রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা যুদ্ধাপরাধের শামিল এবং মানবাধিকারের মৌলিক লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সফররত সিনেটররা। রবিবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করার সময় জেফ ম্যার্কলি’র নেতৃত্বে সফররত সিনেটররা একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে কফি আনান কমিশনের রিপোর্টের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনার উদার সহযোগিতার প্রশংসা করে মার্কিন সিনেটরগণ বলেন, ‘উদ্বাস্তুরা তাদেরকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি খুবই সন্তুষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানে সব ধরনের সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। ’
তারা আরও বলেন, ‘প্রত্যেক দেশের মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অপরাধ ও জাতিগত নিধনের প্রতি নিন্দা জানানো উচিত। এই সংকটের সমাধান ও উদ্বাস্তুদের তাদের নিজ দেশে ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সোচ্চার হতে হবে।’
জেফ ম্যার্কলি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর নির্যাতন খুবই ভয়ঙ্কর। আমরা কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে নির্যাতিতদের কাছ থেকে সরাসরি নিপীড়নের তথ্য সংগ্রহ করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নির্মম নিপীড়নের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। সে কথা স্মরণ করে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। আমরা চাই তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবে। শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং পাঁচ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী তাদের পরিচয়পত্র দিয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের কথা উল্লেখ করে বলেন,‘ওই সমস্যায় ৬০ হাজারেরও বেশি নাগরিক ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং বাংলাদেশ তার নাগরিকদের ফিরিয়ে এনে তাদেরকে পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সবরকমের সহায়তা দিয়েছে।’
ইহসানুল করিম জানান, মার্কিন সিনেট প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন। তারা নারীর ক্ষমতায়নেরও প্রশংসা করেন। সিনেটরগণ জলবায়ু ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন এবং এ বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার প্রশংসা করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন সিনেটর রিচার্ড ডারবিন, কংগ্রেসওম্যান বেট্টি ম্যাক কলাম ও জন সেহকোশি এবং কংগ্রেসম্যান ডেভিড সিসিল্লিন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী ও মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সেসময় উপস্থিত ছিলেন। বাসস
