জাতীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে ৮৪ হাজার পুরুষ মুসল্লির পাশাপাশি ৫ হাজার নারী মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। নারীদের জন্য মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে রাখা হয়েছে এ ব্যবস্থা। হাইকোর্টের মাজার গেট দিয়েই ঈদগাহ মাঠে প্রবেশ করতে হবে তাদের। এখানে সবার সুবিধার্থে থাকছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়।
পুরো ঈদগাহ মাঠের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ সংস্থার অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এবারের ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন রাখতে দুই লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ দশমিক ৭৫ বর্গফুট বৃষ্টি সুরক্ষিত তেরপল লাগানো হয়েছে।
এছাড়া ৩১ হাজার ২৬৩ দশমিক ৬১ বর্গফুট সামিয়ানা, ১০০টি ফুলের টব, টিউব বাতি ৭০০টি, বড় ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি ১০০টি, স্ট্যান্ড ফ্যান ১০০টি, সিলিং ফ্যান ৭০০টি, ৬০টি জায়নামাজ, প্রবেশ পথে বাঁশ দিয়ে তৈরি ২ হাজার ২৯৬ দশমিক ২ ফুট লাইন, ৫৪০ বর্গফুট ডিজিটাল ব্যানার, ২টি ডিসপ্লে বোর্ড ও ভিআইপিদের জন্য ১০টি এয়ারকুলার রয়েছে। পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করবে ঢাকা ওয়াসা। এছাড়া বসানো হয়েছে বজ্রপাত নিরোধক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাওয়ার।
ঈদগাহ মাঠে প্রবেশের জন্য বেশকিছু গেট থাকলেও নিরাপত্তার স্বার্থে সেগুলোর মধ্য থেকে তিনটি দিয়ে প্রবেশ করতে হবে মুসল্লিদের। এর মধ্যে একটি গেট ভিভিআইপি ও একটি গেট নারীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি একটি গেট দিয়েই প্রবেশ করতে হবে প্রায় ৮০ হাজার মুসল্লিকে।
এবারের ঈদগাহ মাঠে একসঙ্গে প্রায় ১ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে এতসংখ্যক মুসল্লির জন্য মাত্র একটি ভাসমান ট্রাকে পাঁচটি টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ভিভিআইপির (রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি) জন্য নির্ধারিত। বাকি চারটির মধ্যে পাঁচ হাজার নারী ২টি ও ৭৯ হাজার পুরুষ ব্যবহার করতে পারবেন বাকি ২টি।
এ প্রসঙ্গে সংস্থার অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা বলছে, টয়লেট অত ব্যবহার হয় না। এটা ঠিক যে, ব্যবস্থা আরও বেশি করতে পারলে ভালো হতো।’
ঈদগাহ মাঠের প্রধান গেট দিয়ে প্রবেশের বাঁ-পাশে ওয়াসার পানির পাম্পের সঙ্গে অজুখানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে একসঙ্গে ১৪০ জন মুসল্লি অজু করতে পারবেন। এর মধ্যে ৩৫টি আসন নারীদের জন্য নির্ধারিত। এর পুরো অংশ পর্দা দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। ঈদগাহ মাঠকে মশামুক্ত রাখতে সকাল থেকে পুরো মাঠে চারবার স্প্রে করা হয়েছে। আগামীকাল সকালেও অন্তত দু’বার একইভাবে স্প্রে করা হবে।
এদিকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আর আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে সাড়ে ৮টার পরিবর্তে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের মূল জামাত।
ঈদগাহ মাঠের সার্বিক বিষয় প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা এই ঈদে কোনও নাশকতার আশঙ্কা করছি না। আমাদের পুরো আয়োজন শেষ হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক আছে। আশা করছি, একসঙ্গে ১ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করতে পারবেন।’
/এসএস/জেএইচ/
