নেপালে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার পর সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারাটাই অনেক বড় ব্যাপার বলে মন্তব্য করেছেন শাহরিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমি সুস্থ হয়ে নরমাল জীবনে ফিরতে পারছি, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমার বেঁচে ফেরাটা অবভিয়াসলি একটা গিফট। কারণ, আমার চোখের সামনেই আমি তিনজনকে স্ম্যাশ হয়ে যেতে দেখেছি।’
২৪ দিন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে রিলিজ পেয়ে রবিবার (৮ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে বাড়ি ফেরার সময় এসব কথা বলেছেন শাহরিন আহমেদ। এরপর ঢামেক হাসপাতাল থেকে শাহরিনকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তার মা ফেরদৌসী মোশতাক।
সকালে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, শাহরিনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল থেকে যাওয়ার সময় নেপালের দুর্ঘটনার পরবর্তী পরিস্থিতি সম্পর্কে শাহরিন বলেন, ‘আমি নেপালের হাসপাতালে দুদিন একা ছিলাম। এরপর ভাইয়েরা আমার কাছে পৌঁছায়। তখন আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। অনেক গণমাধ্যমের সঙ্গে আমি ভালো ব্যবহার করতে পারিনি। এজন্য ক্ষমা চাই।’
সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শাহরিন বলেন, ‘আমরা যারা বেঁচে ফিরেছি, আমাদের সবার জন্য আপনারা দেশবাসী দোয়া করবেন, যেন আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারি। আমি ঢাকা মেডিক্যালের সিনিয়র জুনিয়র ডাক্তার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এরা সবাই আমার জন্য অনেক করেছেন।’ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে এসে সবাইকে আবার ধন্যবাদ জানিয়ে যাবেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে, নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত শাহরিন আহমেদকে কাঠমান্ডু থেকে এনে ১৫ মার্চ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের আইসিইউ থেকে ভিআইপি কেবিন-২-এ নেওয়া হয় তাকে। শাহরিনের পায়ে একটা ফ্রাকচার ও শরীরে পাঁচ শতাংশ বার্ন ছিল।
উল্লেখ্য, ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি বিমান ৬৭ যাত্রী ও চারজন ক্রু নিয়ে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৫১ জন নিহত হন। এরমধ্যে ২৬ জন বাংলাদেশি। এ ঘটনায় আহত শাহরিন আহমেদকে নেপাল থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি ১৫ মার্চ বিকাল ৫টা ৪ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যালে এসে পৌঁছায়। এ সময় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন এবং ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন তাকে রিসিভ করেন।
এ সংক্রান্ত সংবাদ: নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহত শাহরিন বাড়ি ফিরছেন