X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: চুক্তি শেষ, এখন কী

শেখ শাহরিয়ার জামান
১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৭:৪৯আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৭:৪৯

কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা (ফাইল ছবি) রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত যেসব চুক্তি ও দলিল স্বাক্ষর করা দরকার, তার সবই সম্পন্ন হয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর প্রথম বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত অ্যারেঞ্জমেন্ট স্বাক্ষর করেন। ১৯ ডিসেম্বর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন ও এর কার্যপ্রণালী ঠিক করা হয় এবং সবশেষ ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ের চুক্তি ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চূড়ান্ত ও স্বাক্ষরিত হয়। এর অর্থ হলো প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত সব ধরনের আইনগত প্রক্রিয়া শেষ। এখন কি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে না। বরং সবকিছু প্রস্তুতের জন্য আরও সময় প্রয়োজন।

এখন কী হবে

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মোহাম্মাদ তৌহিদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন দুটি বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রথমত, হচ্ছে মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখা এবং দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা, যাতে তারা ফেরত যেতে রাজি হয়।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭৮, ১৯৯২, ২০১২, ২০১৬ এবং সবশেষ ২০১৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত বারবার রোহিঙ্গা নির্যাতনের একই চিত্র পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তারা এখন বলছে, প্রথমে তারা ২০১৬ সালের অক্টোবরের পরে যারা এসেছে তাদের ফিরিয়ে নেবে এবং পরে অন্যদের বিষয়টি বিবেচনা করবে। সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন চলে আসে, যদি ফেরতই নেবে, তবে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন করলো কেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, মিয়ানমারকে কীভাবে আমরা বিশ্বাস করবো, যখন তারা ধারাবাহিকভাবে আমাদের বিশ্বাসভঙ্গ করছে।’ ১৯৭৮ ও ১৯৯২ সালের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত চুক্তির মূল একটি বিবেচ্য বিষয় ছিল, রোহিঙ্গারা যাতে আর পালিয়ে না আসে সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেবে মিয়ানমার।

সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের সবসময় লক্ষ্য রাখতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে।’

রোহিঙ্গাদের আত্মবিশ্বাসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি মিয়ানমারকেই করতে হবে। কারণ, সেখানে তারা নির্যাতিত হবে না এবং খেয়ে-দেয়ে বাঁচতে পারবে, এই আশ্বাস মিয়ানমারকেই দিতে হবে।’

মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক ডিফেন্স অ্যাটাশে শহীদুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন যেটি প্রথমে দরকার সেটি হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের মধ্যে কনফিডেন্স তৈরি করা, যাতে তারা ফেরত যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে তাদের স্ট্যাটাস কী হবে, ফেরত পরবর্তী অবস্থায় তাদের খাদ্য ও বাসস্থানের কী ব্যবস্থা, তাদের জাতীয়তা কী হবে, তাদের জীবিকার কী ব্যবস্থা থাকবে ইত্যাদি বিষয় তাদের অবহিত করতে হবে। এই বিষয়গুলো নিয়ে নিশ্চয় দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সেটি মাঠপর্যায়ে প্রচার চালাতে হবে, যাতে রোহিঙ্গারা আত্মবিশ্বাসী হয়।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত করতে হবে, যাতে বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সমাধা করা হয়।’ আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যদি এই চাপ কমে আসে, তবে মিয়ানমার হয়তো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’

/এএম/
সম্পর্কিত
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সমস্যা: নিরাপত্তা পরিষদে নিজের অবস্থান তুলে ধরলো বাংলাদেশ
রোহিঙ্গাদের বাসা ভাড়া দিলে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থা
সর্বশেষ খবর
বর্জনকারীদের ‘অনুসারীরাও’ ভোটে, সহিংসতার শঙ্কা দেখছে না ইসি
বর্জনকারীদের ‘অনুসারীরাও’ ভোটে, সহিংসতার শঙ্কা দেখছে না ইসি
দুর্ঘটনার পর থেকেই পড়ে আছে ৬০ লাখ টাকার অ্যাম্বুলেন্সটি, ভয় পুলিশের
দুর্ঘটনার পর থেকেই পড়ে আছে ৬০ লাখ টাকার অ্যাম্বুলেন্সটি, ভয় পুলিশের
ক্ষতচিহ্নিত হাড়মাংস অথবা নিছকই আত্মজনের কথা
ক্ষতচিহ্নিত হাড়মাংস অথবা নিছকই আত্মজনের কথা
পার্বত্য তিন উপজেলার ভোট স্থগিত
পার্বত্য তিন উপজেলার ভোট স্থগিত
সর্বাধিক পঠিত
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!
রাজকুমার: নাম নিয়ে নায়িকার ক্ষোভ!
সাবেক আইজিপি বেনজীরের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুদক
সাবেক আইজিপি বেনজীরের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান করবে দুদক
তাপপ্রবাহ থেকে ত্বক বাঁচানোর ৮ টিপস
তাপপ্রবাহ থেকে ত্বক বাঁচানোর ৮ টিপস
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস