যাপক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং আণবিক শক্তি কমিশনের প্রতিনিধিরা থাকবেন। দেশের বিভিন্নস্থানে স্থাপিত মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারগুলো থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চান হাইকোর্ট।
/এমটি/ইউআই/এসএনএইচ/