X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা শরণার্থী: চিহ্নিত এলাকায় চলছে ক্যাম্প ও রাস্তা নির্মাণ

জামাল উদ্দিন
১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ০৭:৪৭আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৭:০৭

বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পের পেছনের বর্ধিত এলাকায় রাখা হবে গণহত্যার মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের। এজন্য বন বিভাগের দুই হাজার একর জমি চিহ্নিত করে সেখানে ক্যাম্প স্থাপন ও যাতায়াতের রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত যত রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে এসেছে সেখানে এক জায়গায় তাদের রাখা সম্ভব হবে।

বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই বানাচ্ছে রোহিঙ্গারা (ছবি: ফোকাস বাংলা) তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বন বিভাগের যে জায়গায় শরণার্থী ক্যাম্প স্থাপন করা হচ্ছে তাতে বন্য পশুদের অভয়ারণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া পাহাড় ধসসহ অন্যান্য বিভিন্ন ঝুঁকিও রয়েছে। গত রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতেও বন্য হাতির আক্রমনে উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দু’জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

এদিকে সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে রয়েছে। ১৯৭৮ সাল থেকে মিয়ামনারের সরকারের নির্যাতনে নানা সময় ক্রমাগতভাবে চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন সময় এদের অধিকাংশ ফেরত গেলেও সংহিসতার ঘটনায় তারা আবার বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়।

স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গা শরণার্থী পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়। এরপরই সরকারের নির্দেশে তাদের একজায়গায় রাখার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বালুখালী ও কুতুপালং এলাকায় আগে থেকেই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা থাকছিল। নতুন করে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী আসায় তাদের রাখার জন্যে বালুখালী ক্যাম্প ও কুতুপালং ক্যাম্পের পেছনে বনবিভাগের আরও প্রায় ২ হাজার একর জমি চিহ্নিত করা হয়। যেখানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রাখার কাজ চলছে।

অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প (ছবি: ফোকাস বাংলা) পাশাপাশি চলছে রোহিঙ্গাদের ডাটাবেজ তৈরি ও বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের কাজ। তবে বায়োমেট্রিকের কাজ চলছে খুব ধীরগতিতে। যে প্রক্রিয়ায় কাজ চলছে তাতে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শেষ করতে কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে। সেজন্য দ্রুত এ কাজ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মী নূর খান।

নূর খান বলেন, ‘সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের রাখতে ২ হাজার একর জমি চিহ্নিত করেছেন। সেখানে হয়তো সবাইকে একসঙ্গে রাখা সম্ভব হতে পারে। তবে তার আগে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণ সহায়তা আরও বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।’

আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) থেকে জানানো হয়, গত ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র তিন হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনকে সম্পৃক্ত করার আহ্বানও জানিয়েছে আসক।
তবে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বর্তমানে দু’টি বুথে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন চললেও সেটি ২৫টিতে উন্নীত করা হবে। খুব শিগগিরই সবগুলো বুথে একসঙ্গে এই কার্যক্রম চলবে।’

আট লাখেরও বেশি শরণার্থীকে বালুখালীতে রাখা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার মাঈন উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শরণার্থী রাখার জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার একর। এরমধ্যেই বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্প রয়েছে। আর এ দু’টি ক্যাম্প রয়েছে ৬শ’ একরের মধ্যে। এটাকে পিছনের দিকে বর্ধিত করে ২ হাজার একর করেছি। শুধু বালুখালী ক্যাম্পে রাখা হবে এ কথাটি ভুল। বালুখালী ও কুতুপালং ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে বনবিভাগের ২ হাজার একর জায়গার মধ্যে বাংলাদেশে যতো মিয়ানমারের নাগরিক আছে তাদের সেখানে রাখা হবে। সেখানে বসবাসের জন্য সেখানে সেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। টিউবওয়েল, টয়লেটসহ যা যা প্রয়োজন সেগুলো করা হচ্ছে।’

রাস্তা তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এটা বনবিভাগের জায়গা সেখানে সাধারণত রাস্তা থাকার কথা নয়। কিন্তু যখন রেজিস্ট্রার্ড ক্যাম্পটা হয়েছে তখন সেখানে একটা চলার পায়ে হাঁটার একটা পথ ছিল। এটাকে বর্ধিত করে প্রয়োজনে গাড়িও চলতো। এখন রিলিফ দেওয়ার জন্য সাতটা পয়েন্ট করা হয়েছে। এ পয়েন্টগুলোতে যোগাযোগ করার জন্য গাড়ি যাওয়ার জন্য কিছু ব্যবস্থা করেছি। চার-পাঁচটা রাস্তা করা হয়েছে। এরপরও পরবর্তীতে যখন তারা সবাই ওখানে থাকবে তখন সেখানে রিলিফ যাবে, তারা নিজেরা যাবে, তখন রাস্তা তৈরি করা হবে। যেখানে লাখ লাখ মানুষ থাকবে, সেখানে এমনিতেই রাস্তা হয়ে যাবে।’

/এমও/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
‘ডে আফটার টুমরো’ নয়, টুডে
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আন্তরিক হলেও গাজায় আগে যুদ্ধবিরতি চায় হামাস
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
হাসিনা-তাভিসিন আন্তরিক বৈঠক, থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ দলিল স্বাক্ষর
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে চুয়েট, হলে থাকতে পারবেন শিক্ষার্থীরা
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী