বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রকাশ না করার অভিযোগ এনে বরগুনার ইউএনও গাজী তারিক সালমনকে পাঠানো কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব ‘সন্তোষজনক নয়’ বলে বরিশালের তদানীন্তন বিভাগীয় কমিশনার যে চিঠি প্রশাসনিক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে পাঠিয়েছেন তাতেও বঙ্গবন্ধুর নামের বানান ভুল লেখা হয়েছে। গত ১৮ এপ্রিল বরিশালের তদানীন্তন বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস স্বাক্ষরিত ওই মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর পাঠানো হয়। চিঠিতে বঙ্গবন্ধুর নামের বানান লেখা হয়েছে ‘শেখ মুজিবর রহমান’, অথচ জাতির পিতার নামের প্রকৃত বানান হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমান।
০৫.১০.০০০০.০০১.০৫.০১৩.১৬-২২৫ নম্বরের স্মারক সম্বলিত চিঠিতে লেখা আছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রোক্ত স্মারকের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০১৭ এর আমন্ত্রণপত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ ‘মুজিবর’ রহমানের ছবি যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রকাশ না করার বিষয়ে জনাব গাজী তারিক সালমন (১৬৪৬২), উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আগৈলঝাড়া, বরিশালকে ০৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দাখিলের জন্য অনুরোধ করা হলে তিনি লিখিত জবাব দাখিল করেছেন। তাঁর দাখিলকৃত জবাব সন্তোষজনক নয় মর্মে প্রতীয়মান হয়।’
বঙ্গবন্ধুর নামের বানান ভুল বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার মো. গাউস এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অফিস কপিতে নামের বানান ভুল নেই, হয়তো প্রিন্টে ভুল এসেছে। আমি বলতে পারবো না। স্মারক নম্বর বসানো, স্বাক্ষরকৃত কপি অফিস কপিই কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অফিস কপিতে সংশোধন করে দেওয়া হয়েছিল, প্রিন্টে হয়তো ভুল হয়ে থাকবে।’
উল্লেখ্য, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় মো. গাউস পদায়নের কারণে বদলি হয়ে বর্তমানে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
প্রসঙ্গত গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীদের আঁকা চিত্রকর্ম ব্যবহার করে স্বাধীনতা দিবসের কার্ড বানান আগৈলঝাড়ার তৎকালীন ইউএনও গাজী তারিক সালমন। সেখানে এক শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এর বিপরীতে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হলে নির্ধারিত ৭ দিনের মধ্যে তিনি জবাব দেন। এরপর বিভাগীয় কমিশনার জবাব ‘সন্তোষজনক নয়’ উল্লেখ করে ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ সচিব বরাবর ‘অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ নিতে চিঠি দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে গত ৭ জুন মানহানি মামলা করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবায়েদুল্লাহ সাজু। আজ রবিবার বাদী মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত মামলা খারিজ করে দেন।
/টিএন/