X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

খুচরা জিনিস নিয়ে কোর্টে সময় কাটানো কেন: পিইসির রিট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২১ নভেম্বর ২০১৭, ২৩:৩৩আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০১৭, ২৩:৩৯

জাতীয় সংসদে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী (ফাইল ছবি) শিক্ষার্থীদের কল্যাণেই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই পরীক্ষা বাতিলে উচ্চ আদালতে রিটের সমালোচন করে তিনি বলেন, ‘অনেক জরুরি মামলা থাকতে বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কি দেবে না তা নিয়ে একটা রিট করে বসে থাকে। জরুরি মামলা শুনানির সময় নেই। এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে সময় কাটানো কেন?’

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন। এর আগে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে আদালতে চলমান রিটের প্রসঙ্গ তুলে এই পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানান।

জবাবে ফিরোজ রশীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষাটি নিয়ে মাননীয় সংসদ সদস্যের আপত্তি কিসে তা বুঝতে পারছি না। জানি না উনি কিভাবে পড়াশোনা করে উঠে আসছেন। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষাটা আমি চালু করেছি। সংসদ সদস্য প্রশ্ন তুললেন কেন পরীক্ষা হবে? এটা শুনে আমি খুব অবাক হয়ে গেলাম। এই পরীক্ষার জন্য ছেলেমেয়েরা কি পড়াশোনায় মনোযোগী হচ্ছে না? এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার বাড়ছে না?’

পরীক্ষা দুটি চালুর কারণ ব্যাখ্যা করে সরকার প্রধান বলেন, ‘আগে বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ক্লাস ফাইভ থেকে একটি স্কুল থেকে ১০/১২টি ছেলেমেয়েকে ঠিক করা হতো। শিক্ষকরাও তাদের পেছনে লেগে থাকতেন। তাদের পড়াতেন, যেন ভালোভাবে পড়াশোনা করে তারা বৃত্তি পেতে পারে। আবার ক্লাস এইটেও একই ঘটনা ঘটে। ফলাফলটা এই দাঁড়ায় যে, অন্য ছেলেমেয়েদের দিকে তেমন একটা নজর দেওয়া হয় না।’

এসময় প্রধানমন্ত্রী তার ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা ছাত্র অবস্থায় যখন আমাদের বৃত্তির জন্য সিলেক্ট করা হয়েছিল তখন দেখতাম যত পড়াশোনা আমাদের ওপর আর বাকিদের ছাড়া ছাড়া ভাব।’

তিনি আরও বলেন, ‘বৃত্তির জন্য শিক্ষকরা ছেলেমেয়েদের বেছে নেন। তারা যাদের বেছে নেন তাদের বাইরেও মেধাবী ছেলেমেয়ে থাকতে পারে। শিক্ষকরা সবাইকে যে বেছে নিতে পারবেন তার তো কোনও নিশ্চয়তা নেই। সেজন্য আমরা ঠিক করলাম– বাছা পরীক্ষার্থীদের নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা না করে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে সবাই পড়াশোনা করবে, সবাই পরীক্ষা দেবে সেখান থেকে যারা দরিদ্র মেধাবী তারা বৃত্তিটা পাবে।’

পিইসি ও জেএসসি শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি কাটিয়ে তোলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্কুলে পড়ে ১০ বছর পর যখন এসএসসি পরীক্ষা দিতে বসে তখন ভয়ভীতি কাজ করে। আত্মবিশ্বাসের অভাব হয়। বর্তমান পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা বোর্ড পরীক্ষা দিয়ে দিয়ে উঠে যাচ্ছে, ফলে এসএসসি পরীক্ষার সময় ওই ভয়ভীতিটা তাদের মধ্যে থাকে না। তখন সহজভাবে পরীক্ষার হলে বসে, পাস করে। যার ফলে এখন পাসের হার বাড়ছে। স্কুলে ধরে রাখাটাও এই পরীক্ষার একটা উদ্দেশ্য। কোন শিক্ষার্থী কোন পথে যাবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে তারও ফিল্টার করে ফেলা যাচ্ছে।’

সার্টিফিকেট পেলে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার পর ছেলেমেয়েরা হাতে যখন সার্টিফিকেট পাবে– এটা একটা আনন্দের বিষয়। সার্টিফিকেট পেলে নিজেদের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস আসে। এতে আপত্তিটা থাকতে পারে– বুঝতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেটা করেছি বাচ্চাদের ভবিষ্যত চিন্তা করেই করেছি। পৃথিবীর সব দেশে এ ধরনের পরীক্ষার সিস্টেম আছে।’

এ সময় রিটের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘লাখ লাখ মামলা পড়ে আছে কোর্টে। তার কোনও খবর নেই। কিন্তু বাচ্চারা পরীক্ষা দেবে কি দেবে না– তা নিয়ে একটা মামলা/রিট করে বসে থাকে। আর এটা নিয়েই কোর্ট সময় কাটায় অথচ অনেক জরুরি মামলা– সন্ত্রাসী, জেএমবি গ্রেফতার মামলা, অনেকের ফাঁসির শুনানি বাকি, সেগুলোর শুনানির সময় নেই। এই সমস্ত খুচরা জিনিস নিয়ে সময় কাটানো কেন? হয়তো দেখা যাবে কোনোদিন একটা রিট করে বসে থাকবে কেন বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে কিছু লোক যেন আছে অনবরত রিট করা আর এটার ওপর আলোচনা করা। বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে রিট–জানি না কোর্ট কী রায় দেবে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করার যদি রায় দেয় তাহলে এর থেকে দুঃখের আর কিছু থাকবে না।’

এর আগে ফিরোজ রশীদ তার বক্তব্যে পিইসি পরীক্ষা নিয়ে অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দের রিট প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রিট নিষ্পত্তি না করে সরকার পরীক্ষা নিয়ে যাচ্ছে।’ কোনও ধরনের আইন প্রণয়ন ছাড়া এ ধরনের পরীক্ষা নেওয়াকে সংবিধান পরিপন্থী বলেও আখ্যায়িত করেন তিনি। পরে তার জবাব দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, ‘সংসদে পাস হওয়া জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকেই এই পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে আইনের কোনও লঙ্ঘন হয়নি।’

/ইএইচএস/এএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন
চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ