X
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪
১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডিএসসিসিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮ এলাকা, পানি নির্গমনের স্থান ৫টি!

শাহেদ শফিক
২১ এপ্রিল ২০১৮, ১৮:০০আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০১৮, ১৮:০৬

ডিএসসিসিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮ এলাকা, পানি নির্গমনের স্থান ৫টি! সামান্য বৃষ্টিতেই পানি থই থই করে রাজধানীতে। বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উদ্যোগ ও আশ্বাসের কথা জানালেও কোনও সমাধান যেন নেই। শুধু ড্রেন পরিষ্কার আর নদী ও খাল অবৈধ দখল মুক্ত করার পরামর্শ ছাড়া কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু মাত্র পাঁচটি পথ দিয়ে এসব পানি ঢাকার বাইরে নির্গমণ হচ্ছে। ডিএসসিসি ও ঢাকা ওয়াসার এক প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

ডিএসসিসি’র এলাকা নিয়ে করা ওই অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে— মতিঝিল, দিলকুশা, দৈনিক বাংলা, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, সেগুনবাগিচা, পল্টন, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী, সার্কিট হাউজ রোড, রাজারবাগ, শান্তিবাগ, ফকিরেরপুল ও আরামবাগের পানি সেগুনবাগিচা বক্স কালভার্ট-কমলাপুর পাম্প-মানিক নগর খাল-জিরানি খাল ও মাণ্ডাখাল হয়ে বালু নদী ও বুড়িগঙ্গায় চলে যায়। ধানমন্ডি-২৭, রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি-৮/এ স্টাফ কোয়ার্টার মোড়, কাঁঠাল বাগান, গ্যাস্ট্রোলিভার গলি, কলাবাগান ডলফিন গলি, গ্রিনরোড, মাদারটেক ও মেরাদিয়ার পানি নিষ্কাশন হয় পান্থপথ বক্স কালভার্ট-হাতিরঝিল হয়ে রামপুরা খাল দিয়ে বালু নদীতে। নিউমার্কেট পশ্চিম-দক্ষিণ পাশের বটতলা, বিজিবি-৪ নং গেটের পানি বিজিবি ৩ নং গেট, নাজিমউদ্দিন রোড, হোসেনি দালান, চকবাজার, লালবাগ, কাজী আলাউদ্দিন রোড ও বংশালের পানি নিষ্কাশন হয় বুড়িগঙ্গা সুইচগেট হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে।

অন্যদিকে গুলিস্তানের পানি নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা নেই। এ কারণে বৃষ্টিতে সচিবালয় ও বঙ্গভবন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদার পানি নিষ্কাশন হয় বাসাবো-মাদারটেক-ত্রিমোহনী খাল হয়ে বালু নদী ও বুড়িগঙ্গায়। কাপ্তান বাজার, লক্ষ্মীবাজার ও আগামসি লেনের পানি নিষ্কাশন হয় ইংলিশ রোড-ধোলাইখাল বক্স কালভার্ট হয়ে সূত্রাপুর পাম্পে। জুরাইন, পোস্তগোলা, মুরাদপুর, শ্যামপুর, কদমতলা ও দয়াগঞ্জ রেল ব্রিজের পানি নিষ্কাশন হয় জিয়া সরণি খাল-রসুলবাগ-শিমরাইল পাম্প (পানি উন্নয়ন বোর্ড) হয়ে শীতলক্ষ্মায়। এছাড়া মীর হাজীরবাগ এলাকার পানি নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা নেই।

প্রতিবেদনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির বেশকিছু কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— জলাঞ্চল ও অনগরায়িত নিম্নবর্তী এলাকার পরিমাণ কমে যাওয়া, নদী-নালা, খাল-বিল ভরাট হওয়া, ত্রুটিপূর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও অপ্রতুলতা, ইউটিলিটি লাইনের কারণে ড্রেনেজ লাইন বাধাগ্রস্ত হওয়া, পার্শ্ববর্তী এলাকার তুলনায় জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা নিচু হওয়া; প্রাকৃতিক জলাধারের পরিমাণ কমে যাওয়া; ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক ময়লা আর্বজনায় ভরে যাওয়া; পৃথক স্টর্ম ও ওয়েস্ট স্যুয়ার লাইন না থাকা; ড্রেনেজ ব্যবস্থার কার্যকারিতা কমে যাওয়া।

ডিএসসিসিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮ এলাকা, পানি নির্গমনের স্থান ৫টি! ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— ওয়াসার সঙ্গে ডিএসসিসি’র সমন্বিত ড্রেনেজ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা; প্রতিটি ড্রেনের আউটলেট গড়ে তোলা ও নিয়মিত পরিষ্কার; পানি নিষ্কাশনের ভলিউম অনুযায়ী অলিগলি ও প্রধান সড়কে পাইপ স্থাপন; অতিবর্ষণে পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্ত ড্রেনেজ লাইন গড়ে তোলা; ভৌগলিক তথ্য অনুসরণ করে ড্রেন নির্মাণ, নির্ধারিত সময়ে খনন কাজ শেষ করা; বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক রাস্তা খননের পর বালু দিয়ে ভরাট করা; ড্রেনের ময়লা উত্তোলনের পরপরই সরিয়ে ফেলা; ভরাট খাল পুনঃউদ্ধার করা; প্রতিটি এলাকায় আলাদা স্যুয়ারেজ লাইন তৈরি; নির্মাণ সামগ্রী রাস্তায় রাখা বন্ধ করা; বক্স কালভার্ট ভেঙে পরিষ্কার করা ও নতুন কোনও বক্স কালভার্ট নির্মাণ না করা; জলাশয় ও নিচু জমি উন্মুক্ত রাখা; জমি অধিগ্রহণ করে নতুন জলাধার তৈরি ও পাম্পিং ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো।

এ অবস্থা থেকে প্রতিকার পেতে বেশকিছু সুপারিশ দেওয়া হয় ওই প্রতিবেদনে। এগুলো হলো— ড্রেনেজ অবকাঠামো সম্প্রসারণ, পুনর্বাসন এবং কার্যকরীসহ প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী নতুন ড্রেনেজ অবকাঠামো তৈরি; ক্যাচপিট, সসার ড্রেন, খোলা ড্রেন, ফুটপাথের নিচে অবস্থিত পাইপ ড্রেনসহ স্টর্ম স্যুয়ার/বক্স কালভার্ট নিয়মিত পরিষ্কারসহ রক্ষণাবেক্ষণ; বৃষ্টির পানি ও পয়ঃবর্জ্যসহ অন্যান্য বর্জ্যের জন্য পৃথক স্যুয়ারেজ লাইন তৈরি; প্রাকৃতিক জলাধার, নদী-নালা, খাল-বিল, লেক ও নিম্নবর্তী জলাঞ্চল উদ্ধার করে রক্ষণাবেক্ষণ; ড্রেনেজ সিস্টেমে ময়লা আর্বজনা, রাবিশ ও নির্মাণ সামগ্রী ফেলা প্রতিরোধ; জনসচেনতা বৃদ্ধি; আইন প্রয়োগ; নদী ও খাল অবৈধ দখল বন্ধ করা; বক্স কালভার্ট নির্মাণের পরিবর্তে প্রাকৃতিকভাবে খালগুলো সংরক্ষণ; খাল প্রশ্বস্ত ও খালপাড় উঁচু করা; পাম্পিং এলাকায় বড় জলাধারের ব্যবস্থাসহ এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীর পানি ও পয়ঃবর্জ্য অপরিশোধিতভাবে আশপাশের বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীতে সরাসরি পড়ায় এর পানি দূষিত হচ্ছে।

পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘পানিতে প্রতি লিটার ৫ মিলিগ্রাম ডিও থাকার কথা থাকলেও দূষণের কারণে এসব নদীর পানিতে ডিওর মাত্রা নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ মিলিগ্রামের নিচে। এ কারণে দূষিত হয়ে পড়েছে পুরো নদী। এতে নদীর জীববৈচিত্র বিলুপ্তির পথে।’

পুরান ঢাকার পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য হাজী আওলাদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতি বছর ঢাকার দুই সিটির মেয়র, ওয়াসার এমডি ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জলাবদ্ধতা নিরসনে অনেক কথা বলে থাকেন। কিন্তু আমরা কাজের কাজ কিছুই দেখিনি। জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত সিটি করপোরেশনের।

ডিএসসিসিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮ এলাকা, পানি নির্গমনের স্থান ৫টি! অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৭৮১ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার রাস্তা ও ২১৭ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার ফুটপাত, ৪৬৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার খোলা ও ৪৯৫ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার পাইপ ড্রেন রয়েছে। এছাড়া ঢাকা ওয়াসার ১০ কিলোমিটার বক্স কালভার্ট, ৬৫ কিলোমিটার খাল, ৪টি পাম্পিং স্টেশন, ৩৪৬ কিলোমিটার পাইপ ড্রেন (প্রাইমারি লাইন) রয়েছে। এসবের মাধ্যমে ধানমন্ডি লেক, জিরানী-নন্দিপুর খাল, খিলগাঁও-বাসাবো খাল-১, ২ ও ৩, জিরানী খাল, হাজারীবাগ খাল, ধোলাইখাল, সেগুনবাগিচা খাল-১ ও ২ এবং মাণ্ডা খাল রয়েছে। এসব খাল দিয়েই বুড়িগঙ্গা ও বালু নদীতে যায় ঢাকা দক্ষিণের পানি।

নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কাজ করছে ঢাকা ওয়াসা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, রাজউক ও জেলা প্রশাসন। এত সংস্থা থাকার পরেও বর্ষায় নগরজুড়ে ঠিকই তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা যায়। এর মধ্যে ১৯৮৪, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৯৭, ১৯৯৮, ২০০৮ ও সবশেষ ২০১৭ সালে জলাবদ্ধতা ছিল দুঃসহ।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চারদিকের নিম্নাঞ্চলগুলো ভরে যাওয়ায় ঢাকা এখন হয়ে গেছে বালতির মতো! তাই পাম্পিংয়ের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন করতে হয়। তাছাড়া আমাদের যেসব খাল ও পুকুর রয়েছে সেগুলো প্রতি বছর পরিষ্কার করে থাকি। এখন ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কৃত্রিমভাবে ড্রেন নির্মাণ করে সেগুলো সচল রাখতে হবে।’

ডিএসসিসিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮ এলাকা, পানি নির্গমনের স্থান ৫টি! ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণের জলাবদ্ধতাপ্রবণ অর্ধশতাধিক স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন কাজ হচ্ছে সেইসব স্থান থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা।’ তিনি মনে করেন, জলাবদ্ধতার মূল দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার। তার ভাষ্য, ‘এরপরেও আমরা আমাদের জেট-অ্যান্ড সাকার মেশিন ও কর্মীবাহিনী দিয়ে প্রতিনিয়ত ড্রেন পরিষ্কার করে থাকি। তাছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতি বছর নতুনভাবে ড্রেন নির্মাণ করা হয়। তবে এসব ড্রেন পরিষ্কার, সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের জন্য ডিএসসিসির বার্ষিক বরাদ্দের পাশাপাশি বিভিন্ন দাতা সংস্থার তহবিলও থাকে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। উপরন্তু প্রতি বছর জলাবদ্ধতা আরও বেশি বৃদ্ধি পায়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকার এসব জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রতি বছর শত কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। এ বছর সড়ক, ফুটপাত ও সারফেস ড্র্রেন নির্মাণে ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরেছে ডিএসসিসি। ইতোমধ্যে প্রায় সব টাকা খরচ করেছে এই সংস্থা। কিন্তু আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছে না নগরবাসী। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসাও তাদের নিজস্ব ড্রেন পরিষ্কারের পেছনে ব্যয় করে বড় অংকের টাকা। কিন্তু প্রতি বছর এই খাতে টাকা খরচ হলেও ড্রেনের কোনও উন্নয়ন হয় না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ মোবাশ্বের হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঢাকায় নতুন নতুন যেসব ড্রেন বানানো হচ্ছে সেগুলোর শুরু ও শেষ কোথায় তা দেখতে হবে। কোনও প্রবাহমান খাল বা নদীতে থাকতে হবে প্রতিটি ড্রেনের শেষাংশ। কিন্তু ঢাকায় তা নেই। তাছাড়া রাজধানীতে যে ৮-১০টি খালের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলোর শেষাংশ কোনও না কোনও হাউজিং কোম্পানির কবলে পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। এ কারণে কোনও খাল প্রবাহমান নেই। এখন যে খাল বা ড্রেনের শেষাংশ ব্লক হয়ে গেছে তা যতই পরিষ্কার করা হোক তা কাজে আসবে না। ফলে পানি প্রবাহ হবে না। এ কারণে বৃষ্টি হলেই শহর ডুবে যায়।’

এই নগর পরিকল্পনাবিদের পরামর্শ— ‘পানি নিষ্কাশনের যে পাঁচটি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে তা এ বিশাল শহরের জন্য অপ্রতুল। বারবার বলে আসছি; খাল, ড্রেন বা নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হলে সব সেবা সংস্থাকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এগুলোকে একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করতে হবে। তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেই প্রতিষ্ঠান উদ্যোগী হবে। নয়তো জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে না।’

ডিএসসিসিতে জলাবদ্ধতাপ্রবণ ৪৮ এলাকা, পানি নির্গমনের স্থান ৫টি! জানা গেছে, ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নব্বই দশকের দিকে বিশেষজ্ঞ কমিটি দিয়ে একটি জরিপ করে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হয়েছে। কিন্তু এর একটি প্রস্তাবনাও বাস্তবায়ন হয়নি। ওই প্রস্তাবনায় বলা হয়— ঢাকা শহর থেকে পানি নির্গমনের যে পাঁচটি আউটলেট রয়েছে সেগুলোর মুখে বড় বড় জলাধার প্রয়োজন। শহরের পানিগুলো খাল বা ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ওই জলাধারগুলোতে আবদ্ধ হবে। সেখান থেকে দুই পদ্ধতিতে পানি অপসারণ করা যেতে পারে নদীতে। প্রথমত, নদীতে পানি কম হলে তখন স্বাভাবিক গতিতে পানি চলে যাবে। আর নদীতে পানি বেশি বা জোয়ার থাকলে পাম্পিং পদ্ধতিতে পানি অপসারণ করা হবে। কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সহ-সভাপতি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নব্বই দশকের দিকে যে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। সবশেষ ২০১৫ সালের দিকেও আরেকটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয়। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা তা প্রকাশ করছে না।’

এই বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘দিন দিন চারপাশের খালি জায়গাগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এখনই যদি ওই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে ভবিষ্যতে আর জলাধার তৈরির জন্য জমি পাওয়া যাবে না। তখন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।’

/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে সামাজিক কুসংস্কার’
‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে সামাজিক কুসংস্কার’
নারী উদ্যোক্তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহার বিষয়ক প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠিত
নারী উদ্যোক্তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ ব্যবহার বিষয়ক প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠিত
ইউক্রেনকে ৬২ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
ইউক্রেনকে ৬২ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
ছেলেকে প্রার্থী করায় এমপি একরামুলকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি
ছেলেকে প্রার্থী করায় এমপি একরামুলকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি
সর্বাধিক পঠিত
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
আজকের আবহাওয়া: তাপমাত্রা আরও বাড়ার আভাস
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
মাতারবাড়ি ঘিরে নতুন স্বপ্ন বুনছে বাংলাদেশ
অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা
অতিরিক্ত সচিব হলেন ১২৭ কর্মকর্তা
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
সকাল থেকে চট্টগ্রামে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা, রোগীদের দুর্ভোগ
উৎপাদন খরচ হিসাব করেই ধানের দাম নির্ধারণ হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী 
উৎপাদন খরচ হিসাব করেই ধানের দাম নির্ধারণ হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী