‘বিশ্বজুড়ে যে নাশকতা চলছে তা রুখে দিতে এসময়ে দাদুর (কাজী নজরুল ইসলাম) মতো নির্ভীক ও সাহসী একজন নায়কের খুব দরকার ছিল।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে নাতনী খিলখিল কাজী এ কথা বলেন।
খিলখিল কাজী বলেন, ‘নজরুল ইসলাম বাঙালি জাতির শির চির উন্নত করে গেছেন। তার আদর্শ ছিল মানুষকে ভালবাসা, মানুষের ভালবাসা।’ তবে নজরুলের আদর্শকে জাতীয় জীবনে সঠিকভাবে ধারণে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
জন্মদিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে কবিকে স্মরণ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এসময় বরাবরের মতো কবি পরিবারের পক্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন তার দুই নাতনী খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজী।
প্রতিবারের মতো এবারও বেশ আয়োজনের সঙ্গে পালিত হচ্ছে দিনটি। কবির জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান হয় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। বিকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এছাড়া, আগামীকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় জাতীয় জাদুঘরে নজরুল ইনস্টিটিউটের নজরুল জন্মজয়ন্তীর আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নজরুল আমাদের প্রেমের কবি, যৌবনের কবি, মানবতার কবি, সাম্যের কবি ও জাতীয় কবি। নজরুল প্রতিদিনই আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক। বাঙালির জাতীয় জীবনে বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের মতো তিনি আমাদের প্রতিটি নিঃশ্বাসে ও বিশ্বাসে প্রাসঙ্গিক।’
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। শৈশবেই স্বজন হারানো ‘দুখু মিয়া’ দারিদ্র্য আর সব বাধা ঠেলে একসময় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। ১৯৪২ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমশ বাকশক্তি হারাতে থাকেন কবি। পরবর্তীতে ১৯৭২ এ মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ কবিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কবি নজরুল ইসলামের।
/ইউআই/এমও/