X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ভিন্ন সাজে অন্য রকম সচিবালয়

শফিকুল ইসলাম
২২ মার্চ ২০১৮, ২১:৪৩আপডেট : ২৩ মার্চ ২০১৮, ১৫:১৫

 

সচিবালয়ে সরকারের উন্নয়ন প্রচারণামূলক পোস্টার অন্য রকম সাজে সেজেছে সরকারের শীর্ষ প্রশাসনিক দফতর বাংলাদেশ সচিবালয়। সচিবালয়ের ভেতরে অবস্থিত প্রতিটি ভবন সাজিয়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন দিয়ে। স্বল্পোন্নত দেশের স্ট্যাটাস থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় উন্নীত হয়েছে। এই উত্তোরণের মানদণ্ডে জাতিসংঘের নির্দেশিত যে তিনটি সূচক অর্জন করতে হয়, বংলাদেশ তা অর্জন করেছে একসঙ্গে। এগুলো হলো—মাথাপিছু আয়, মানব সম্পদের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা ৩২-এর নিচে থাকা। বংলাদেশ এই তিনটি সূচকেই এগিয়ে রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৪ সালে বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যদা পাবে বাংলাদেশ।  তাই এই আনন্দ।

জানা গেছে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার মানদণ্ডে মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৩০ মার্কিন ডলার প্রয়োজন। মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচক ৬৬ শতাংশ বা তার বেশি প্রয়োজন এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক ৩২ বা তার নিচে থাকতে হবে। অর্থমন্ত্রীর ভাষায়, বংলাদেশে এখন মাথাপিছু আয় ১ হাজার ২৭১ মার্কিন ডলার। মানবসম্পদ সূচক ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচক ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ। এ কারণেই বাংলাদেশ এ স্বীকৃতি পেয়েছে।

সচিবালয়ে সরকারের উন্নয়ন প্রচারণামূলক ব্যানার

এ উপলক্ষেই এসব ব্যানার ফেস্টুন পোস্টার দিয়ে সাজানো হয়েছে ভবনগুলাকে। সেখানে লাগানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে পোস্টার ও ব্যানার। আছে সরকারের সাফল্যগাথা বর্ণনা করে পোস্টার, ডিসপ্লে বোর্ড, মন্ত্রণালয়ের সাফল্যগাথার পোস্টার, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর পোস্টার। আছে সরকারের উন্নয়নের স্লোগান সংবলিত পোস্টার। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে আনন্দ শোভাযাত্রা যেন বর্ণাঢ্য হয়, সেজন্য সব মন্ত্রণালয়ই ভিন্ন রঙের গেঞ্জি ও ক্যাপ বানিয়েছে। যাতে বংলাদেশের পতাকার রঙ লাল ও সবুজের ব্যবহার করা হয়েছে। যা পরিধান করেছে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সকালেই এই গেঞ্জিগুলো নিজ নিজ দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বিলি বণ্টনের সময় অনেককেই আনন্দ করতে দেখা গেছে। অনেককে দেখা গেছে নিজেদের মোবাইলে সেলফি তুলতে। এই গেঞ্জি গায়ে দিয়ে কখনও একা আবার কখনও দল বেঁধে ঘুরে বেড়িয়েছেন সটিবালয়ের ভেতরেই।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই সচিবালয়ে ছিল সাজ সাজ আমেজ। সরকারি কঠোর নির্দেশ থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মন্ত্রী ও সচিবরা ছাড়া অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী  নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এসে হাজির হয়েছেন কর্মস্থলে। মন্ত্রী ও সচিবরা ছিলেন এ উপলক্ষে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। সচিবালয়ের ভেতরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছিলেন অনেকটাই ছুটির আমেজে। অনেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ব্যাগ। উদ্দেশ্য আনন্দ র‌্যালিতে অংশ নিয়ে অনেকেই ছুটবেন বাড়ি। কারণ আগামী দু’দিন শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। রবিবার ২৫ মার্চ অফিস খোলা থাকলেও সোমবার ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের ছুটি। তাই এই সুযোগ অনেকেই হাতছাড়া করতে চাননি। তাই অনেকেই রবিবার ছুটি নিয়েছেন। 

সচিবালয়ে সরকারের উন্নয়ন প্রচারণামূলক পোস্টার

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী আশরাফ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ‘আজ খুশির দিন। সরকার  ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন আমাদের দায়িত্ব। তাই র‌্যালিতে  যাচ্ছি। সন্ধ্যায় স্টেডিয়ামে সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উভোগ করবো।’

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘র‌্যালিতে অংশ নিয়ে বিকালে বাড়ি যাবো। দু’দিনের সপ্তাহিক ছুটিসহ তিনদিনের ছুটি পেয়েছি। রবিবারের ছুটি নিয়েছি। মঙ্গলবার এসে অফিস করবো। তাই সকালে বাসা থেকে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়েছি।’ 

‘অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’—এই স্লোগানে আনন্দ শোভাযাত্র করেছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বর্ণিল ব্যানার, ফেস্টুন, ব্যান্ড পার্টিসহ র‌্যালি নিয়ে বেরিয়েছেন তারা। পূর্বনির্ধারিত ৯টি স্থানে আগে থেকে জমায়েত হয়েছেন তারা।ওই পয়েন্টগুলো থেকেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গিয়ে যোগ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।

সচিবালয়ে সরকারের উন্নয়ন প্রচারণামূলক পোস্টার

বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তারা নির্দিষ্ট সময়ের ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই রাস্তায় নেমে এসেছেন র‌্যালিতে যোগ দেওয়ার জন্য। ব্যানার, ফেস্টুন, বিভিন্ন লোকজ মোটিফ, বাহারি রঙের বেলুন নিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করেছেন তারা। রাজধানীর শিশু একাডেমি, জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি ও মৎস ভবন সংলগ্ন এলাকা, শিশু একাডেমি ও দোয়েল চত্বর সংলগ্ন এলাকা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন এলাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেশিয়াম মাঠ ও সংলগ্ন এলাকা, নগর ভবন (ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন), বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর, রমনা পার্কের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ ও মতিঝিলের শিল্প ভবন চত্বরে জড়ো হয়ে সেখান থেকে র‌্যালি করে স্টেডিয়াম পৌঁছান।   

সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী-সচিবরাও সেই অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। পোশাক পরিহিত পুলিশ সদস্য ছাড়াও সাদা পোশাকে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন স্টেডিয়াম এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে।

/এমএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা