X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

ছাত্রদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যত্নবান হতে বললেন তোফায়েল

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২২ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:৪২আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০১৮, ২০:৪৮

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ (ছবি- সংগৃহীত) ছাত্রদের যেকোনও বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের সবাইকে যত্নবান হতে বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।  সোমবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ এ আহ্বান জানান।

এদিকে, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে ‍সৃষ্ট সমস্যার সমাধান ও  এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সংসদে ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দেওয়ার দাবি তোলেন।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সোমবার প্রশ্নোত্তর পর্বের পর স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। এর পর জাতীয় পার্টির ফিরোজ রশীদ, সরকার দলের এনামুল হক ও সব শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখেন।  

ছাত্রদের বিষয়ে যত্নবান হতে আহ্বান জানানোর সময় তোফায়েল আহমেদ ছাত্রদের অতীতের গৌরবোজ্জল আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।

এ সময়  ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাটের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘গতবারের আগের বাজেটে আমরা ছাত্রদের বেতনের ওপর কর ধার্য করেছিলাম। তারা রাজপথে নেমে এসেছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটা বন্ধ করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এক সময় আমরা আন্দোলন করতাম জাতীয়করণের বিরুদ্ধে, আর এখন আন্দোলন হয় জাতীয়করণের দাবিতে। সবাই এখন জাতীয়করণ চায়।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সাম্প্রতিক উচ্চ আদালতের আদেশের প্রসঙ্গ তুলে ডাকসুর সাবেক ভিপি তোফায়েল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ডাকসু নির্বাচন হয় না। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্ট রায় দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল রাজনৈতিক নেতা তৈরির কারখানা। ৫০ থেকে ৬০ এর দশকে এখান থেকে নেতা হয়েছেন। পরবর্তীতে তারা জাতীয় নেতা হয়েছেন। আমাদের সময় কলেজে ছাত্র-সংসদ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ ছিল। আমরা ডাকসু ও চারটি ছাত্র সংগঠন মিলে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেছিলাম। আমরা চাই এদেশের ছাত্রসমাজ যেন আদর্শ নিয়ে চলতে পারে।’

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘এই সংসদে আমরা অনেকেই রয়েছি, যারা বিভিন্ন সময়ে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি। পাকিস্তানি সব শোষণ-বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন এই ছাত্ররাই করেছেন। বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন, আগরতলা, সত্তরের নির্বাচন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সব কিছুতেই ছাত্রসমাজ নেতৃত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ছাত্রসংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে সবার আগে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই স্বাধীন দেশে ন্যায্য আন্দোলন করতে গিয়ে একজন ছাত্র তার দুটি চোখই হারিয়েছেন। তার কী অপরাধ ছিল। এতদিন পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ স্বীকার করেছে, অপরিকল্পিতাবে সাতটি কলেজকে অধিভুক্ত করায় অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে টানাপড়েন, অসমঞ্জস্য। ছাত্ররা এখনও তাদের পরীক্ষার ফল পায়নি। এটার জন্য কে দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয় দুটি, নাকি ছাত্ররা?  ছাত্ররা তো পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছে। সময়মতো পরীক্ষা না হওয়ায় তাদের শিক্ষা জীবন ঝরে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? কোথাও কোনও জবাবদিহিতা নেই।’

অপরিকল্পিতভাবে সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে, অভিযোগ তুলে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘‘যে সাতটি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছে, তার সবগুলোই প্রথম শ্রেণির। সবার ফলাফল ভালো। তারা তো স্বাধীনভাবেই চলতে ছিল। কী দরকার ছিল এগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা।  আরেফিন সিদ্দিকী সাহেব  (ঢাবির সাবেক ভিসি) মনে করলেন ‘আমার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য এই সাতটি কলেজকে অধিভুক্ত করতে হবে।‘ একটি সিনেট নির্বাচনও দিলেন না। এখন তিনি ভাইস চ্যান্সেলর নেই। কিন্তু বাড়ি দখল করে রেখেছেন। এর জবাব  কে দেবেন?’’

এ বিষয়ে সংসদে শিক্ষামন্ত্রীর ৩০০ বিধিতে বিবৃতি দাবি করে সাবেক ছাত্রনেতা ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো- এই বিষয়ে সংসদে ৩০০ বিধিতে বক্তব্য দেবেন। শিক্ষামন্ত্রীকে বলবো, দয়া করে এই সমস্যার অবসান করুন। বিবৃতি দিয়ে এই সংসদকে অবহিত করুন। আমাদের আশ্বস্ত করুন শিক্ষার্থীদের জীবন থেকে কোনও শিক্ষাবর্ষ নষ্ট হবে না। তারা যাতে ঠিকমতো পড়াশুনা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নিন।’
এদিকে, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে চিকিৎসকসহ অন্যান্য ক্যাডারের বৈষম্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘মধু কি সব এক জায়গায়, প্রশাসন ক্যাডারে?’
অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি বলেন, ‘অনেকে হয়তো বুয়েট- মেডিক্যালে ভর্তি হতে না পেরে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোথাও ভর্তি হন। কিন্তু পড়ালেখা শেষে যখন সরকারি চাকরিতে ঢোকেন, একজনমেডিক্যাল অফিসার তখন দেখেন- তার বন্ধু প্রশাসন ক্যাডারে যুগ্ম সচিব। তাকে স্যার সম্বোধন করতে হয়। তিনি অভিযোগ করেন, চিকিৎসা, কৃষি, প্রকৌশলের মতো কারিগরি ক্যাডারে পদোন্নতি যথাসময়ে হয় না। এখানে দুরাবস্থা। এই অবস্থা দূর করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী ও জনপ্রশাসনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।’

 

/ইএইচএস/এপিএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি
টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪ পণ্যকে জিআই স্বীকৃতি
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন বিসমাহ মারুফ 
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতার মৃত্যুদণ্ড
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতার শঙ্কা সিইসির
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না
ভুল সময়ে ‘ঠিক কাজটি’ করবেন না