X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় পাঠ্যবই ছাপা নিয়ে বিপাকে এনসিটিবি

রশিদ আল রুহানী
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:২২আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৪:২৯

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের হাতে মাতৃভাষায় রচিত প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যবই

জানুয়ারি আসতে আর মাত্র তিন মাস বাকি। বছরের প্রথম দিন দেশের সব স্কুলগামী শিশুর হাতে বই তুলে দেয় সরকার। গত বছর প্রথমবারের মতো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদেরও তাদের মাতৃভাষায় প্রকাশিত পাঠ্যবই দেওয়া হয়েছে। তবে এ বছর তারা সময়মতো বই পাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ,  ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের জন্য বই ছাপানোর কাজ এখনও শুরুই হয়নি। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এনসিটিবি সূত্র জানায়, বছরের শুরুতে শিশুদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার জন্য সাধারণত প্রতি বছর জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যেই শুরু হয় বই ছাপানোর কাজ। কিন্তু এবার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের জন্য প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির বই ছাপানোর কাজ এখনও শুরু হয়নি। এ ব্যাপারে এনসিটিবি’র এক কর্মকর্তা জানান, প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির জন্য দেওয়া গত বছরের বইয়ের ভুল-ত্রুটি সংশোধনের কাজ শেষ হয়নি এখনও। ভুল সংশোধনের কাজ চলছে। এরপর প্রুফ দেখা, ডামি তৈরি করা, টেন্ডার করা ও তারপর বই মুদ্রণে পাঠানো হবে। ফলে সময়মতো এইসব কাজ শেষ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে চাপে রয়েছে এনসিটিবি। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও তাদের চাপে রেখেছে বলেও মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনসিটিবি’র এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের মাতৃভাষায় প্রকাশিত বই গতবছর সময়মতো দেওয়া হলেও এবার হয়তো সময়মতো দেওয়া সম্ভব হবে না। বই সবাই পাবে কিন্তু একটু দেরি হতে পারে।’ এই সংকটের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ডিপিই চাহিদাপত্র দিতে দেরি করেছে। ফলে বই রচনা (লেখা) থেকে শুরু করে টেন্ডার করা ও ছাপার কাজ বিলম্ব হচ্ছে।’

দেরিতে চাহিদাপত্র দেওয়ার ব্যাপারে জানার জন্য ডিপিই-এর পরিচালক (প্রশাসন) সাবের হোসেনকে তিন দিন ধরে ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুরা আগামী বছরের শুরুতে পাঠ্যবই পাবে কিনা, তা নিয়ে রয়েছে সংশয় এদিকে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘আসলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের জন্য তাদের নিজ ভাষায় বই রচনা করতে গিয়ে আমরা প্রথমে লেখক সংকটে পড়েছিলাম। কিছু কিছু লেখক পেয়েছিলাম, যারা মাতৃভাষায় কথা বলতে পারেন, কিন্তু লিখতে পারেন না। অনেক চেষ্টার পর লেখক খুঁজে পেয়েছি। পরে বইও রচনা করা হয়েছে। আশা করছি, বই সময়মতো পৌঁছে যাবে।’

এনসিটিবি সুত্রে জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে চাকমা, মারমা, গারো, সাদ্রী ও ত্রিপুরা ভাষার পাঠ্যবই ছাপা হয়। তবে সাঁওতালদের মধ্যে দুই গ্রুপের বিতর্কের জন্য সাঁওতাল ভাষায় বই ছাপানো সম্ভব হয়নি। ফলে এই ভাষা বাদ রেখেই প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে তাদের নিজ ভাষার ৫০ হাজার পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়। এসব শিশু আগামী বছর প্রথম শ্রেণিতে উঠবে। ফলে এ বছর প্রাক-প্রাথমিক ও প্রথম শ্রেণির শিশুদের জন্য এক লাখের বেশি বই ছাপানোর উদ্যোগ নিয়েছে এনসিটিবি।

তবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছয়টি সম্প্রদায়ের মাতৃভাষায় বই প্রকাশের ব্যাপারে সংসদীয় কমিটির নির্দেশনার পরও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের শিশুরা গতবারের মতো এবারও বই পাচ্ছে না। কারণ এ সম্প্রদায়ের মধ্যে দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। একটি গ্রুপ রোমান হরফে বই ছাপাতে চায়, কিন্তু আরেক গ্রুপ চাচ্ছে বাংলা হরফে বই ছাপানো হোক। এই দোলাচলে এনসিটিবি কোনও সিদ্ধান্তই নিতে পারেনি।

এ ব্যাপারে এনসিটিবি চেয়ারম্যান নারায়ান চন্দ্র বলেন, ‘সাঁওতালদের মধ্যে ভাষা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। তারা এখনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। তারা সিদ্ধান্ত না নিলে আমরাও বই ছাপাতে পারি না।’

আরও পড়ুন: নদীর নয়, সাগরের ইলিশে বাজার সয়লাব

/আরএআর/এএইচ/ এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অডিও ফাঁস, নারীর কাছে ডিবি পুলিশ সদস্যের ‘হেরোইন বিক্রি’
অডিও ফাঁস, নারীর কাছে ডিবি পুলিশ সদস্যের ‘হেরোইন বিক্রি’
উপজেলা নির্বাচনে নেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল
উপজেলা নির্বাচনে নেই বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল
মিরপুরে ‘হারল্যান স্টোর’-এর উদ্বোধন করেন নুসরাত ফারিয়া, পণ্য কিনে হতে পারেন লাখপতি
মিরপুরে ‘হারল্যান স্টোর’-এর উদ্বোধন করেন নুসরাত ফারিয়া, পণ্য কিনে হতে পারেন লাখপতি
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা