X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ শুরু আজ

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৩ এপ্রিল ২০১৮, ০৯:৩৮আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০১৮, ১৩:২৮

জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পুষ্টি বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও পুষ্টি উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে আজ সোমবার (২৩ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ-২০১৮। জনগণের খাদ্যাভাস ও খাদ্য পরিকল্পনায় পুষ্টির বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার লক্ষ্যে এ বছর পুষ্টি সপ্তাহের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘খাদ্যের কথা ভাবলে পুষ্টির কথাও ভাবুন’। দীর্ঘ ১৯ বছর পর এ বছর পালিত হচ্ছে পুষ্টি সপ্তাহ। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এই সপ্তাহ।

পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পুষ্টিখাতের উন্নয়নে সারা বিশ্বে রোল মডেল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সুস্থ, সবল ও সমৃদ্ধ দেশ গড়তে ১৯৭৪ সালে জাতীয় পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এবং ১৯৭৫ সালের ২৩শে এপ্রিল জাতীয় পুষ্টি পরিষদ গঠন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুনর্গঠিত জাতীয় পুষ্টি পরিষদের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে চলমান পুষ্টি কার্যক্রম ভিন্নমাত্রা পেয়েছে। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি পরিষদের উদ্যোগে প্রণীত হয়েছে জাতীয় পুষ্টিনীতি ২০১৫ এবং দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা। এসব আইন ও নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ ও সফল প্রয়োগের মাধ্যমে জনসাধারণের নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, ‘সামাজিক কুসংস্কার, অজ্ঞতা ও অসচেতনতা আমাদের দেশে পুষ্টিক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের একটি বড় বাধা। এই বাধা অতিক্রম করার জন্য পরিকল্পিত, সমন্বিত ও সুসংহত কার্যক্রমের বিকল্প নেই।’

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘জাতীয় পুষ্টিনীতি ২০১৫ অনুসরণ করে ‘দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা (২০১৬- ২০২৫)’ গ্রহণ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে আছে ভ্রূণ অবস্থা থেকে শুরু করে ২৩ মাস বয়স পর্যন্ত শিশু, কিশোরী, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মা, বয়স্ক জনগোষ্ঠী, শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের অপুষ্টির বিষয়টিও এই জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গরিব, দুস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার জনগোষ্ঠী এবং অতি প্রান্তিক এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের পুষ্টি নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও যক্ষ্মা, এইচআইভি ও এইডস রোগী এবং অপুষ্টিতে আক্রান্ত অন্যান্য জনগোষ্ঠীও অগ্রাধিকার পাবে।

২০২৫ সালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অপুষ্টি হ্রাস করতে ‘জাতীয় পুষ্টিনীতি ২০১৫’ ও অন্যান্য নীতির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অনুসরণ করে দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনায় (২০১৬-২০২৫) কয়েকটি সূচক ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিশুর জন্মের প্রথম এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হার ৮০%-এ উন্নীত করা, ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হার বাড়িয়ে ৭০%-এ উন্নীত করা, ২০ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানো অব্যাহত রাখার হার ৯৫% করা, ৬-২৩ মাস বয়সী শিশুদের ন্যূনতম গ্রহণযোগ্য খাবার গ্রহণের হার বাড়িয়ে ৪০%-এর বেশি করা, কম জন্ম ওজনের হার কমিয়ে ১৬% করা, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের খর্বাকৃতির হার কমিয়ে ২৫% করা, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে কৃশকায়তার হার কমিয়ে ৮% করা, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে কম ওজনের হার কমিয়ে ১৫% করা, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে মারাত্মক তীব্র অপুষ্টির হার কমিয়ে ১%-এর নিচে আনা।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসের (এনএনএস) ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোহাম্মদ আমান উল্লাহ বলেন, ‘এসব অভীষ্ট অর্জনের লক্ষ্য নিয়েই এবার ১৯ বছর পর দ্বিতীয়বার ‘জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ-২০১৮’ পালন করা হচ্ছে।’ তিনি জানান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২৩ এপ্রিল থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের প্রথম দিনে মেলা ও র‌্যালির আয়োজন করা হবে। দ্বিতীয় দিনে গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, তৃতীয় দিনে ৫ বছরের নিচে সব শিশুর পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, চতুর্থ দিনে কিশোরী ও স্কুল পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, পঞ্চম দিনে বৃদ্ধদের পুষ্টি, ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিন নিশ্চিতকরণ, ষষ্ঠদিনে বহুপাক্ষিক অবহিতকরণ ও সমন্বয় এবং সমাপনী দিনে পুষ্টি বিষয়ে রচনা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ করা হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পুষ্টি ক্ষেত্রে বিগত ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর ১ শতাংশ হারে ৫ বছরের নিচের শিশুদের খর্বতা হ্রাস পেয়েছে। শিশুদের জন্য ভিটামিন এ-প্লাস ক্যাম্পেইনের সাফল্যের কারণে এখন আর রাতকানা রোগ দৃশ্যমান নয়।

মোহাম্মদ আমান উল্লাহ জানান, বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিকে শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ওজন পরিবীক্ষণ ও কাউন্সিলিং-এর জন্য ‘গ্রোথ মনিটরিং অ্যান্ড প্রোমোশন কার্ড’ (জিএমপি) কার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। মারাত্মক অপুষ্ট শিশুদের জন্য ২০২টি জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘স্যাম’ কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি, শিশুদের পুষ্টি সেবার জন্য ৪২৪টি জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘আইএমসিআই ও পুষ্টি কর্নার’ স্থাপন করা হয়েছে।

একই সময়ে মহিলাদের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধের লক্ষ্যে ৪৮ কোটি আয়রন ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে। পুষ্টি ও অন্যান্য অনুপুষ্টি বিষয়ে ৩৮ হাজার ৫৪১ জন চিকিৎসক ও নার্সকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। শাকসবজি, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, তেলবীজের উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি খাদ্য বিতরণে অনুপুষ্টি সমৃদ্ধ চাল বরাদ্দ করা হচ্ছে। সূত্র: বাসস।

 

 

/এফএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মশা তাড়ানোর ৫ প্রাকৃতিক উপায়
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি