X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সকালের বৃষ্টিতে দুপুরেও জলাবদ্ধতা!

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ এপ্রিল ২০১৮, ১৬:২৩আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০১৮, ১৯:১৪

সকালের বৃষ্টিতে দুপুরেও জলাবদ্ধতা! আজ রবিবার সকালে মুষলধারে বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে মূল সড়কগুলোতেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। বৃষ্টি শেষ হওয়ার চার ঘণ্টা পরেও পানি পুরোপুরি সরেনি। এ কারণে দুপুরেও ছিল একই চিত্র। তাই নগরবাসীকে পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্বে থাকা ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন আর ঢাকা ওয়াসার কোনও কর্মীকে জলাবদ্ধ স্থানগুলোতে পাওয়া যায়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালের মাত্র আধঘণ্টার ভারী বর্ষণে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব এলাকার মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ধানমন্ডিস্থ রাপা প্লাজা, ধানমন্ডি-৮/এ স্টাফ কোয়ার্টার মোড়, কাঁঠাল বাগান, গ্যাস্ট্রোলিভার গলি, কলাবাগান ডলফিন গলি, গ্রিন রোড, মোহাম্মদপুর, জিগাতলা, ধোলাইখাল, আজিমপুর, হাজারীবাগ, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, সেগুনবাগিচা, পল্টন, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী, সার্কিট হাউজ রোড, রাজারবাগ, শান্তিবাগ, আরামবাগ, মতিঝিল, দিলকুশা, বঙ্গভবন এলাকা, কমলাপুর, মানিক নগর, বাসাবো, মুগদা, নিউমার্কেট পশ্চিম-দক্ষিণ পাশের বটতলা, বিজিবি-৩ ও ৪ নং গেট, নাজিমউদ্দিন রোড, হোসেনি দালান, চকবাজার, লালবাগ, কাজী আলাউদ্দিন রোড, বংশাল, জুরাইন, পোস্তগোলা, মুরাদপুর, শ্যামপুর, কদমতলা, মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শনিরআখড়া, শেখদী, দনিয়া, দয়াগঞ্জ রেল ব্রিজ অন্যতম। এসব এলাকার অধিকাংশে বেলা দেড়টার পরেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। তবে সিটি করপোরেশনের দাবি, বৃষ্টি শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই পানি নেমে গেছে। যদিও তাদের এমন দাবির কোনও সত্যতা পাননি নগরবাসী।

সকালের বৃষ্টিতে দুপুরেও জলাবদ্ধতা! ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আজ সকালে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে একটু নিচু এলাকাগুলোতে পানি জমেছিল। বৃষ্টি থামার পরপরই আমাদের ইমার্জেন্সি রেন্সপন্স টিম মাঠে নেমেছে। তারা ম্যানহোলগুলোর ঢাকনা খুলে দিয়ে পানি নিষ্কাশনে সহযোগিতা করেছেন।’

দক্ষিণ সিটির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার ভাষ্য, ‘অনেক এলাকায় ময়লা আবর্জনা ও পলিথিন জমে ম্যানহোলের ফাঁকা স্থানগুলো জ্যাম হয়ে পড়েছে। এ কারণে পানি সরতে সমস্যা হয়। আমরা সেগুলো অপসারণ করে দিয়েছি।’

সকালের বৃষ্টিতে দুপুরেও জলাবদ্ধতা! তবে ডিএসসিসি’র এই কর্মকর্তার এমন বক্তব্যের প্রতিফলন দেখতে পায়নি নগরবাসী। দুপুরের দিকেও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে।

চাঁনখারপুলের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকালের বৃষ্টিতে চাঁনখারপুল, বকশিবাজার, নাজিম উদ্দিন রোড, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ভেতরের পুরো এলাকা, ঢামেক ক্যাম্পাস, আজিমপুরের বিভিন্ন এলাকায় হাঁটু পানি জমে গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকেও জলাবদ্ধতা দেখেছি। পানির কারণে ঢামেক এলাকায় রোগীর স্বজনদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন বা ঢাকা ওয়াসার কোনও কর্মীদের দেখিনি।’

সকালের বৃষ্টিতে দুপুরেও জলাবদ্ধতা! হাজারীবাগের বাসিন্দা কেফায়েত উল্যাহ জানালেন, রবিবার দুপুর পর্যন্ত সেখানকার বিভিন্ন সড়কে পানি জমে থাকতে দেখা যায়। কয়েকটি বাড়ির নিচতলায়ও পানি উঠেছে। তার মন্তব্য, ‘সিটি করপোরেশনের ড্রেনগুলোতে ময়লা আর আবর্জনায় ভরা। এ কারণে যথাযথভা পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রতি বছর শত কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। এ বছর সড়ক, ফুটপাত ও সারফেস ড্র্রেন নির্মাণে ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরেছে ডিএসসিসি। ইতোমধ্যে প্রায় সব টাকা খরচ করেছে এই সংস্থা। কিন্তু আসন্ন বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না নগরবাসী। সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসাও নিজস্ব ড্রেন পরিষ্কারের পেছনে ব্যয় করে বড় অংকের টাকা। কিন্তু পরিস্থিতির কোনও উন্নয়ন হয় না।

বৃষ্টিতে রাজধানীর সড়ক (ছবি:আরাফত মুন্নার ফেসবুক থেকে) একই চিত্র ঢাকা উত্তর সিটির বিভিন্ন এলাকায়। কাজীপাড়া-শেওড়াপাড়ার সড়কে পানির ঢেউ উঠতে দেখা গেছে। এসব এলাকার শত শত মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন, ব্যাঘাত ঘটেছে যানবাহন চলাচলে। মিরপুর ১১ ও ১২ নম্বরেও জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাননি স্থানীয়রা। এছাড়া কল্যাণপুর, কাটাসুর, ইব্রাহীমপুর, খিলখেত, মোহাম্মদপুর হাউজিং, নবোদয় হাউজিংসহ ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।

নগরবাসীর অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতেই পানি থই থই করে ঢাকার রাজপথ থেকে অলিগলিতে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ আর আশ্বাসের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে কোনও সমাধান আসেনি। শুধু ড্রেন পরিষ্কার আর নদী ও খাল দখলমুক্ত করার পরামর্শ ছাড়া কার্যকরী কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও রাজধানীজুড়ে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তাদের। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ।

সকালের বৃষ্টিতে দুপুরেও জলাবদ্ধতা! এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য ডিএনসিসি’র প্যানেল মেয়র ওসমান গণি ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

/এসএস/জেএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
মেলা থেকে অস্ত্রের মুখে দুই নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
তীব্র গরমে সিল্কসিটি ট্রেনে আগুন
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
দ্বিতীয় বিয়ে করায় স্বামীর অঙ্গহানি করলেন স্ত্রী
প্রচণ্ড গরমেও ভোটকেন্দ্রে ভোটার, ভোটদানের হার ৬১ শতাংশ
ভারতে দ্বিতীয় দফায় ভোটপ্রচণ্ড গরমেও ভোটকেন্দ্রে ভোটার, ভোটদানের হার ৬১ শতাংশ
সর্বাধিক পঠিত
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি
ট্রাকেই পচে যাচ্ছে ভারত থেকে আনা আলু, বাজারে ৫৫ টাকা কেজি