নেপালের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালের সামনে এখন ইউএস-বাংলা উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহতদের স্বজনদের ভিড়। শনিবার (১৭ মার্চ) মরদেহ দেখার সুযোগ মিলবে বলে আশাবাদী তারা। এদিন মরদেহ শনাক্তকরণ শুরু হবে জেনে সকাল থেকে হাসপাতালে জড়ো হয়েছেন এই বাংলাদেশিরা।
উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার পর থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন খবর জানতে পারলেও এখনও লাশ দেখতে পারেননি স্বজনরা। শনিবারও যে সেই সুযোগ হবে তা নিশ্চিত নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শনাক্তকরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মরদেহ হস্তান্তর করা হবে না।
এদিকে নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের লাশ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ড. সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘নিহতদের লাশ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। শনিবার বিকালের মধ্যে স্বজনরা মরদেহ দেখতে পারবেন।’
নেপাল প্রবাসী বাংলাদেশি আশিক কাঞ্চন দুর্ঘটনার দিন থেকেই হতাহতের স্বজনদের সহায়তায় ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালে আছেন। তিনি শনিবার বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, পরিবারের দেওয়া সম্ভাব্য শনাক্তকরণের তথ্যের সঙ্গে ময়নাতদন্তের তথ্য মিলিয়ে দেখার কাজ চলছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৪০টি মরদেহের ক্রসম্যাচিং শেষ হয়েছে। এরপর পুলিশের কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। সব মরদেহ ক্রসম্যাচিং সম্পন্ন হলে পুলিশের সঙ্গে মিলিয়ে তারপর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
এদিকে নিহত বিলকিস আরার স্বামী ও পিয়াস রায়ের বাবা তাদের অ্যান্টিমর্টেম ফর্ম জমা দিয়েছেন শনিবার। একইসঙ্গে মিনহাজ, প্রিয়ক ও আহমেদ ফয়সালের তথ্য কিছু বাকি ছিল, সেগুলো যাচাই করে নেওয়া হয়েছে।
গত ১২ মার্চ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগ-মুহূর্তে পাশের একটি ফুটবল মাঠে বিধ্বস্ত হয়। ৬৭ যাত্রী ও চার ক্রুসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন ওই ফ্লাইটে। এর মধ্যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বাংলাদেশের ২৬ জন ও নেপালের ২১ জন। এছাড়া চীন ও মালদ্বীপের একজন করে যাত্রী নিহত হন। আহতদের মধ্যে ১০ জন বাংলাদেশি ও ১২ জন নেপালের নাগরিক।
ওই ফ্লাইটে থাকা আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে পাঁচ জন নেপালের হাসপাতাল ছেড়েছেন। তাদের মধ্যে রেজওয়ানুলকে কাঠমান্ডুর ওএম হাসপাতাল থেকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে। আর শাহরিন আহমেদ, মেহেদী হাসান, তার স্ত্রী সৈয়দা কামরুন নাহার স্বর্ণা ও মেহেদীর ভাবি আলমুন নাহার অ্যানি কাঠমান্ডুর কেএমসি থেকে দেশে ফিরেছেন। তাদেরকে ভর্তি করা হয়েছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে।