X
মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
৩০ বৈশাখ ১৪৩১

শক্ত রেজ্যুলেশন নিয়েছে মানবাধিকার কাউন্সিল

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:১৪আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭, ২০:৫০

জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল

আগামী তিন বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যার সামগ্রিক সমাধানের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল গতকাল মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) শক্ত রেজ্যুলেশন গ্রহণ করেছে।

রেজ্যুলেশনে বলা হয়েছে, আগামী তিন বছর অর্থাৎ ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর মানবাধিকার কমিশনার ওই কাউন্সিলের সামনে রোহিঙ্গাদের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মৌখিক রিপোর্ট উপস্থাপন করবেন।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান থাকে না, কিন্তু, এই রেজ্যুলেশন গ্রহণের পরে এটি নিশ্চিত যে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আগামী তিন বছর আলোচনায় থাকবে।

মঙ্গলবার রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার কাউন্সিলে একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে চীন ভোটাভুটির আহ্বান জানালে ৩৩টি সদস্য রাষ্ট্র এর পক্ষে ভোট দিলেও চীন, ফিলিপাইন ও বুরুন্ডি এর বিপক্ষে ভোট দেয়।  এ কারণে রেজ্যুলেশনটি সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়নি।

তিনি বলেন, এই কাউন্সিলের সদস্যরা মানবাধিকার কমিশনারকে রোহিঙ্গা বিষয়ে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করার অনুরোধ জানিয়েছে। এই প্রতিবেদনে অনেক বিষয়ের উল্লেখ থাকবে। যেমন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এবং জাতিসংঘের অন্য সংস্থাগুলোকে মিয়ানমার সহযোগিতা করছে কিনা, রেজ্যুলেশনটির বাস্তবায়নে অগ্রগতি কেমন, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাসহ আরও অনেক বিষয়।

রোহিঙ্গা সংকট

তিনি বলেন, মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ যদিও এ বছর শেষ হয়ে যাচ্ছে তারপরেও এই রেজ্যুলেশনের কারণে মিয়ানমারকে আগামী তিন বছর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে।

এই রেজ্যুলেশনে বলা হয়েছে ধারাবাহিক, নির্দিষ্টভাবে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং তাদেরকে বেসামরিক জনগণের একটি অংশ সহায়তা দিয়েছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত অপরাধগুলোর মধ্যে আছে শিশুসহ অন্যদের আইনবহির্ভূতভাবে হত্যা, ধর্ষণসহ যৌন নিপীড়ন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও ল্যান্ডমাইন স্থাপন, গুম, নির্যাতন, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ইত্যাদি।

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব

ওই রেজ্যুলেশনে মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করার আহবান জানিয়ে বলা হয়েছে, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে তাদেরকে যেন পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়া হয় যাতে তারা অন্য নাগরিকদের সমান সুবিধা ভোগ করতে পারে।

কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয় ক্যাম্প করেছে সরকার। ছবি: নাসিরুল ইসলাম

রেজ্যুলেশনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তারা যেন মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারে।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, যাচাই প্রক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার এবং তাদেরকে আদি বাসস্থানে পুনর্বাসিত করার জন্য বলা হয়েছে।

বিচার প্রক্রিয়া

রেজ্যুলেশনে বলা হয়েছে রাখাইনে ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থান, বেসরকারি সম্পত্তি ইত্যাদি ধ্বংস করা হয়েছে এবং সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মতো যৌন নির্যাতন সংঘটিত হয়েছে।

মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গাদের যে কোনও সম্পত্তি ধ্বংস বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে যারা নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত সম্পাদন করে সবাইকে বিচারের সম্মুখীন করতে হবে।

/এসএসজেড/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সিট দখল নিয়ে সংঘর্ষ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
সিট দখল নিয়ে সংঘর্ষ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
চীন সফরে গেছেন তিন বাম দলের নেতারা
চীন সফরে গেছেন তিন বাম দলের নেতারা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
সজনে পাতা খেলে মিলবে এই ১২ উপকারিতা
রিজার্ভ ডে সংকট: দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফাইনাল!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপরিজার্ভ ডে সংকট: দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফাইনাল!
সর্বাধিক পঠিত
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
ফুটপাত থেকে দোকান ছড়িয়েছে প্রধান সড়কে, আসছে নতুন পরিকল্পনা 
আমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
বাংলা ট্রিবিউনের দশম বর্ষপূর্তিআমরা সুন্দর একটি সম্পর্ক মেন্টেইন করি: জয়া আহসান
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
যেভাবে বরণ করা হবে এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিককে
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
জাতীয় দলে খেলতে গেলে সাপোর্ট লাগে: ইমরুল  
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে কী হয়?