একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক সাবেক পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র (৭৫) বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন।
এসময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন মামলার প্রসিকিউটর আবুল কালাম আযাদ, প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা। আর আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আইনজীবী মাসুদ রানা।
পরে প্রসিকিউটর আবুল কালাম আযাদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শহীদুল্লাহের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তাই ট্রাইব্যুনাল তাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিয়েছেন। আদালত তার শর্তে বলেছেন, জামিনে থাকা অবস্থায় শহীদুল্লাহকে তার পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং কোনও অবস্থায় তিনি ঢাকা ত্যাগ করতে পারবেন না।’
এর আগে ৩১ অক্টোবর ক্যাপ্টেন শহীদুল্লাহের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়।
২০১৬ সালে ২ আগস্ট ক্যাপ্টেন শহীদুলকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ তিনটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ক্যাপ্টেন শহীদুল ১৯৬২ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগ দেন। পরে ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান সেনা বাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৭ সালে কমিশন্ডপ্রাপ্ত হয়ে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হন। ১৯৬৯ সালে ক্যাপ্টেন হিসেবে পদোন্নতি পান। ১৯৭০ সালে তাকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পোস্টিং দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালে তাকে তার নিজ এলাকা কুমিল্লার দাউদকান্দিতে পাঠানো হয়। সেখানে তার নেতৃত্বে প্রায় ১৪০/১৫০ জন পাকিস্তানি সেনা সদস্য নিয়ে স্থানীয় স্কুল ও ডাকবাংলোয় ক্যাম্প স্থাপন করে। এরপর ওই এলাকায় হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটতরাজের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করে।