হাওর অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সাফাই গাইলেন পানি সম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। হাওরের ঘটনা নিয়ে তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই ঢালাওভাবে মন্তব্য করা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে প্রকৃত তথ্য না জেনেই রাজনীতির নামে মানুষকে খুশি করতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি ও লুটপাটের কথা বলছে। হাওরে বরাদ্দ হয়েছে ২০ কোটি টাকা। যার মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয়েছে ৯ কোটি। অথচ কোটি কোটি টাকা লুটপাটের কথা বলা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
হাওরের ঘটনা তদন্তে যাওয়া দুর্নীতি দমশন কমিশনের (দুদকের) টিমের প্রতি ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারি একটি প্রতিষ্ঠান সেখানে তদন্তে গেল। তাদের জানানো হল, ইঁদুর গর্ত করার কারণে বাঁধ ভাঙতে পারে। এটা শুনে তারা হেসে উড়িয়ে দিল। প্রত্যেকটি বিষয়ের আলাদা কিছু ধরন রয়েছে। এগুলো না জেনে এভাবে হেসে উড়িয়ে দিলে তো হয় না।’
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বা অনিয়ম হয়নি সেটা আমি বলছি না। যারা চুরি করবে তাদের অবশ্যই আমরা ধরবো। তবে দুর্নীতি হলে সেটা তদন্ত করে বলতে হবে। তদন্ত প্রমাণের আগে মানুষকে খুশি করার রাজনীতি করতে এগুলো বলে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা উচিত নয়।’
মন্ত্রী জানান, হাওর অঞ্চলে ১ হাজার ৪৫৫ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। আর এই দীর্ঘ বাঁধ দেখভালের জন্য মাত্র ১০ জন প্রকৌশলী রয়েছেন।
তবে হাওর অঞ্চলের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পেছনে কারও অনিয়ম, দুর্নীতি বা অবেহলার প্রমাণ পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনও প্রকার অনিয়ম, দুর্নীতি বা কোনও অবহেলার কারণে হাওড়ের বাঁধগুলো ভেঙে গেছে কিনা তা তদন্তে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবে। প্রতিবেদনে কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে পরবর্তী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।’
গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ প্রকল্প বাতিল বিষয়ে বিএনএফ’র আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা ও সফল নেতৃত্বে গঙ্গা চুক্তি হয়েছে। আমরা পানি পাচ্ছি। এই পানির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যারেজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এজন্য আমরা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি করে দিয়েছি। ওই কমিটি পানির সর্বোত্তম ব্যবহারে যেসব সুপারিশ করবে তারপর ঠিক করা হবে এই বিষয়ে কী করা হবে।’
/ইএইচএস/এসটি/