X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বাংলাদেশি টেরোরিস্ট’

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৫ আগস্ট ২০১৭, ১৯:২০আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০১৭, ১৯:৫১

একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ (ছবি: সংগৃহীত) বঙ্গবন্ধুর খুনি একেএম মহিউদ্দিন আহমেদের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ হয়ে যাওয়ার পর ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা যেসব কারণে নাকচ হয়, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী তিনি একজন টেরোরিস্ট। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি। তার সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আদালত বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বাংলাদেশি টেরোরিস্ট’।

২০০২ সালের ২৯ মে মহিউদ্দিনের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ করে দেন অভিবাসন-বিষয়ক বিচারক হেনরি পি ইপেমা। ওই রায়ের বিরুদ্ধে মহিউদ্দিন বোর্ড অব ইমিগ্রেশন আপিল আদালতে রিভিউ করেন। রিভিউর আদেশেও আগের রায় বহাল রাখা হয়।

এরপর তিনি ইউএস কোর্ট অব আপিল, নাইন্থ সার্কিটে একটি আবেদন করলে ২০০৫  সালের ১ সেপ্টেম্বর তা খারিজ করে দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব আপিলের পুরো রায়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু’ হিসেবে সম্বোধন করা হয়। মহিউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ক্যুতে কী ভূমিকা রেখেছিলেন, কেন তার রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা নাকচ করা হয়েছে, তারও বিশদ বর্ণনা দেওয়া হয়েছে আদালতের রায়ে।

মহিউদ্দিনের ভূমিকা

যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব আপিলের রায়ে বলা হয়, মেজর বা তার  নিচের পদের ১২ থেকে ২০ জন মিলিটারি অফিসার এবং তাদের দু’টি রেজিমেন্টের ক্যুতে জড়িত ছিল। মহিউদ্দিন ফোর ল্যান্সার স্কোয়াড্রনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

রায়ে বলা হয়, ‘রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার লিখিত আবেদনে মহিউদ্দিন স্বীকার করেছেন, তার দায়িত্ব ছিল শেখ মুজিবের বাসায় যাওয়ার উত্তর ও পশ্চিম দিকের রাস্তা অবরোধ করে রাখা, যেন বাইরের কেউ ঢুকতে না পারে।’

নিজের রাজনৈতিক আশ্রয় সংক্রান্ত ইন্টারভিউয়ে মহিউদ্দিন বলেছিলেন, সামরিক কর্মকর্তারা ধারণা করেছিলেন প্রেসিডেন্টের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (রক্ষী বাহিনী) বঙ্গবন্ধুকে বাঁচানোর জন্য আসতে পারে। এ কারণে তার দায়িত্ব ছিল তাদের রাস্তায় আটকানো। 

রায়ে বলা হয়, ‘তাদের নিজস্ব জবানবন্দিতে পরিষ্কার যে, মহিউদ্দিন ১৯৭৫ সালের ক্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।’

জাতীয় নিরপাত্তার জন্য হুমকি

রায়ে বলা হয়, ক্যুতে মহিউদ্দিনের অংশ নেওয়ায় এটি বিশ্বাস করার মতো যথেষ্ট কারণ আছে যে, তিনি ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’ রায়ে আরও বলা হয়,  ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত সংজ্ঞা অনুযায়ী মহিউদ্দিনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে একজন টেরোরিস্টের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পূর্ণ মিল আছে।’ 

বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি রাশেদ চৌধুরী একই অপরাধে দোষী, কারণ তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিলেন।

মহিউদ্দিনকে টেরোরিস্ট ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেছেন দেশটির আদালত। একই অপরাধে দোষী হওয়ার কারণে রাশেদ চৌধুরীও যুক্তরাষ্ট্রের সংজ্ঞা অনুযায়ী একজন টেরোরিস্ট এবং দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রে আদালত। এরপরও একজন টেরোরিস্ট হয়েও গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে রাশেদ চৌধুরী রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুবিধা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।

/এমএনএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’