X
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

‘বিএনপি-জামায়াতের এক নেতা সুইডেনে বসে কিলিং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে’

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৪:৩৩আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:৪৯

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের খণ্ডচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের (ছবি:ফোকাস বাংলা)

বিএনপি-জামায়াতের এক নেতা সুইডেনে বসে দেশে কিলিং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ওই নেতার নাম নাহিদ বলেও দাবি করেছেন তিনি।

রবিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির উদ্যোগে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের খণ্ডচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের মুখোশ পড়ে আছে তাদের মুখোশ জাতির সামনে উম্মোচন করতে হবে। বিএনপির-জামায়াতের নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে। আবার তাদের পরাজিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে  ক্ষমতায় আনতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের এই বর্বরতাকে তুলে ধরে এদের মুখোশ উম্মোচন করতে হবে। বর্বর এ অপশক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে হবে।’

পাকিস্তানিদের দোসররা এখনও বাংলার মাটিতে বিষ বাষ্প ছড়াচ্ছে মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘তারা এখনও রক্তের হলিখেলা খেলছে। যারা পাকিস্তানি কায়দায় জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা পাকিস্তানি প্রেত্মাত্মা। এরাই আবার গুম খুনের কথা বলে। গুমের নাটক যারা সাজায় এরাই গুমের অভিযোগ দিতে দ্বিধা করে না। দেশে হঠাৎ হঠাৎ লাশ পরে থাকে। ৯ বছর আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে তারাই দেশের গুমের ঘটনা ঘটাচ্ছে।  তাদের একজন সুইডেনে বসে কিলিং গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে। তার নাম নাহিদ। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরও খুনের ঘটনা দেখছি।’

তিনি বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত দেশে মানবিকতাকে অপমান করেছে হিংস্র দানবতার মাধ্যমে। তারা দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে, এখন তারা কোন মুখে দেশের মানুষের কাছে ভোট চায়? ২০১৮ সাল সাম্প্রদায়িকতার পরাজয়ের বছর। তাদের পরাজয় হবে।

প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনিবার্হী সদস্য এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।

আলোচনা সভায় বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস ও নৈরাজ্যে ক্ষতিগ্রস্ত মাইশার মা ও নুরুজ্জামানের স্ত্রী মাফরুহা বেগম,  ট্রাক ড্রাইভার পটল মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল মোর্শেদ আলম, আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম, সেলসম্যান মোশাররফের স্ত্রী লাভলী আক্তার কথা বলেন।

অনেকেই গুম হয়ে ফিরে আসছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই এলাকার মাহফুজ বাবু ফিরে আসেনি। যারা ভিক্টিম তাদের মুখে যে বর্ণনা তারপর আর  বক্তব্য দেওয়ার কিছু থাকে না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা আপনাদের পাশে আছে, থাকবে। শেখ হাসিনা বিপন্ন মানবতার বাতিঘর। পরে মন্ত্রী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে নগদ অর্থ প্রদান করেন। সেইসঙ্গে তাদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেন।

সভাপতির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম বলেন, বিএনপি-জামায়াতের এসব হত্যা, আগুন সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্যের বিষয় শুধু ঘরের মধ্যে বললেই হবে না। এর ব্যাপক প্রচার দরকার। প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার করে সুন্দর ছক ব্যবহার করে জেলা, উপজেলা ও তৃণমূল পর্যায়েই প্রচার করতে হবে। তিনি বলেন, যারা আগামীতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে এখন থেকে বিএনপি-জামায়াতের অপকর্ম প্রচার প্রচারণা শুরু করতে পারেন। এতে আপনাদের মনোবল প্রমাণ হবে। আপনারা আমাদের কাছ থেকে ভিড়িও নিয়ে গিয়ে নিজ নিজ এলাকায় দেখান। এ প্রচার নিয়মিত দেখানো হলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে যে বিজয় হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি এবারও হবে, এবার আরও বড় আকারে হবে।

এইচটি ইমাম বলেন, আমাদের হাতে সময় খুব কম, নির্বাচনের আর বেশি দেরি নাই। দেখতে দেখতে কয়টা মাস পার হয়ে যাবে। একবার যখন নির্বাচনের জোরালো প্রস্তুতি শুরু হবে, তখন সবাই এর প্রচারের কথা ভুলেও যেতে পারে। তাই এখন থেকে জনমত যদি আমাদের পক্ষে আনতে হয় সেক্ষেত্রে আমাদের শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও বিএনপি-জামায়াতের আগুন সন্ত্রাসের কথা তুলে ধরলে নির্বাচনের বিজয় আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।

সেলসম্যান মোশাররফের স্ত্রী লাভলী আক্তার বলেন, বিএনপির সন্ত্রাসীদের ছোড়া পেট্রোল বোমার আঘাতে আমার স্বামীর মুখমণ্ডল পুড়ে যায়, তখন তাকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর আমার স্বামীর চাকরিও চলে যায়। আমরা দুই ছেলে ও মেয়ে নিয়ে আর্থিক অস্বচ্ছলতায় পড়ে যাওয়া তিনি এখন মালেয়শিয়ায় আছেন কিন্তু সেখানেও তিনি নিয়মিত কাজ করতে পারেন না। একদিন কাজ করলেই তার হাতের যন্ত্রণা উঠে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের যে অনুদান দিয়েছেন তা নিয়ে আমরা কোনোরকম দিন কাটাচ্ছি।

আলু ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বলেন, সরকার আমাদের দিকে না তাকালে আমরা কেউ বাঁচতাম না। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের নামে মানুষকে পুড়িয়ে মারার নাম কি রাজনীতি? আমি তো অসহায় মানুষ, আমি তো কোনও রাজনীতি করি নাই, কোনও মিছিল, মিটিং এ যাই নাই। ছোট ব্যবসায়ী। আমার অপরাধ কী  ছিল? দেশের প্রতিটা মানুষের কাছে আমি বিচার চাই, এর বিচার আপনারাই করবেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের পাশে না দাঁড়ালে আমাদের পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত, আমরা বাঁচতাম না। আমার চিকিৎসা হতো না।

এর আগে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের ভিডিও এবং স্থিরচিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যরা।

 

/পিএইচসি/বিএল/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সংকট থেকে উত্তরণে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান মেননের
সংকট থেকে উত্তরণে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান মেননের
কানে ঝুলছে বাংলাদেশের দুল!
কান উৎসব ২০২৪কানে ঝুলছে বাংলাদেশের দুল!
ধোনি-জাদেজার লড়াই ছাপিয়ে প্লে অফে বেঙ্গালুরু
ধোনি-জাদেজার লড়াই ছাপিয়ে প্লে অফে বেঙ্গালুরু
হীরকজয়ন্তীর পর সংগঠনে মনোযোগ দেবে আ.লীগ
হীরকজয়ন্তীর পর সংগঠনে মনোযোগ দেবে আ.লীগ
সর্বাধিক পঠিত
মামুনুল হক ডিবিতে
মামুনুল হক ডিবিতে
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
৩০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধির দাবি তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারীদের
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
আমেরিকা যাচ্ছেন ৩০ ব্যাংকের এমডি
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
নির্মাণের উদ্দেশ্যে ভালো সড়ক কেটে ২ বছর ধরে খাল বানিয়ে রেখেছে
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?
গরমে সুস্থ থাকতে কোন কোন পানীয় খাবেন? ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় কখন জরুরি?