X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশের বিভিন্ন জায়গায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ১০

বাংলা ট্রিবিউন ডেস্ক
২৫ মে ২০১৮, ১১:১০আপডেট : ২৫ মে ২০১৮, ১৮:১০

বন্দুকযুদ্ধ মাদকবিরোধী অভিযানের সময় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ফের বন্দুকযুদ্ধের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে ঢাকা, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, কক্সবাজার, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, শেরপুর ও গাইবান্ধায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহত সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ঢাকা:

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বিজি প্রেস এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে কামরুল ইসলাম (৩৫) নামে এক ‘মাদক ব্যবসায়ী’ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিজি প্রেস সংলগ্ন স্কুলের মাঠের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, র‍্যাব-২-এর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামরুল মারা গেছেন। আহত অবস্থায় কামরুলকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রাত সোয়া ১টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতের বাবার নাম মানিক মিয়া। মহাখালীর দক্ষিণপাড়ায় তার বাসা।

র‍্যাব-২ উপ-অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কামরুল মহাখালীর সাততলা বস্তি, কাওরানবাজার এলাকার মাদক বিক্রি করে। কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী মাদক বিক্রির জন্য জড়ো হচ্ছে এমন তথ্যে আমাদের টহল দল ঘটনাস্থলে যায়। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে র‍্যাবকে লক্ষ্য করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালায়। তখন র‍্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলিতে র‍্যাবের ডিএডি রহুল ও এসআই মালেক আহত হন। তাদের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া, মাদক ব্যবসায়ী কামরুলকে গুলিবিদ্ধ পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে ঢামেক নিয়ে গেছে পুলিশ।’

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ৩ হাজার পিস ইয়াবা, একটি ৬.৫ বিদেশি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।

র‍্যাবের মিডিয়া উইং থেকে পাঠানো এক এসএমএস বার্তায় জানানো হয়েছে, তেজগাঁও রেললাইন বস্তি এবং মহাখালীর সাততলা বস্তি এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী কামরুল ১৫টির অধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি।

নেত্রকোনা:

নেত্রকোনায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছেন। তারা মাদক ব্যবসায়ী বলে পুলিশ দাবি করেছে। বৃহস্পতিবার দিনগত রাত দেড়টার দিকে নেত্রকোনা সদর উপজেলার মনাং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিচয় তাৎক্ষণিক শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে চলমান মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে নেত্রকোনায় তিনজন নিহত হলো। নেত্রকোনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফখরুজ্জামান জুয়েল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় দু’পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে দুজন মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়। এ সময় এসআই জলিল, এএসআই জাকির ও কনস্টেবল ওয়াহিদ আহত হন।

তিনি জানান, মাদকবিরোধী অভিযানে চলাকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলার সদর উপজেলার মনাং এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের আখড়ায় অভিযানে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির একপর্যায়ে দুই মাদক ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হয়। পরে তাদের পুলিশ নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে ৫শ থেকে ৭শ গ্রাম হেরোইন, ৩ হাজারেও বেশি ইয়াবা ট্যাবলেট ও দুটি পাইপগান উদ্ধার করা হয়। গোলাগুলিতে পুলিশের ৩ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ময়মনসিংহ:

ময়মনসিংহে ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শহরের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রাজন নিহত হয়েছে। তার বিরু‌দ্ধে মাদকসহ অন্যান্য আইনে ৫টি মামলা রয়ে‌ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জেলা গো‌য়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, শহরের পু‌রো‌হিতপাড়া রেলও‌য়ে ক‌লোনির ভাঙা ওয়াল রেনু বেগ‌মের বাড়ির পাশের পুকুর পা‌ড়ে আলালসহ এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ভাগাভাগি করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে ডিবির একটি টিম বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ২টার অভিযান চালায়। মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মাদক ব্যবসায়ী রাজনকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ৪০০ পিস ইয়াবা, ‌তিন‌টি গু‌লির খোসা, একটি চাইনিজ কুড়াল ও একটি হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়।

‘বন্দুকযুদ্ধে’ জেলা গো‌য়েন্দা শাখার ওসি মো. আশিকুর রহমান এবং কাওছার গুরুতর আহত হন। তাদের পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শেরপুর :

শেরপুরে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আজাদ মিয়া ওরফে কালু ডাকাত (২৮) নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ মে) রাত ৩টার  দিকে শেরপুর সদর উপজেলার সাতপাকিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। আহতদের শেরপুর জেলা হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সদর সার্কেল) আমিনুল ইসলাম একথা জানিয়েছেন।

কালু ডাকাতের বাড়ির শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের মরাকান্দি খাসপাড়া গ্রামে। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদকসহ ২১টি মামলার আসামি।  

পুলিশ জানায়,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধার অভিযান চালাতে  বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে পুলিশের একটি দল সাতপাকিয়া গ্রামে পৌঁছুলে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একদল সন্ত্রাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে কালু ডাকাত গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এসময় এক এসআইসহ দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। কালুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

কুমিল্লা:

বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১২টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে কামাল হোসেন ওরফে ফেন্সি কামাল (৫১) নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। সেখান থেকে দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছে পুলিশ।

নিহত কামাল হোসেন জেলার আদর্শ সদর উপজেলার রাজমঙ্গলপুর গ্রামের হিরন মিয়ার ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, কামালের বিরুদ্ধে বুড়িচং ও কোতোয়ালি মডেল থানায় ১২টির বেশি মাদকের মামলা রয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ৬ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হলো।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মাদক উদ্ধার করতে জেলার বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোজ কুমার দে এবং ডিবির ওসি নাছির উদ্দিন মৃধার নেতৃত্বে ডিবি ও থানা পুলিশের দুটি টিম বুড়িচংয়ের মহিষমারা এলাকায় অবস্থান নেয়। রাত সোয়া ১২টার দিকে তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ফেন্সি কামাল ও তার সহযোগীরা ওই এলাকা দিয়ে মাদক পাচারকালে পুলিশ তাদের আটকের চেষ্টা চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি চালায়। এ সময় পুলিশও পাল্টা ৩৪ রাউন্ড গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলিবিনিময়ের ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ী কামাল গুরুতর আহত হয়। সেখান থেকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে হানিফ ও ইলিয়াস নামের দুই মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। হানিফ (৪২) জেলার আদর্শ সদর উপজেলার ছাওয়ালপুর গ্রামের মফিজ মিয়ার ছেলে এবং ইলিয়াস (২৮) জেলার চান্দিনা উপজেলার কোরপাই গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে।

বুড়িচং থানার ওসি মনোজ কুমার দে জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১ রাউন্ড কার্তুজসহ একটি পাইপগান ও ৫০ কেজি গাঁজা। অভিযানে ডিবির এসআই নন্দন চন্দ্র সরকার, এএসআই সাহাবুল হোসেন ও কনস্টেবল সুমন মিয়া আহত হন।

এর আগে আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পাঁচ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। গত ২ মে রাতে কুমিল্লার সদরের সীমান্তবর্তী এলাকা বিবির বাজারের পাশে অরণ্যপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শরীফ (২৬) ও পিয়ার আলী (২৮) নিহত হয়। এর একদিন পর কুমিল্লা সদরের টিক্কারচর ব্রিজ এলাকায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আরেক মাদক ব্যবসায়ী নরুল ইসলাম ইছা নিহত হয়। গত বুধবার রাতে চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ বাবুল মিয়া ওরফে লম্বা বাবুল (৩৮) ও সদর দক্ষিণে রাজিব (২৬) নামে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়।

কক্সবাজার:

কক্সবাজারের মহেশখালীতে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে মোস্তাক আহমদ নামের এক যুবক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মহেশখালীর বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পাহাড়তলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ১ হাজার পিস ইয়াবা এবং ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল।

তিনি জানান, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় অন্যরা পালিয়ে যায়। তবে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে যুবকের মৃতদেহটি একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের পুত্র মোস্তাকের বলে শনাক্ত করা হয়। মোস্তাকের বিরুদ্ধে অস্ত্র এবং মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান ওসি।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকা থেকে হাসান নামের আরও একজনের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওটাও অভ্যন্তরীণ কলহের জের ধরে খুন বলে দাবি করেছে পুলিশ।

ঝিনাইদহ:

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে শামীম নামের এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ মে) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ওয়াপদা নামক স্থানে ‘গোলাগুলি’র এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিহত শামীম পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে থানায় ৯টি মামলা রয়েছে। এ নিয়ে গত চারদিনে কালীগঞ্জে দ্বিতীয় মাদক ব্যবসায়ী নিহত হলো।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৪৮০ পিস ইয়াবা ও ১৭ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান খান জানান, কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ওয়াপদা রোডের একটি পরিত্যক্ত ভবনের মধ্যে মাদক বিক্রির সংবাদ পেয়ে পুলিশ অভিযানে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ৫/৬ মাদক ব্যবসায়ী গুলি ছোড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলিবিনিময়ের পর মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার মাহফুজুল আলম সোহাগ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের নাম শামীম বলে জানতে পারে পুলিশ।

গোলাগুলির সময় কালীগঞ্জ থানার এসআই অমিত দাস, এএসআই শামীম হোসেন, পুলিশ কনস্টেবল নাজিম উদ্দীন, রতন আহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, শামীম পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তার নামে থানায় মাদকদ্রব্য আইনে ৯টি মামলা রয়েছে।

গত ২০ মে দিবাগত রাত ২টার দিকে র‌্যাবের সঙ্গে ‘গোলাগুলি’তে কালীগঞ্জ উপজেলার নরেন্দপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মাদক ব্যবসায়ী সব্দুল ইসলাম ওরফে সব্দুল  মণ্ডল নিহত হয়। এ ঘটনার চারদিন পর নিহত হলো মাদক ব্যবসায়ী শামীম।

সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরায় কলারোয়া উপজেলায় কথিত বন্দুকযুদ্ধে ইউনুস আলী দালাল নামে একজন নিহত হয়েছেন। তিনি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ মে) রাতে উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি গ্রামে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহত ইউনুস আলী দালাল উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের আব্দুল্লাহ দালালের ছেলে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ জানান, তারা রাত পৌনে ২টার সময় রামকৃষ্ণপুর-বড়ালি সীমান্তে দুইদল মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে গোলাগুলি হচ্ছে বলে খবর পান। তাৎক্ষণিক টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে দুইপক্ষই বিলের মধ্য দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে বাচাঁও বাঁচাও বলে চিৎকার শুনে বিলের মধ্যে এগিয়ে গেলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইউনুসকে পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ওয়ান শুটারগান, দুই রাউন্ড গুলি ও ৭০ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে। নিহত ইউনুস আলী দালাল একজন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। তিনি বিচারাধীন একাধিক মাদক মামলার আসামি ছিলেন।

গাইবান্ধা:

গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে জুয়েল মিয়া (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, তিনি মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। শুক্রবার (২৫ মে) ভোর রাতে উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ফলিয়া ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জুয়েল মিয়া সদর উপজেলার ব্রিজ রোড মিস্ত্রিপাড়া এলাকার মৃত নছিম উদ্দিনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জুয়েল মিয়া তার এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিল। তার বিরুদ্ধে আনুমানিক ৪/৫ টি মাদক মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বৃহস্পতিবার জুয়েল মিয়া ইফতার সামগ্রী কেনার জন্য ব্রিজ রোড বাজারে যায়। এরপর থেকে জুয়েল মিয়ার সঙ্গে পরিবারের আর যোগাযোগ হয়নি। শুক্রবার ভোররাতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তার নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়।

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার (এসপি) প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান মিয়া জুয়েল মিয়ার বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরও পড়ুন- মাদকের মামলায় শাস্তি কী?

 

 

/এফএস/চেক-এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’