X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতির সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৭ মার্চ ২০১৮, ১২:৩৩আপডেট : ১৭ মার্চ ২০১৮, ১৫:৫৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিনে জাতির কাছে সুখবর দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, আজকে আমরা সুখবর পেলাম আমরা আর পিছিয়ে নেই। জাতিসংঘের দেওয়া স্বীকৃতি অনুযায়ী আজ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উপনীত হলো। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশ একধাপ এগিয়ে গেলো বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

শনিবার (১৭ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শিশু সমাবেশ,আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশের মানুষের জন্য নিরন্তর কাজ করতে গিয়ে একটানা দুই বছরও আমার বাবা বুঝি কারাগারের বাইরে থাকতে পারেননি। এতেই বোঝা যায় তিনি কী গভীরভাবে বাংলার মানুষকে ভালোবাসতেন। এমনকি পরিবারের চেয়ে দেশের মানুষকে তিনি বেশি ভালোবাসতেন বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লেখা কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়লে বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম এবং দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসার বিষয়টি বোঝা যায়। অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন,‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসেবে যা কিছু বাঙালিদের সাথে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্প্রীতির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা, যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ তার লেখার মধ্যেই আছে তিনি এ দেশের মানুষকে ভালোবাসতেন। বাংলার মানুষ খেতে পায় কিনা, রোগের চিকিৎসা পায় কিনা এ সবকিছুই তাকে ভাবাতো। বাংলার মানুষের অধিকারের কথা বলতে গিয়েই তিনি বারবার জেল-জুলুম, কারাগারের শিকার হয়েছেন।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির পিতার ডাকেই সাড়া দিয়েছে বাংলার মানুষ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তিনি স্বাধীনতার  ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে এদেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে এ দেশকে স্বাধীন করে। সেই ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের দলিল’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। মানবজাতির আড়াই হাজার বছরের ইতিহাসে সামরিক-বেসামরিক যত নেতা ভাষণ দিয়েছেন তার মধ্যে এই ভাষণটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। কাজেই আজকে আমরা বাঙালি জাতি গর্বিত। আজকের দিনে আমি জাতির পিতা, জাতীয় চার নেতা, ৩০ লক্ষ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। দুই লক্ষ মা বোনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন। এরমধ্যেই তিনি দেশের উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন। আরেকটু সময় পেলে এই বাংলাদেশকে আরও আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করতে পারতেন। কিন্তু ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমরা দুটি বোন বিদেশে ছিলাম বলেই বুঝি বেঁচে গিয়েছি। বিদেশে আমরা দুই বছর রিফিউজির জীবন যাপন করেছি। তারপরেও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করতে রাজনীতিতে এসেছি। সব সময় দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।

এসময় দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদের অবদানের কথা তুলে ধরেন তিনি।

অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, জাতির পিতার জন্মদিনে আজ একটা সুখবর দিতে চাই। আজ বাংলাদেশ জাতিসংঘ থেকে স্বীকৃতি পেয়েছে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। আমাদের পাশের দেশ ভারত এই স্বীকৃতি আগেই অর্জন করেছিল। আজ থেকে আমরা তা অর্জন করলাম। জাতির পিতা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত যে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই দেশ গড়ার পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। তার একধাপ অগ্রযাত্রা অর্জন করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এই সুখবর বাঙালি জাতির জন্য এক বিরাট সুখবর বলে আমি মনে করি। সেজন্য সকলকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।

আমরা শিশুদের শরীর-স্বাস্থ্য, মন-মানসিকতা সব কিছু উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। খেলাধুলা, শরীরচর্চা সবকিছুর দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি। এমনকি গ্রাম্য বিভিন্ন হারিয়ে যাওয়া খেলা প্রতিযোগিতার মধ্যে নিয়ে আসা হচ্ছে। খেলাধূলার দিকে যাতে আরও নজর দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। এর ফলে আমাদের শিশুরা সুস্থ দেহ ও মন নিয়ে বেড়ে উঠবে। একটা অনুরোধ করবো বাবা-মা, শিক্ষকসহ অন্যান্যদের প্রতি, ওই ছোট্ট শিশু থেকে যুবশ্রেণি পর্যন্ত, আপনার সন্তান কোথায় যায় কী করে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে। যেন কেউ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদে না জড়ায়, মাদকাসক্ত না হয়, এসবে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তারা যেন সুস্থ জীবন পায়, বাবা-মা, ভাই-বোনকে নিয়ে সুন্দর জীবনযাপন করে।

আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবো। জাতির পিতার আদর্শ বুকে নিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। ২০২১ সালে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো। এই বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। যা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল এবং আমি বিশ্বাস করি আমরা তা পারবো অর্জন করতে। আমরা শিশু শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিচ্ছে, প্রতিবন্ধীদের ভাতা দিচ্ছি, কেউ যেন সুবিধাবঞ্চিত না থাকে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তার সুফল হলো বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ, বাংলাদেশ এখন বিশ্বসভায় মর্যাদা নিয়ে চলবে। আজকের শিশুদের দিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করছি। আজকের শিশুরাই আগামী দিনে কেউ আমার মতো প্রধানমন্ত্রী হবে, কেউ বিভিন্ন জায়গায় যাবে। আজকে আমরা যা করছি, এরই ধারাবাহিকতায় এই শিশুরা আগামী দিনে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটাই আমার আশা।

/টিএন/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
কোপেনহেগেনের ঐতিহাসিক স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন
কোপেনহেগেনের ঐতিহাসিক স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনে আগুন
ঈদের ছুটি শেষে ফিরছিলেন ঢাকায়, পথেই শেষ ৪ সদস্যের পরিবার
ফরিদপুরে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ১৩ঈদের ছুটি শেষে ফিরছিলেন ঢাকায়, পথেই শেষ ৪ সদস্যের পরিবার
কাজলরেখা: ঘোড়া, গরু, হাতিগুলো স্বাস্থ্যবান নয়
সিনেমা সমালোচনাকাজলরেখা: ঘোড়া, গরু, হাতিগুলো স্বাস্থ্যবান নয়
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নৌকাডুবিতে নিহত ৪
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নৌকাডুবিতে নিহত ৪
সর্বাধিক পঠিত
কিছু আরব দেশ কেন ইসরায়েলকে সাহায্য করছে?
কিছু আরব দেশ কেন ইসরায়েলকে সাহায্য করছে?
সরকারি চাকরির বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১৮ এপ্রিল
সরকারি চাকরির বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শেষ ১৮ এপ্রিল
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদির ‘ঈদের চিঠি’ ও ভারতে রেকর্ড পর্যটক
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
৪ দিনেই হল থেকে নামলো ঈদের তিন সিনেমা!
বিসিএস পরীক্ষা দেবেন বলে ক্যাম্পাসে করলেন ঈদ, অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ি
বিসিএস পরীক্ষা দেবেন বলে ক্যাম্পাসে করলেন ঈদ, অবশেষে লাশ হয়ে ফিরলেন বাড়ি