এবারের হজ মৌসুমে ১৫১টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ফ্লাইট শিডিউল ঠিক রাখতে লিজে আনা হচ্ছে আরও ৪টি উড়োজাহাজ। তারপরও ফ্লাইট বিপর্যয়ের ব্যাপারে শঙ্কায় রয়েছেন বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। হজ এজেন্সিগুলো আগে থেকে ফ্লাইট বুকিং না দিলে এবং যথাসময়ে হজযাত্রীদের ফ্লাইটে না পাঠালে এবারও হজ ফ্লাইটে বিপর্যয় হতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
বিমান বাংলাদেশের মার্কেটিং বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, হজ ফ্লাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। প্রতি বছর নানা রকমের জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে হজ এজেন্সিগুলো ঠিকমতো যাত্রীদের বাড়িভাড়া ঠিক করে ফ্ল্যাট বুকিং দিলে জটিলতা কমে আসে। তবে এই মুহূর্তে হজ এজেন্সিগুলোর ঠিক সময়ে ফ্লাইট বুকিং দেওয়া নিয়েই শঙ্কা কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের ঘোষিত ফ্লাইট সিডিউল অনুযায়ী ২০ মে’র মধ্যে ফ্লাইট বুকিং সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব এজেন্সিকে। বুকিং সম্পন্ন করার পর এয়ারলাইন্সগুলোর কাছ থেকে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করে হজ অফিসে জমা দিতে বলা হয়। গত ৯ মে এই নির্দেশনা দেওয়া হলেও ২০ মে’র মধ্যে প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে পারেনি হজ এজেন্সিগুলো।
জানা যায়, সৌদি আরবের নিয়ম অনুসারে হজ ফ্লাইট বুকিংয়ের নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী প্রত্যেক হজযাত্রীর জন্য সৌদি আরবে (মক্কা ও মদিনায়) বাড়ি ভাড়া, পরিবহন ও অন্যান্য সার্ভিস চার্জ অগ্রিম প্রদান করতে হয়। সেসব কাজ সম্পন্ন করে হজ ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। ভিসা ছাড়া কেউই হজের জন্য সৌদি আরবে যেতে পারবেন না। বিগত বছরগুলোতে হজ এজেন্সিগুলো হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়া ও অন্যান্য চার্জ অগ্রিম বুকিং না করায় ঠিক সময়ে ভিসার ব্যবস্থা হয়নি, তাই বিলম্বিত হয়েছে হজ ফ্লাইট।
বাংলাদেশ বিমান সূত্রে জানা গেছে, মোট ৬৪ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে পাঠাতে ১৫১টি ডেডিকেটেট ফ্লাইট এবং হজ শেষে দেশে ফিরিয়ে আনতে ১৪৩টি হজ ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। ঢাকা থেকে বিমান বাংলাদেশের হজ ফ্লাইট শুরু হবে ১৪ জুলাই এবং ফ্লাইট শেষ হবে ১৪ আগস্ট। হজ শেষে যাত্রীদের ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরব থেকে ফ্লাইট শুরু হবে ২৭ আগস্ট, শেষ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের (জনসংযোগ) মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ বলেন, ‘হজ ফ্লাইটের জন্য আমাদের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। হজ ফ্লাইট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বহরে ৪টি উড়োজাহাজ লিজে যুক্ত হচ্ছে। ফলে হজ ফ্লাইটের পাশাপাশি নিয়মিত ফ্লাইট শিডিউল ঠিক থাকবে।’
হজ অফিসের পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হজ ফ্লাইটের জটিলতা কাটাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, হজ ফ্লাইটের শিডিউলে এখনও সৌদি আরব চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়নি, যার কারণে তারা ফ্লাইট বুকিং দিতে পারেননি। এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে আলাপ করে আমরা এ সময়সীমা আবারও নির্ধারণ করবো।’
হজ ফ্লাইট প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের অবস্থান থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। হজ ফ্লাইট ঠিক রাখতে ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করার চেষ্টা করছি। শুধু বিমানের একার পক্ষে হজ ফ্লাইট ঠিক রাখা সম্ভব নয়। কেউ যদি সমন্বয় না করে তবে পুরো প্রক্রিয়াটি ঠিকভাবে সম্পন্ন হবে না।’
