মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এক ব্রিফিং নোটে এই তথ্য জানানো হয়।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নির্যাতন শুরু হওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে শুরু করে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত আঞ্জুমান পাড়া সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে ১০-১৫ হাজার রোহিঙ্গা।
পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেছেন জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধিরা। তাদের অনেকের দাবি, নিরাপত্তা ঝুঁকি সত্ত্বেও রাখাইনে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ায় পালিয়ে আসতে বাধ্য হন বলে জানান তারা।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছে রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে আসতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় হাঁটতে হয়েছে তাদেরকে। সীমান্ত অতিক্রমের জন্য অপেক্ষায় থাকাকালে মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে গুলির আওয়াজ শুনেছেন তারা। সীমান্তের ওপারে প্রতি রাতেই গুলির আওয়াজ পাওয়া যায় বলে জানানো হয় জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার ব্রিফিং নোটে।
এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করার জন্য আগামী ২৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত হবে ‘প্রতিশ্রুতি সম্মেলন’ (প্লেজ কনফারেন্স)। এখানে দাতারা রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্যের ঘোষণা বা প্রতিশ্রুতি দেবেন। এখন পর্যন্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও কুয়েত এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে।
প্লেজ কনফারেন্সের পরিকল্পনা করেছেন শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, জরুরি ত্রাণ সমন্বয়ক ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল মার্ক লোকোক ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক এজেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম লেসি সুইং। নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জাতিসংঘ একথা জানিয়েছে।
ওই তিন সংস্থার প্রধানের যুক্ত বিবৃতিতে রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাওয়া সংকট হিসেবে অভিহিত করেছেন। তারা এটাকে বড় একটি জরুরি মানবিক সংকটও বলেছেন। এই সংকট মোকবিলায় জাতিসংঘের আগামী ছয় মাসের জন্য সাড়ে ৪৩ কোটি ডলার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয় ব্রিফিং নোটে।