X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যার পর নতুন ফসলের যুদ্ধ

শফিকুল ইসলাম
১৭ অক্টোবর ২০১৭, ২২:০১আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৫৩

বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে চলছে আমন ধানের চার সংগ্রহ। ছবি: নওগাঁ প্রতিনিধি

নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বানিয়াজান ইউনিয়নের সোনাইখালী গ্রামের বাসিন্দা গোলাবজান বিবির বয়স ৮০ বছর। সোজা হয়ে দাঁড়াতেও কষ্ট হয় তার। গত ২৫ সেপ্টেম্বর নীলপাড়ের সাদা একটি সুতি কাপড় পরে খালি পায়ে দাঁড়িয়েছিলেন সোনাইখালী সেতুর ওপর। কেমন আছেন―জানতে চাইলে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন তিনি। পরে আস্তে ধীরে নেত্রকোনার আঞ্চলিক ভাষায় বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিনিধিকে জানান, তার স্বামী বেঁচে নেই।তিন ছেলে হাওরে মাছ ধরে, অন্যের জমিতে ধান চাষ করে। এভাবেই যা আসে, তা দিয়ে তিন ছেলে, তাদের বউ ও পাঁচ নাতি-নাতনিকে নিয়ে বছর কেটে যায়। কিন্তু এবারের বন্যায় হাওরের ধান তলিয়ে গেছে, মাছ ভেসে গেছে। তাই এখন সামনে কাউকে পেলেই গোলাবজান বিবির প্রশ্ন করেন,‘আমরা এহন কী খাইয়্যাম (কী খাবো)? কীবায়ে বাঁচবাম (কীভাবে বাঁচবো)?’

রংপুরের চাষিরা আমনের চারা সংগ্রহ করে রোপনের প্রস্ত্ততি নিয়েছে। (ফাইল ছবি)

একই জেলার বারহাট্টা উপজেলার রহমত আলী ডাকুয়া জানান, টেংরাম হাওরের ১৬ কাঠা জমিতে ইরি চাষ করেছিলেন। তার জমিও পুরোটাই তলিয়ে গিয়েছিল আগাম বন্যার পানিতে। পানিতে ডুবে থাকা অবস্থাতেই যতটুকু সম্ভব ধান কেটে এনেছিলেন। সেই ধানের অধিকাংশই ছিল কাঁচা। সেই ধান আর খাওয়া যায়নি। গরুর খাবার হয়েছিল সেগুলো।

এভাবেই একই জেলার মদন উপজেলার তরিকত আলী, দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার কোরবান আলী, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার আবদুল মান্নান হাওলাদারের মতো ক্ষুদ্র চাষিরা জানান, এবারের বন্যায় তাদের সবারই বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার পাশাপাশি ছিল ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ। অথচ এই ফসলের ওপরই তাদের নির্ভর করতে হয় সারাবছর সংসার চালানোর জন্য।

ফসলি জমির ক্ষতি

খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অতিবৃষ্টি, উজানের পানি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এবারের বন্যায় দেশের ৩২টি জেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। জেলাগুলো হলো— দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাঙামাটি, ব্রাহ্মনবাড়িয়া, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, যশোর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, শেরপুর, মৌলভীবাজার, নওগাঁ, ঢাকা, কুমিল্লা, রংপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর, নাটোর ও চাঁদপুর। এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মোট মানুষের সংখ্যা ৮২ লাখ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।

এদিকে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের বন্যায় ব্যাপকভাবে ফসলহানি ঘটেছে ১৮টি জেলায়—নওগাঁ,কুড়িগ্রাম, জামালপুর,দিনাজপুর, বগুড়া, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, রংপুর, নাটোর, নীলফামারী, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, শেরপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ডিজ্যাস্টার রেসপন্স কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের (এনডিআরসিসি) তথ্য অনুযায়ী, দুই দফা বন্যার কবলে পড়া এসব জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মোট ফসলি জমির পরিমাণ ৬ লাখ ৬ হাজার ৯৫৫ হেক্টর। এর মধ্যে ১ লাখ ২ হাজার ৮০৮ হেক্টর জমির ফসলের সম্পূর্ণ ও ৫ লাখ ৪ হাজার ১৪৭ হেক্টর জমির ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

বন্যাকবলিত জেলাগুলোর কৃষকরা জানিয়েছেন, পরপর দু’বার ফসলহানির পর চরম অর্থ সংকট আর বীজপ্রাপ্তির অনিশ্চয়তায় ছিলেন তারা। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার ফের চাষাবাদ তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি অনুদান পাওয়া যায়নি বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

ক্ষেতে আমন ধানের চারা রোপনের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন নওগাঁর চাষিরা। (ফাইল ছবি)

তবে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বন্যায় ফসলের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার বাজেটে কৃষি প্রণোদনায় ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৭ লাখ ৭৬ হাজার ২০২ জন কৃষককে কৃষি পুনর্বাসন বাবদ ১৩৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫৫১ টাকার সার ও বীজ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর আগেই চলতি অর্থবছরের জন্য দেশের ৬৪ জেলায় ৫ লাখ ৪১ হাজার ২০১ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ১০টি ফসলের আবাদ বাড়ানোর জন্য বীজ, ডিএপি এবং এমওপি সার সহায়তার জন্য ৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ৭৯ হজার ৩৮৫ টাকার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, বাংলা ট্রিবিউনের শেরপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে। জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে জেলার চার উপজেলায় ২শ ৪০ জন কৃষকের মধ্যে এক বিঘা করে জমির সমপরিমাণ আমন চারা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের দেওয়া হবে।’ তিনি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিলম্ব উৎপাদন সহায়ক ‘নাবি’ জাতের ধান রোপণের পরামর্শ দেন।

নীলফামারীতে বন্যার পর আবারও মাঠ ভলে গেছে সবুজ ধানে। (ছবি: নীলফামারী প্রতিনিধি)

বাংলা ট্রিবিউনের দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী জেলার প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির ধানের চারা মরে গেছে সাম্প্রতিক বন্যায়। তবে এসব জমিতে পুনরায় চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন অধিদফতরের উপ-পরিচালক গোলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি কৃষককে বিনামূল্যে চারা অথবা ধানের দ্রুত বর্ধনশীল লেট ভ্যারাইটি বীজ দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ২৫ একর জমিতে দ্রুত বর্ধনশীল লেট ভ্যারাইটি (বিরি-৩৪, নাজির শাইল) জাতের আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।’ এই বীজতলা থেকে যে চারা আসবে, তা জেলার চাহিদা মিটিয়েও আশপাশের জেলায় বিতরণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সরকারের কৃষি প্রণোদনার পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি মন্ত্রণালয় ২০১৭-১৮ মৌসুমে ১৮ জেলার ১ লাখ ৭৬ হাজার ২০২ জন কৃষকের মধ্যে রবি মৌসুমে ১৯ কোটি ৯৯ লাখ ৫৫১ টাকার গম, ভুট্টা, সরিষা, চিনাবাদাম, খেসারি, ও বোরো ধান চাষের জন্য বিনামূল্যে বীজ, সার ও শাকসবজির বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। যদিও কৃষকরা বলছেন, তারা সরকারি এসব সহযোগিতা পাচ্ছেন না।

ধানের ক্ষেতে কীটনাশক ছড়াচ্ছেন এক কৃষক

এ প্রসঙ্গ জানতে চাইলে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষক মোতালেব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা শুধু রেডিও-টেলিভিশনে শুনি, সরকারের লোকজন কোটি কোটি টাকার সার-বীজ কৃষকদের দেন। কিন্তু আমরা তো পাই না। কোনও কৃষক পায়, তাও জানি না।’ মোতালেব হোসেন জানান, বন্যায় তার তিন একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। একজন আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা ধার করে বীজ-সার কিনেছেন। এর পর নতুন করে বর্গা নেওয়া জমিতে ফসল বুনেছেন।

মোতালেব হোসেন জানান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা তালিকা করে কৃষকদেরকে কার্ড দেন। সেই কার্ড অনুযায়ী কৃষকরা সরকারি প্রণোদনা বা পুনর্বাসন সহায়তা পান। তিনি বলেন, ‘এই কার্ড পেতে হলে কৃষককে নিজের জমি থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের তো নিজের জমি নাই। আবার যাদের জমি আছে, তাদের অনেকেই চাষ করে না। তারা জমি বর্গা দেয়। বর্গাচাষিরা তো সরকারি সহায়তা পায় না। নিজের জমি না থাকলে তাই এই সহায়তা দিয়ে কী লাভ?’

বাংলা ট্রিউনের কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি কথা বলেন মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোর ইউনিয়নের বাসিন্দা রহিমা বেগমের সঙ্গে। তিনি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন,‘মহাজনের কাছ থেইক্যা (থেকে ) ৫০ হাজার টেহা (টাকা) ধার লইয়্যা ধান চাষ করছিল আমার স্বামী। এহন (এখন) হেই টেহার লাইগা দিন-রাইত এক হইয়া গেছে। পরতেক (প্রত্যেক) দিন টেহার লাইগ্যা আইয়া কইয়া যায় (এসে বলে যায়)। আর আমার স্বামী হেই টেহার লাইগ্যা ঘর-সংসার ফালাইয়া শহরে কামলা দিতাছে। কেমনে অত টেহা দিয়াম (দেবো), বুঝতাম পারতাছি না।’

নতুন চাষের ধান নিয়েও সব চাষি খুশি এমনও নয়। সব ক্ষেতের ফসল এক রকম হচ্ছে না।

একই জেলার ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ি ইউনিয়নের আক্কাছ মিয়া বলেন, ‘যে জমি চাষ করছিলাম, তার অর্ধেকই নষ্ট হইছে বন্যায়। নিজের জমাইন্যা টেহা আর এনজিও থেইক্যা কৃষি ঋণ লইয়া চাষের কাজ শুরু করছিলাম। ভাবছিলাম এইবারের ফসল উঠলে লাভের টাকাও থাকবো, এনজিও’র টাকাও শোধ করমু। কিন্তু আসল লাভ সবডাই পানির নিচে। নিজের টেহা তো গেলই। এখন এনজিও’র তাগদায় কোনও কূল কিনারা পাইতাছি না। ঘরে বুইড়া মা, ছুডু ছুডু দুইটা বাইচ্যা আর বউ লইয়া সংসার টিকাইয়া রাখতেই মরার অবস্থা। এহন ক্যামনে এই ঋণের টাকা শোধ করুম, বুঝতাছি না।’

বিভিন্ন জেলা থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, রহিমা বেগম, আক্কাছ মিয়া বা মোতালেব হোসেনের মতো অনেকেই সরকারের দেওয়া পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সহযোগিতা না পেয়ে ধার দেনা করে চাষাবাদ করেছেন।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস’র সাবেক মহাপরিচালক ড. এম. আসাদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রণোদনা সহায়তার আওতায় সরকার যেসব কৃষকদের কার্ড দিয়েছে, তারা আসলেই কৃষক কিনা তা খতিয়ে দেখা দরকার। বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজন। তার আগে সরকারকে নির্দিষ্ট করতে হবে, কৃষকের সংজ্ঞা কী হবে।এক খণ্ড জমির মালিক হওয়া কৃষক হওয়ার শর্ত হলে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেকোনও দুর্যোগে ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করাটা একটি জটিল কাজ। সেটি করতে অনেক সময় চলে যায়। অথচ সহায়তা দেওয়ার সময় ততক্ষণে চলে যায়। সময় চলে যাওয়ার পর সহায়তা তেমন কাজে লাগে না, এ বিষয়টি মনে রাখতে হবে। এমন যেন না হয়, সে উপায় খুঁজে বের করতে হবে। তা না হলে সরকারের এই উদ্যাগের শতভাগ সফলতা আসবে না।’

আরও পড়ুন: বন্যাদুর্গত এলাকায় এখনও খাদ্য সংকট

 

/টিআর/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কামালের ২৯ বছরের রেকর্ড ভাঙতে পারলেন না সবুজ!
কামালের ২৯ বছরের রেকর্ড ভাঙতে পারলেন না সবুজ!
সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
ইউক্রেনে রুশ বিমান হামলায় দুই শিশুসহ নিহত ৮
ইউক্রেনে রুশ বিমান হামলায় দুই শিশুসহ নিহত ৮
হাসপাতালের বদলে শিশুরা ঘুমাচ্ছে স্বজনের কোলে
হাসপাতালের বদলে শিশুরা ঘুমাচ্ছে স্বজনের কোলে
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!