বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাঁতারুরা দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘একদিন বাংলাদেশের ক্ষুদে সাঁতারুরা বিশ্বসেরা হবে। সম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত ১২তম এস এ গেমস-এ মাহফুজা খাতুন সাঁতারে মহিলাদের ১০০ মিটার ও ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকে ২টি স্বর্ণ পদক জিতেছেন। এছাড়া এই গেমস-এ আরও মোট ১৭টি পদক অর্জন করে আমাদের খেলোয়াড়রা বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেন।’ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে নৌবাহিনীর সদর দফতরের সুইমিংপুল কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে যাদের সাঁতার নৈপুণ্য দেখলাম, তাতে আমি অত্যন্ত আশাবাদী, এখান থেকেই একদিন আমাদের বিশ্বমানের প্রতিযোগিরা উঠে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘‘দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সুইমার ট্যালেন্ট হান্ট-এ নতুন প্রজন্মের দক্ষ সাঁতারুদের সমাবেশ ঘটেছে। গত বছর অক্টোবর মাসে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান অ্যাকুয়াটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় আমাদের সাঁতারুরা ২টি স্বর্ণ, ২টি রৌপ্যসহ ৯টি পদক পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন।’’
বুধবার রাতে নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে পরাজিত করে বাংলাদেশের ওয়ানডে র্যাংকিং ৬ নম্বরে উঠে আসায় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় ও সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।
খেলাধূলার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘খেলাধূলার মধ্যদিয়ে যেমনি আমাদের ছেলে-মেয়েরা শারীরিকভাবে সুগঠিত হবে, তেমনি মনের দিক থেকেও উদার হবে, মানসিক শক্তি পাবে। তাদের ভেতরে আত্মবিশ্বাস জেগে উঠবে।’
বক্তব্যের শুরুতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী। তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের ঐক্যের প্রতীক ‘জয় বাংলা’ স্লোগানটি তারই একটি কবিতা থেকে নেওয়া।’’
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বয়সভিত্তিক শ্রেষ্ঠ ৮ জন ক্রীড়াবিদের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকার চেক দেন।
নৌবাহিনী সদর দফতরে সুইমিং পুল কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত সমাপনী দিনের প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় নির্বাচিত সেরা সাঁতারুরা। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্রতিভাবান সাঁতারুদের খুঁজে বের করার লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ১৯ মে ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
প্রথম পর্বে দেশের ৬৪ জেলার ও ৪৮৯টি উপজেলা থেকে ২৫ হাজার সাঁতারু অংশগ্রহণ করে। তাদের মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের জন্য ১২৭৫ জন নির্বাচিত হয়। পরবর্তী সময়ে ১ হাজার ২৭৫ জনকে ঢাকায় এনে পুনরায় তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১৬০ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শেষ পর্বে বাংলাদেশে সুইমিং ফেডারেশনের তত্ত্বাবধানে এই সাঁতারুদের ৩ মাস নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হয় সেরা ৬০ জন সাঁতারু। এই সেরা সাঁতারুদের জন্য লেখাপড়াসহ দেশে বিদেশে ৩ বছরব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সুইমিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এমবি সাঈফ। অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সুইমিং ফেডারেশনের সভাপতি ও নৌবাহনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
পিএইচসি/ এমএনএইচ/
